অবশেষে হয়তো ভারত-চিন সম্পর্কের বরফ গলছে। চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর প্যাংগং লেকে ডিসএনগেজমেন্ট শুরু করেছে দুই পক্ষ। বুধবার থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
চিন সরকারের মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’র প্রতিবেদনে চিনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই দাবি প্রকাশিত হয়েছে। ভারতীয় ও চিনা সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ এবং উত্তরভাগের এলাকা ছেড়ে ফিরে আসা শুরু করেছে বলেই দাবি বেজিংয়ের।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে মুখপাত্র য়ু কিআন বলেন যে সামরিক স্তরে নবম পর্যায়ের আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে দুই দেশই ধাপে ধাপে ও একসঙ্গে সেনা সরাচ্ছে বলে চিনের প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে যে বাহিনী এখনও আগের জায়গাতেই আছে। ট্যাঙ্ক ও আর্টিলারি সরানো হয়েছে। এই নিয়ে সরকারি ভাবে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি ভারত।
আরও পড়ুন: কেবল ‘তারিখ পে তারিখ’ নয়, সিএএ নিয়ে শাহের মুখ থেকে স্পষ্ট বার্তা শুনতে চায় ঠাকুরনগর
গত বছরের ১৫ জুন দুই সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে রক্তাক্ত হয়েছিল লাদাখের গালোয়ান ঘাঁটি। ভারতীয় সেনার ২০ জওয়ান শহিদ হন। চিন সেনার ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছিল তা নিয়ে জিনপিং সরকার মুখ খোলেনি। তবে ভারতের তুলনায় যে ক্ষয়ক্ষতি চিনের বেশি ছিল সেই দাবি একাধিক বিদেশি সংবাদ মাধ্যমেও করা হয়। এই ঘটনার পর থেকেই কার্যত উত্তেজনা মারাত্মক আকার নেয় দু’দেশের সেনার মধ্যে। চিন নানাভাবে উত্যক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। প্রতিবারই যোগ্য জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও।
ঠিক কি প্রক্রিয়ায় সেনা সরানো হচ্ছে সেটা নিয়ে বিস্তারিত বলা হয়নি কিন্তু বিশেষজ্ঞদের আশা গত নয় মাস ধরে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন স্থানে দুই দেশের মধ্যে যে অচলাবস্থা চলছে, সেটা হয়তো এবার কেটে যাবে।ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে বেশ কিছু কূটনৈতিক সমীকরণ গন্ডগোল হতে শুরু করে। ভারত-চিনের পারস্পরিক সম্পর্কে তার প্রভাব পরে।
মোদী সরকার ট্রাম্প সরকারের প্রতি অতিরিক্ত আস্থাভাজন হয়ে ওঠে।যা আঞ্চলিক কূটনৈতিক ভারসাম্যকে নষ্ট করে। ট্রাম্প জমানা খতম। ফলে এবার মোদী সরকার তার অবিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্তগুলি শুধরে নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা না হলে বিপদ বাড়বে বই কমবে না। কূটনীতিটা আর যাই হোক আরএসএসের ছকে চলবে না। এটা বুঝতে হবে শাহ-মোদী ও শাসক দলকে।
আরও পড়ুন: তারাপীঠে ভরল না মাঠ, ঝাড়গ্রামে ফাঁকা থাকল চেয়ার! নাড্ডার সফর নিয়ে চিন্তায় বঙ্গ বিজেপি