মুম্বই: সুপারমডেল এবং ফিটনেস আইকন মিলিন্দ সোমান মানেই যৌন আবেদন, মানেই শারীরিক টান, অদ্ভুত মাদকতা। বারেবারে সব বয়সের মানুষই হোঁচট খেয়েছেন মিলিন্দের দিকে এক ঝলক তাকিয়েই। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি ট্রেন্ডিং হয়েছেন নিজেকে আরএসএস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে।
সুপারমডেল-অভিনেতা মিলিন্দ সোমান একটা সময় আরএসএস-একটি শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই কথাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই নেটিজেনদের মধ্য়ে প্রবল চাঞ্চল্য তৈরি হয়। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এবং অতীতেও বহুবার সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রসঙ্গে বিভিন্ন মহল থেকে আরএসএস সমালোচিত হয়েছে। তাই মিলিন্দ সোমানের আরএসএস প্রাক্তনী হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্য়ে নিঃসন্দেহে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে সোশাল মিডিয়ায় এবং তার বাইরেও।
আরও পড়ুন: রঙের খেলা, এক ঝলকে দেখে নিন বলিউডের হোলি অ্যালবাম
প্রায় তিন দশকের কেরিয়ারে মিলিন্দ কখনওই কোনও ধর্মীয় সংগঠন বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়েননি।কিন্তু মিলিন্দ তাঁর সদ্য-প্রকাশিত স্মৃতিকথায় নিছক ছেলেবেলার স্মৃতিচারণা হিসেবেই প্রসঙ্গটি এনেছেন।বইটির নাম মেড ইন ইন্ডিয়া: আ মেমোয়ার।
https://www.instagram.com/p/B83qRPaHn3h/
তাতে তিনি লিখেছেন, ৯-১০ বছর বয়সে তিনি তখন সবে সাঁতার ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন। সে সময় ভর্তি হন মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কের আরএসএসের শাখায়। তাঁর বাবা আরএসএস করতেন, তিনি ভেবেছিলেন, ছেলে শাখায় যোগ দিলে নিয়মানুবর্তী হবে, শারীরিকভাবে ফিট থাকবে, চিন্তাভাবনাও ঠিক পথে এগোবে। মিলিন্দ জানিয়েছেন, শিবাজি পার্কের মত জায়গায় আরএসএসের শাখা হওয়ায় ওই এলাকার বেশিরভাগ ছেলেই তাতে যোগ দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভাঙের নেশায় মত্ত সেলেব দম্পতি, সোশ্যাল মিডিয়াতে কুৎসিত আক্রমণের মুখে নিক-প্রিয়াঙ্কা
কিন্তু মিলিন্দ তখন একা একা সময় কাটাতে ভালবাসতেন, আরএসএসের সঙ্ঘবদ্ধ ট্রেনিং তাঁর পছন্দ হত না। তিনি সুযোগ বুঝে লাইনের মধ্যে লুকিয়ে পড়তেন, যাতে কারও নজরে পড়তে না হয়। তখনকার স্মৃতি বলতে তাঁর কাছে শুধু রোজ সন্ধে ৬টা থেকে ৭টা খাকি শর্টস পরে মার্চ করা, যোগ ব্যায়াম আর শারীরিক কসরত করা। মানে না জেনে আবৃত্তি করা কিছু সংস্কৃত শ্লোক। আর অন্য ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলো। এছাড়া মুম্বইয়ের আশপাশে তাঁদের ক্যাম্প করতে নিয়ে যাওয়া হত, সেখানেই তাঁবু খাটিয়ে সারা রাত থাকতেন, সেটা নিয়ে ছেলেরা খুব উত্তেজিত থাকত। সেখানে তিনি এটাও লেখেন যে অনেক সময়েই তিনি লুকিয়ে পার্কের ঝোপে লুকিয়ে পড়তেন, কখনও লুকিয়ে পার্কের অন্য প্রান্তে গিয়ে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান দম্পতিকে সঙ্গ দিতেন। আত্মজীবনীতে মিলিন্দ জানিয়েছেন,যেভাবে আরএসএসের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতা ও হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে তাতে তিনি বিস্মিত।
নিজের সেক্সুয়ালিটি এবং যৌন সম্পর্ক নিয়েও বইতে কথা বলেছেন এই অভিনেতা। নিজের সেক্স্যুয়ালিটি নিয়ে কেন এত বেশি ভেবেছেন মিলিন্দ? এই প্রশ্নের জবাবে তাঁর উত্তর, “হ্যাঁ, আমি এই সম্পর্কে অবশ্যই ভেবেছি। আমি হেটারোসেক্সুয়ালিটি, সমলিঙ্গ সম্পর্ক এবং এর মাঝে আরও যা যা আছে সব নিয়েই ভেবেছি। এই কারণে আমি কারও প্রতি আকর্ষিত হলে আমি পরীক্ষা নিরীক্ষাও করতেই পারতাম কিন্তু আমি করিনি। আমি বারেবারে প্রেমে পড়েছি কিন্তু কখনও কোনও পুরুষের সঙ্গে প্রেমে পড়িনি।”
https://www.instagram.com/p/Bh5_7lkgezc/
স্ত্রী অঙ্কিতার সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মিলিন্দ সোমান বলেন, “যখন আমি প্রথম নিজের স্ত্রীকে দেখি আমার ওকে খুব রহস্যময়ী লেগেছিল। আমি ওর মন পড়তে পারিনি, আমি সাধারণত সবার মন পড়ে ফেলতে পারি। বা হয়তো আমি ওর বেলায় পড়তেই চাইনি। ওর মধ্যে এমন সুন্দর কিছু একটা তো ছিলই যার সামনে আমি নিরস্ত্র হয়ে যেতে চেয়েছিলাম।” প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে প্রেমিকা অঙ্কিতাকে বিয়ে করেন মিলিন্দ।