‘আমার স্বামীকে খুন করা হয়েছে’, দাবি তাপস ঘরণী নন্দিনীর

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ওয়েব ডেস্ক: ‘তারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে’-ফেসবুকের দেওয়ালে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য প্রয়াত অভিনেতা তাপস পাল পত্নী নন্দিনী পালের। সুদীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে তাপস পালের মৃত্যুর জন্য মুম্বইয়ের হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তাঁর স্ত্রী-কন্যা।

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাপস।  ১৮ ফেব্রুয়ারি সেখানেই মৃত্যু হয় অভিনেতার। গত ৪ তারিখ, বুধবার রাতে তাপসের স্ত্রী নন্দিনী  অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চুড়ান্ত অবহেলার ফলেই মারা গিয়েছেন তাপস।

সোশ্যাল মিডিয়ায় নন্দিনী লেখেন, ‘১লা ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা নাগাদ প্রথমবার আমার স্বামী বমি করেন। আমি ভাবি অ্যাসিড হয়েছে, তাঁকে অ্যান্টি-অ্যাসিডের ওষুধ দিই। কিন্তু পরিস্থিতি বদল হয়নি,উনি অস্বস্তি বোধ করছিলেন। সেই দিনই আমাদের একমাত্র সন্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য রওনা দেয়। আমার মেয়ে ওঁর বেশ কিছু চেনার (মুম্বইয়ের) তালিকা আমাকে দিয়ে গিয়েছিল, সেই থেকে আমি মিস্টার ডিকোস্টাকে ফোন করি। তিনি আসেন,অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে তাঁকে বান্দ্রার হোলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ততক্ষণে আমার স্বামীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি তড়িঘড়ি ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেখানে কেবলমাত্র নার্সরাই হাজির ছিল। আমাকে দ্রুত টাকা পয়সা জমা গিয়ে, অন্যান্য সকল কাগজপত্রের কাজ মিটিয়ে দিতে বলা হয়। এরপর আমার স্বামীকে ICCU-তে নিয়ে যাওয়া হয়।

আমাকে কিছুক্ষণ পর ডাঃ পুনম(আইসিসিইউ-র আরএমও) ডেকে পাঠান এবং আমি তাঁকে আমার স্বামীর অতীতের মেডিক্যাল সমস্যা বলতে চাইলে তিনি কিছুই শুনতে অস্বীকার করেন এবং আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। শুধু জানতে চান কী সমস্যার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আমি বলে রাখি, এটা কোনও সাধারণ হাসপাতাল নয়, এটা মাল্টি স্পেস্যালিটি বিশাল বেসরকারি হাসপাতাল।….এর কিছু সময় পর অন্য এক আরএমও এসে আমার কাছে অনুমতি চান আমার স্বামীকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার জন্য। তাঁরা সাফ আমাকে জানায়, ভেন্টিলেশনের নিয়ম হল রোগীর মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত বা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত মাঝপথে তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বার করা যাবে না। আমার লড়াকু স্বামী ৭ ফেব্রুয়ারি ভেন্টিলেশন থেকে ফিরে আসেন। ততদিনে আমার মেয়েও ভারতে এসে পৌঁছেছে। উনি স্বাভাবিকভাবেই কথা বলছিলেন,হাসছিলেন, ওঁনার খিদে পাচ্ছিল তবে আমৃত্যু রাইলস টিউব খোলা হয়নি তাঁর শরীর থেকে। গত দু বছর ধরে উনি ক্রনিক কিডনি ডিজিসের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। কিন্তু ডায়ালিসের দরকার পরেনি। এখানে প্রতিদিন তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল। আমি বারবার প্রশ্ন করেও কোনও উত্তর পাইনি।

কী হয়েছিল মৃত্যুর ঠিক আগের ঘণ্টায়?

নন্দিনী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘… আমরা এরপর ১৬ তারিখ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে ওঁনাকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনব। আমার মেয়ে কথাও বলে চিকিত্সকদের সঙ্গে। পরের দিন আশ্চর্যজনকভাবে তাঁর ডায়ালিসিস এবং সেন্ট্রাল লাইন ক্যাথেটার বদলানো হয় ভিজিটিং আওয়ার্সে। এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সেই রাতে ১১.৩০ মিনিটে আইসিইউ থেকে ফোন পাই উনি চিকিত্সায় সাড়া দিচ্ছেন না। ১০ মিনিট পর ফোন করে আবার জানানো হয় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।ততক্ষণে আমরা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। আবার ফোন এল পালস পাওয়া যাচ্ছে না, হিমোগ্লোবিন ৩.৯ নেমে গিয়েছে। কী করে সেটা হল? আইসিইউকে কী সেটা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল না? হাসপাতালেই ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে কিন্তু রক্ত জোগাড় করতে কয়েক ঘণ্টা লাগিয়ে দিল! কী করে সম্ভব? ওনার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়াটা স্বাভাবিক।… ডাক্তার অঞ্জুম আপনাকে কী করে আমি ক্ষমা করব?

আরও পড়ুন: ফের জারি পরোয়ানা, আগামী ২০ মার্চ ভোর ৫.৩০টায় ফাঁসি হবে নির্ভয়ার দণ্ডিতদের

সেন্ট্রাল লাইন ক্যাথেটার বদলানোর সময় আপনি যখন তদারকি করছিলেন, আমি আপনাকে অনুরোধ করেছিলাম নার্সকে দিয়ে সেই কাজটা না করে আপনি করুন। আপনি আমাকে আইসিইউর বাইরে বার করে দিয়েছিলেন। আমরা যখন আমার স্বামীর মৃতদেহ নিয়ে কলকাতায় ফিরি,ওনার ভাই, চিকিত্সক যিনি গত ২০ বছর ধরে ওনার চিকিত্সা করে চলেছেন- লক্ষ্য করলেন শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে ওই সেন্ট্রাল লাইন ক্যাথেটার থেকে এবং ডান কাঁধে বিরাট অংশে রক্ত জমাট বাঁধা অবস্থায় ছিল।যে কারণে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে কমে যায় (৯.৯ থেকে ৩.৯)। ওনার মৃত্যুর পর কোনও চিকিত্সকেরই সেখানে দেখা মেলেনি। এমনকি আমার স্বামীর শেষ মেডিক্যাল রিপোর্টগুলি পর্যন্ত আমাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। জানি আমি আমার স্বামীকে ফিরে পাব না, আমার মেয়ে তাঁর বাবাকে ফিরে পাবে না তবে এঁদেরকে আমি ক্ষমা করি কী করে? মানুষের ভুলের জন্যই আমার স্বামীর, আমার মেয়ের বাবার মৃত্যুর হয়েছে এই যন্ত্রণা নিয়েই আমাদের বাঁচতে হবে। আমি বিচার চাই’।

https://www.facebook.com/nandini.mukherjeepaul.1/posts/2459080671019741

একই বক্তব্য উঠে এসেছে সোহিনী পালের ফেসবুক পোস্টেও।

https://www.facebook.com/sohinipaul/posts/10162991260545291

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest