আইন করে আটকানোর তো প্রশ্নই নেই। বরং ভিন্ন ধর্মে ও বর্ণে বিয়ে মানতে শিখতে হবে সমাজকে। লভ জেহাদ (Love Jihad) ইস্যুতে এবার এমনই মত জানাল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘ নিজের সঙ্গী পছন্দ করার অধিকার আছে কোনও পুরুষ বা মহিলার। আর সেটা মেনে নিতে শিখতে হবে সমাজকে। শিক্ষার এখনই উৎকৃষ্ট সময়।’
বিচারপতি সঞ্জয়কৃষ্ণ কউল ও হৃষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার জানায়, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিবাহ মেনে নেওয়াটা খুবই জরুরি একটি সামাজিক অনুশীলন। অভিভাবকরা শুধু ভিন ধর্মে বিবাহের জন্য যদি নিজের সন্তানকে দূরে ঠেলে দেন, তা কখনই আদর্শ সামাজিক রীতি হতে পারে না।
বাবা-মা দেখেশুনে ছেলে কিংবা মেয়ের বিয়ে দেবেন। সমাজে এই রীতির প্রচলন বহুদিনের। তবে ইদানিং ভালোবেসে বা নিজে পছন্দ করে বিয়ে করছেন অনেকেই। কিন্তু ভালোবাসার মানুষটি যদি ভিন্ন ধর্মের বা বর্ণের হন, তাহলে? এই প্রশ্ন ঘিরে এখন দেশজুড়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
আরও পড়ুন: হেরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে চারে নেমে গেল ভারত
মধ্যপ্রদেশ কিংবা উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপশাসিত রাজ্যে ইতিমধ্যেই ভিন্ন ধর্মে বিয়েকে ‘লভ জেহাদ’ আইন এনেছে সরকার। তবে এই ঘটনাটি কর্নাটকের। স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই উচ্চশিক্ষিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। কিন্তু ভিন্ন ধর্মে প্রেম মেনে নেননি ওই তরুণীর পরিবারের লোকেরা। বাধ্য হয়েই ২০২০ সালে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে নেন দম্পতি।
ওই দম্পতির অভিযোগ, স্রেফ পালিয়ে বিয়ে করার জন্যই ওই তরুণীর বিরুদ্ধে নিখোঁজ ডায়েরি করেন মেয়ের বাড়ির লোকেরা। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। সেই মামলার শুনানিতে এদিন বিচারপতি সঞ্জয়কৃষ্ণ কউল ও হৃষিকেশ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার জানায়, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিবাহ মেনে নেওয়াটা খুবই জরুরি একটি সামাজিক অনুশীলন। অভিভাবকরা শুধু ভিন ধর্মে বিবাহের জন্য যদি নিজের সন্তানকে দূরে ঠেলে দেন, তা কখনই আদর্শ সামাজিক রীতি হতে পারে না।
একদিকে যখন যোগী-রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, তারপর বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে ‘লভ জেহাদ’ বলে ভিন্ন ধর্মে বিবাহ আটকাতে চাইছে প্রশাসন, তখনই একেবারে উল্টো কথা জানাল দেশের শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, সামাজিক নিরাপত্তার ভার যাঁদের উপর, সেই পুলিশকেও এই ধরনের পরিস্থিতি সামাতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা জানাল আদালত।
বিচারপতীরা বলেছেন, ‘‘যত সময় পেরোচ্ছে, ততই এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা আরও বেশি করে নিজেদের জীবন সঙ্গী নিজেরাই খুঁজে নিচ্ছেন।’’ ভিন্ন ধর্মে বিবাহিতদের নিরাপত্তা নিয়েও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলেছে আদালত।অনেক সময়েই দেখা যায় পরিবার বা সমাজের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করে নিরাপত্তার অভাবে ভোগেন অনেকে। পুলিশের দায়িত্ব তাঁদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়া।
আরও পড়ুন: পেশাদার সম্পর্কটাও আর টিকে নেই! জায়গা হারালেন নুসরত, নিখিলের ‘নয়া সফরসঙ্গী’ শ্রাবন্তী