দার্জিলিং: পাহাড়ের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন ঘটনা খুব কম দেখা যায়, যেখানে মূলধারার দুই রাজনৈতিক দলের হেভিওয়েটরা পাহাড়ে জনসভা করছেন। বৃহস্পতিবার সেটাই হল। এক দিকে যখন প্রথম দফার নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন রাজ্যের দুই কেন্দ্রের মানুষ, তখনই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পালটা অভিযোগ শানালেন মমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত শাহ।
ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে পাহাড়ে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। প্রথমে কালিম্পংয়ে জনসভায় ভাষণ দিলেন অমিত আর তার পর অমিতের যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করে এবং আরও বেশি চাঁচাছোলা ভাবে দার্জিলিং থেকে বিজেপির উদ্দেশে তোপ দাগলেন মমতা।প্রথমে ছিল অমতি শাহের জনসভা। রাজ্যের জনসভায় এসে যে কথাগুলি তিনি বলেন, এ বার সেগুলিই আরও একবার বললেন। সিন্ডিকেট রাজ নিয়ে তোপ দাগলেন রাজ্যের বিরুদ্ধে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে দাবি করলেন। সেই সঙ্গে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সেই পুরনো প্রতিশ্রুতিও ফের একবার দিলেন তিনি। তবে যেহেতু পাহাড়ে এসেছেন, তাই পাহাড়বাসীদের উদ্দেশেও কিছু বললেন তিনি। গোর্খাদের অবদান বৃথা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন অমিত।
অমিত শাহ যেখানে শেষ করেন, সেই সুরেই যেন পালটা দেওয়া শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দার্জিলিংয়ের জনসভা থেকে গোর্খা বাহিনীর কথা উল্লেখ করেন তিনি এবং সেই প্রসঙ্গেই বিজেপির উদ্দেশে তোপ দাগেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গোর্খা বাহিনী, সেনাবাহিনীর গর্ব।” এর পরেই পুলওয়ামা হামলায় কেন্দ্রের গাফিলতি নিয়ে সরব হন মমতা। সেনাকে নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি, এমনও অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর পরেই পাহাড়ের সঙ্গে তাঁর আত্মিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি প্রতি তিন মাস অন্তর পাহাড়ে আসি। আমি শুধু ভোটের জন্য আসি না। আমি পাহাড়ের মানুষকে ভালোবাসি, পাহাড়কে ভালোবাসি বলে আসি।” ২০১৭-এর অশান্তির ঘটনা পেরিয়ে এসে দার্জিলিং এখন শান্ত। সেই ঘটনাকে মনে করে ফের একবার বিজেপিকে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি দার্জিলিংয়ের ভূমিপুত্রকে ভোট দেওয়ার আবেদনও করেন মমতা। তিনি বলে, “দার্জিলিংয়ের ভূমিপুত্রকে (অমর সিংহ রাই) প্রার্থী করেছে তৃণমূল। এ বারও দার্জিলিংয়ের বিজেপি প্রার্থী বাইরের। ভোটের পর রাজু সিংহ বিস্তা মণিপুর চলে যাবেন। এ বার এমন কাউকে প্রার্থী করবেন যিনি আপনার কথা ভাববেন।”
এ ছাড়াও জাতীয় ইস্যুগুলি নিয়েও দার্জিলিংয়ের সভা থেকে বিজেপিকে তোপ দাগেন মমতা। ১৫ লক্ষ টাকা না আসা, বিমুদ্রাকরণ এবং জিএসটি নিয়ে বিজেপিকে একহাত নেন তিনি। সেই সঙ্গে আমারও হুংকার করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, কোনো ভাবেই রাজ্যে নাগরিকপঞ্জি তিনি চালু করতে দেবেন না।