Site icon The News Nest

সংসদে মহুয়ার ভাষণ বিশ্বের অন্যতম সেরা, উচ্ছ্বসিত হয়ে টুইট বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন প্রধান কৌশিক বসুর

WhatsApp Image 2021 02 10 at 2.40.29 PM

লোকসভায় কেন্দ্র সরকারকে দুয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মিত্র। কৃষি আইন থেকে কৃষক আন্দোলন, পরিযায়ী শ্রমিক থেকে লকডাউন— লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বক্তব্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসায় বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। মহুয়ার ওই ভাষণে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক যে আপ্লুত, টুইটারে তাঁর প্রতিক্রিয়াতেই তা স্পষ্ট। সোমবার লোকসভায় মহুয়ার ওই ভাষণের বিভিন্ন অংশ ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে ভাইরাল।

সোমবার রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর জবাবি বক্তৃতায় বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের অবস্থানকে তীব্র আক্রমণ করেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। তার মধ্যে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মহুয়ার মন্তব্যের অংশের জন্য স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনার পরিকল্পনা করেছিল সরকার পক্ষ। যদিও তা হয়নি। তবে ওই অংশ ছাড়াও সোমবার মহুয়া অন্যান্য বিষয়ে যা বলেছেন, তা নজর কেড়েছে সারা দেশ এবং বিশ্বের। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা বিশ্ব ব্যাংকার প্রাক্তন প্রধান কৌশিক বসু নিজেও মহুয়ার এই ভাষণে উচ্ছ্বসিত।

মহুয়ার ওই দিনের পুরো বক্তব্য টুইটারে শেয়ার করেছেন কৌশিক। লিখেছেন, ‘কৃষি আইন, পরিযায়ী শ্রমিক এবং আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে মহুয়ার বক্তব্য মর্মস্পর্শী। এই ভাষণ সারা বিশ্বের সেরা সংসদীয় বক্তব্যের মধ্যে অন্যতম বলে গণ্য হবে’।

মহুয়া সংসদে শীৎকার করে বলেছেন বলেছেন কেন্দ্রের মোদী সরকার ‘কারেজ’-এর (সাহস)-এর কথা বলছেন, কিন্তু সরকার যে আসলে ওরা কাওয়ার্ড (ভীতু)। তারা কাপুরুষতাকে বীরত্ব বলে জাহির করতে চায়।একের পর উদাহরণ তুলে ধরে লোকসভায় তা প্রমাণ করতে চেয়েছেন মহুয়া।

তিনি বলেছেন, “কৃষকদের জন্য এক জন মন্ত্রীও নিযুক্ত করা হয়নি। যাঁরা ৯০ দিন অনশন করছেন, তাঁদের খাদ্য, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য ব্যবস্থা দেখার জন্য এক জন মন্ত্রীও নিয়োগ করা হল না। অথচ সুইডেনের খুদে পরিবেশ আন্দোলনকর্মী বা আমেরিকার পপ স্টারের প্রতিক্রিয়ায় সরকারি ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক।’’

আরও পড়ুন: তারাপীঠে ভরল না মাঠ, ঝাড়গ্রামে ফাঁকা থাকল চেয়ার! নাড্ডার সফর নিয়ে চিন্তায় বঙ্গ বিজেপি

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও আক্রমণ করে মহুয়া বলেন, ‘‘আইন পাশ হল। দেশে বহু বছর ধরে বসবাস করা নাগরিকরা সঙ্কটের মুখে। অথচ সেই আইন প্রয়োগ করার জন্য ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্তও প্রস্তুত নয় সরকার। আর প্রশ্ন করলে বলছে, কাগজ নেহি দিখায়েঙ্গে।’’

রাম মন্দিরের স্বপককে রাই দেওয়া দেশের প্রাক্তন বিচারপতি বর্তমানে বিজেপির সাংসদ। এই প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে উঠেছিল যৌন হেনস্থার অভিযোগ।বিচার ব্যবস্থা যে আর ‘পবিত্র’ নেই সে কথা বলতে গিয়ে মহুয়া বিষয়টি উত্থাপন করেন। তাতেই রে রে শুরু করেন বিজেপির সাংসদরা। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে মহুয়া এমন এমন মন্তব্য করতে পারেন না বলে চিৎকার শুরু করে দেন তারা। সাংসদ সৌগত রায় উঠে বলেন, মহুয়া কারো নাম নেননি। তাছাড়া যিনি বিজেপির সাংসদ তিনি প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। বর্তমান নন। মহুয়া বলেন, ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তা তিনি তোলেননি। তিনি কেবল বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছেন।

পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মহুয়ার তোপ, ‘‘২৪ ঘণ্টার নোটিসে লকডাউন ঘোষণার ‘সাহস’-এর জেরে অকথ্য দুর্দশা, অসংখ্য মৃত্য ঘটল, শ’ শ’ মাইল হাঁটলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। অথচ এই সরকার সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কোনও কিছুই করল না। এটাই সাহস।’’ এই প্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত আর্থিক প্যাকেজে সরাসরি কোনও আর্থিক সাহায্য না থাকার বিষয় তুলে ধরে জে পি মর্গানের প্রাক্তন ব্যাঙ্কার মহুয়া বলেন, ‘‘২০২০ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি সবচেয়ে কম।’’

মোদী জমানায় জয় শ্রীরাম ধ্বনিকে সংখ্যালঘু নিগ্রহের মাধ্যম করা হয়েছে বলেও মহুয়া উল্লেখ করেন। জাতীয় সংগীতের যে জায়গায় ঐক্যের কথা রয়েছে তা পরে শোনান তিনি। বুঝিয়ে দেন, কেবল বিদ্বেষ দিয়ে দেশ চলে না। একই সঙ্গে মোদী সরকারকে বুঝিয়ে দেন কাপুরুষতাকে সাহসিকতা বলে চালানোর চেষ্টা করবেন না।

আরও পড়ুন: প্রতারণার অভিযোগ, জেনে নিন যেভাবে গ্রেফতারি এড়ালেন সানি লিওনি

Exit mobile version