জামিন পেলেন না কৌতুকশিল্পী মুনাওয়ার ফারুকি। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের তরফে খারিজ করা হয় মুনাওয়ার ফারুকির জামিনের আবেদন। হিন্দু দেবদেবীদের নিয়ে টানা কয়েক মাস ধরে টিম মুনাওয়ার ফারুকি যে ধরনের মন্তব্য করছেন, তার প্রমাণ রয়েছে আদালতের হাতে। এমনই জানানো হয় মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্টের তরফে।
মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের এই রায়ে অসন্তোষ চেপে রাখেননি কমেডিয়ান নীতি পাল্টা, অনুভব পাল এবং পরিচালক অনিরের মত হাতে গোনা কয়েকজন। মুনাওয়ার ফারুকীর জামিন খারিজ হয় প্রসঙ্গে অনির বলেন, এটি আসলে ‘প্রতিশোধ মামলা।’ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এমন একজনের বিরুদ্ধে এই প্রতিশোধ নেওয়া হল যে কোনও আপত্তিকর কথা বলেনি। টুইটে অনির লেখেন, ‘মুনাওয়ার ফারুকী আমি দুঃখিত, তোমার সঙ্গে যা হচ্ছে তার জন্য আমি লজ্জিত।’
আরও পড়ুন: গোপনাঙ্গ প্রদর্শন পকসো আইনে যৌন নিগ্রহ নয়! রায় বম্বে হাইকোর্টের সেই মহিলা বিচারপতির
কমেডিয়ান পালটা টুইটে লেখেন, ‘যখন থেকে সব রাস্তা হুলিগান, ক্রিমিনালস এবং স্বঘোষিত রক্ষদের কব্জায় চলে গিয়েছে, তখন থেকে সমাজকর্মী, সাংবাদিক এবং কমিডিয়ানদের জেলে ঢোকানো হয়েছে। হ্যাসট্যাগ নো জাস্টিস ।’ লেখক ও কমেডিয়ান অনুভব পাল উগান্ডার স্বৈরশাসক ইদি আমিনের কোটেশন শেয়ার করেন। যাতে লেখা ছিল, ‘এখানে বাক স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু কথা বলার পর স্বাধীনতা থাকবে কিনা সে নিশ্চয়তা দিতে পারছি না’
জানুয়ারির প্রথম দিকে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে অনুষ্ঠান করতে যান স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান মুনাওয়ার ফারুকি। ওইদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন এডউইন অ্যান্থনি, প্রকার ব্যাস, প্রতীম ব্যাস এবং নলিন যাদব নামে আরও ৪ জন। ইন্দোরের একটি ক্যাফের অনুষ্ঠানের সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সম্পর্কে মুনাওয়ার অশালীন মন্তব্য করেন বলে অভিযোগে ফুঁসে ওঠেন একলব্য সিং গউর নামে এক ব্যক্তি।
স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক মালিনী লক্ষ্মণ সিং গউরের ছেলে একলব্য শনিবার ইন্দোরের ওই অনুষ্ঠানে হাজির হন। সেখানে গিয়েই মুনাওয়ার ফারুকির ওই অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো শ্যুট করে তিনি। এরপর সেই ফুটেজ নিয়ে সোজা থানায় চলে যান একলব্য।
বিজেপি বিধায়কের ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে মুনাওয়ার ফারুকি এবং তাঁর ৫ সঙ্গীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫-এর এ, ২৬৯ ধারায় দায়ের করা হয় অভিযোগ।
ওই ঘটনার পরপরই সামাজিক মাধ্যম জুড়ে ভাইরাল হতে শুরু করে অন্য একটি ফুটেজ। যেখানে দেখা যায়, ইন্দোরের ওই ক্যাফের মধ্যে মুনাওয়ার ফারুকির অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই তাঁকে টেনে হিঁচড়ে সেখান থেকে নিয়ে যেতে শুরু করেন ‘হিন্দ রক্ষক’ নামে একলব্যদের সংগঠনের বেশ কয়েকজন।
আরও পড়ুন:অযোধ্যার মসজিদে নামাজ ‘হারাম’! ব্যাক্তিগত দাবি ওয়েইসির, আপত্তি অনেকের