Site icon The News Nest

#Loksabha Elections 2019: লাইমলাইটে রাহুল- প্রিয়াঙ্কা, আলোহীন প্রচারে মোদী ভজনায় ‘ব্যস্ত’ বরুণ

varun gandhi and rahul gandhi 1 67 1548419130 365302 khaskhabar

নয়াদিল্লি: দেশের রাজনীতিতে অদ্ভুত অবস্থান বরুণ গান্ধীর। এমনিতে সারা বছরই সাইডলাইনে কাটাতে হয় তাঁকে। শুধু ভোট এলে শুরু হয় ভাষণ। বিজেপি নেতা কর্মীরা এবং প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বছর পর বছর বরুনের পরিবারকে তুলোধোনা করাকে অন্যতম মহৎ কাজ হিসেবে বিবেচনা করেন। যে কোন ব্যর্থতা জহরলাল নেহেরু, ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েই দায় সারে বিজেপি এখন। প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য এটি এখন বিজেপির সার্বিক প্রচার ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।

সাধারণত ব্যর্থ মানুষ সবসময় সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। এই সুযোগ কাজের সুযোগ নয়। এটি হল অন্যের ঘাড়ে নিজের ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে দেওয়া। আর কিছু লোক খোঁজা- যারা একাজে সাহায্য করবে খানিকটা। নেহুরু ও গান্ধী পরিবারের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ভোটের আগে বরাবরই বিজেপির অস্ত্র বেচারী বরুণ গান্ধী। রবিবার নিজের নির্বাচন কেন্দ্র পিলভিটে প্রচারে করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা শোনা যায় বরুনের গলায়। তিনি বলেন,  ‘দেশ এমন মজবুত প্রধানমন্ত্রী এর আগে দেখেনি।বাজপেয়ীজি এক সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছিলেন। কিন্তু কখনও চরম দারিদ্র কী জিনিস তা দেখেননি। আর মোদীজি উঠে এসেছেন এক গরিব পরিবার থেকে। সত্যি কথা বলতে কী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীজি দেশের জন্য যে সুনাম এনে দিয়েছেন তা আমার পরিবারেরও কেউ পারেননি।’ গত পাঁচ বছরে দলের উন্নয়ণ কর্মসূচি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বরুণ মোদীর সততার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সুলতানপুরের সাংসদ বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে মোদী বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। যার পরিবার বলে কিছুই নেই তিনি দুর্নীতি করবেন কার জন্য! এই মানুষটা দেশের জন্য বেঁচে রয়েছেন। তাঁর প্রধান চিন্তা দেশকে নিয়ে।’ উল্লেখ্য, বহুদিন ধরে এই পিলভিট থেকেই নির্বাচিত হয়ে আসছেন বরুণ গান্ধীর মা মানেকা গান্ধী। এবার সেখানে লড়াই করছেন বরুণ। পিলভিটে ভোট নেওয়া হবে লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফায়। আর বরুণের আসন সুলতানপুর থেকে এবার লড়াই করবেন মানেকা গান্ধী।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে মোদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হওয়া ছাড়া তাঁর হাতে আর কোন উপায় নেই বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বরুণ গান্ধীর বাড়ির তিনজন প্রধানমন্ত্রী দেশ চালিয়েছেন। প্রপিতামহ জহরলাল নেহেরু, ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধী আর জ্যাঠামশাই রাজীব গান্ধী। এরকম বাড়ির একটি ছেলেকে সাধারণ একজন সাংসদ করেই রেখে দিয়েছে বিজেপি। যদিও মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন তাঁর মানেকা গান্ধী। তবুও বিজেপিতে নিজের অবস্থান বাঁচাতে এখন বোধহয় মোদীর প্রশংসায় মশগুল হওয়া ছাড়া উপায় দেখছেন না বরুন। নিন্দুকদের মতে, এখন বিজেপিতে টিকে থাকার অন্যতম শর্ত হল মোদী ভজনা। এই অবস্থায় লাইমলাইটের বাইরে থাকা আর কিইবা করবেন। এরপরেও অবশ্য বরুণের বিশেষ উন্নতি হবে না তার কারণ হল, নরেন্দ্র মোদী গান্ধীদের যে পারিবারিক ঘরানা যে আক্রমণ করেন তাতে আর ধার থাকবে না। আর বিজেপিতে থাকলে চিরদিনই মানেকা পুত্রের স্থান হবে সাইডলাইনে।

বরুনের একটি মানসিক কষ্ট হল, তাঁর দাদা এখন কংগ্রেসের সুপ্রিমো। দিদি প্রিয়াঙ্কা কংগ্রেসের নতুন আশার আলো। এই দুই ভাই-বোনকে নিয়ে দেশের মিডিয়া প্রতিদিন ব্যস্ত থাকে। তাঁদের মুখ জুড়ে ঝলসে পরে মিডিয়ার প্রচারের আলো। আর বরুন থাকেন প্রচারের আড়ালে। বিজেপিতে অতি সাধারণ একজন নেতার কোন ফারাক নেই তাঁর। সেই কারণে দলে টিকে থাকতে হলে নিরন্তর মোদী ভজনা ছাড়া উপায় নেই বরুনের। যে নরেন্দ্র মোদী আদবানী এবং যোশীর মত দলের বর্ষীয়ান নেতাদের মার্গদর্শকে পরিণত করতে পারেন তাঁর পক্ষে বরুণ কে হটানো অত্যন্ত সহজ। সে কারণেই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে বারবার প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করা ছাড়া বরুনের হাতে অবশিষ্ট নেই কিছুই।

 

Exit mobile version