কোচবিহার: বাচ্চার মতো আচরণ করে ভোট জেতা যায় না। মোদীর মঞ্চের পাশেই মমতার মঞ্চকে কটাক্ষ করে একথা বললে মোদী। চার দিনের ব্যবধানে রাজ্যে এসে কোচবিহারের রাসমেলা মাঠে জনসভা করলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিজেপির সভায় যাতে ভিড় কম হয় তার জন্য মমতার মঞ্চ তৈরি করে রাখা হয়েছে। আপনাদের ভালবাসায় আমার দায়িত্ব বেড়ে যাচ্ছে। আপনারা যতবার মোদী মোদী করেন স্পিড ব্রেকার দিদির রাতের ঘুম চলে যাচ্ছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে আর কমিশনের উপর রেগে যাচ্ছেন। আপনাদের ভিড় প্রমাণ করছে এ রাজ্য দিদির হাত থেকে মুক্তি চাইছে। পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেলে কী অবস্থা হয় সেটা দিদিকে দেখে বোঝা যাচ্ছে।
দেশে একের পর এক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে এনডিএ সরকার। কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে এমনটাই দাবি করে রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্য সরকারকে নিশানা করার পাশাপাশি জঙ্গি নিধনের কথা উল্লেখ করেন নরেন্দ্র মোদী। নাম না করে বালাকোট বিমানহানা প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একসময় জঙ্গিদের ঘরে ঢুকে ভারত মারতে পারবে এমন কল্পনাও অসম্ভব ছিল। এখন তা সম্ভব। বিজেপি সরকারের আমলে তা করে দেখিয়েছে ভারত। এই সাহস এল কোথা থেকে? এটা মোদী করেনি। করেছে আপনাদের একটা ভোট। শিলিগুড়ির মতো এই কোচবিহার থেকেও মোদী বলেন, রাজ্যে পিসি ভাইপোর সরকার অনুপ্রবেশকারীদের সাহায্য করছেন। মানুষ থেকে শুরু করে পশুদের যারা পাচার করে তাদের সাহায্য করছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় রোজই নিয়ম করে তাঁর বক্তৃতায় অভিযোগ করেন, “বাংলায় বাম-রাম এক হয়ে গিয়েছে।” মোদী যেন দিদির অস্ত্রেই তাঁকে ঘায়েল করার কৌশল নিয়েছেন। ত্রিপুরার উদাহরণ টেনে বলেন, “ওখানেও বামেদের সরকার ছিল। কিন্তু মানুষ দিন গুনছিল গদি উল্টে দেওয়ার। তাকিয়ে দেখুন ত্রিপুরার দিকে। বামেদের গুন্ডামি থামিয়ে দিয়ে ওখানে এখন শুধু বিকাশ আর বিকাশ।” এরপরই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় কমিউনিস্টদের সরকার পতনের পর সবাই ভেবেছিলেন এখানে গুন্ডারাজ খতম হলো। কিন্তু কোথায় কী! সব গুন্ডাদের নিজের দলে টেনে নিলেন দিদি।”
চিটফান্ড কান্ড নিয়ে মোদী বলেন, মা সারদাকেও সারা দেশ পুজো করে। কিন্তু এ রাজ্যে সারদা মানে চিটফান্ড। গোলাপ বললে সবাই ফুলের কথা ভাবে। কিন্তু এখানে গরিবদের কাঁটার কথা মনে হয়। নারদ মুণি ত্রিলোকে নারায়ণ নারায়ণ করতেন। কিন্তু এখানে তাঁকেও কেলেঙ্কারিতে নামিয়ে এনেছে তৃণমূল। গরিবের টাকা কারা লুঠ করেছে সেটা সবাই জানে। চৌকিদার তাদের ছাড়বে না।
গত বুধবার শিলিগুড়ি আর ব্রিগেডের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা শুনে অনেকেই বলেছিলেন, তেমন জমল না। কিন্তু পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই বক্তব্য ছিল, লম্বা ইনিংস খেলতে গেলে শুরু থেকেই চার-ছয় মারলে হয় না। এ দিন মোদী বুঝিয়ে দিলেন যত দিন এগোবে তত ঝাঁঝ বাড়াবেন তিনি।যদিও তৃণমূল নেতারা বলছেন, গুন্ডা, তোলাবাজদের দলে নিচ্ছেন মোদী নিজে। নিশীথ প্রামাণিককে আমরা ছুড়ে ফেলেছি, আর মোদীবাবুর দল কুড়িয়ে নিয়ে প্রার্থী করেছে।