নয়াদিল্লি : পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকা-খাওয়ার এবং ঘরে ফেরার জন্য আর্থিক ব্যবস্থার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন সমাজকর্মী মেধা পটেকর এবং কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সেই শুনানিতে কেন্দ্রকে কড়া ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্টে তিন বিচারপতির বেঞ্চ।
কেন্দ্রের তরফে থাকা আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহাতেকে কমপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের ৫০টি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।পরিযায়ী ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্ট যাতে রাজনৈতিক ভাষণের প্ল্যাটফর্ম না হয়ে যায়, সেই বিষয়ে সওয়াল করে কেন্দ্র। এই বিষয়ে যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁরা নিজেরা পরিযায়ীদের দুর্দশা ঘোচাতে কী কী পদক্ষেপ করেছেন, তা এফিডেভিট করে শীর্ষ আদালতে জানানোর যাতে নির্দেশ দেওয়া হয়, সেই বিষয়েই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে কেন্দ্র
আরও পড়ুন: লকডাউনের এক মাসে দেশে কাজ হারিয়েছেন ১২ কোটি! গায়ে কাঁটা দেওয়া রিপোর্ট সংস্থার
পরিযায়ীদের শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে যানবাহনের ব্যবস্থা করা এবং তাঁদের খাবারের আয়োজন করাই আসল সমস্যা বলে শীর্ষ আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্র। ১ মে থেকে এখনও পর্যন্ত ৯১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে ঘরে ফেরানো হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বেঞ্চের প্রশ্ন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোই এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা। নাম নথিভুক্ত করার পরও সপ্তাহ খানেক অপেক্ষা করতে হচ্ছে। যাঁরা এতদিন অপেক্ষা করছেন, তাঁদের জন্য কি খাবার ব্যবস্থা করা হচ্ছে? সলিসিটর জেনারেল জানান, হ্যাঁ, তাঁদের খাবার দেওয়া হচ্ছে। এমনকি এজলাসে উপস্থিত আইনজীবী কপিল সিব্বলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, সিব্বলের রাজ্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, কে খাবার জোগান দিচ্ছে, কেন্দ্র না রাজ্য? সরাসরি এই উত্তর না দিয়ে সলিসিটর জেনারেল বলেন, এক অভূতপূর্ব সংকটে অভূতপূর্ব পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে, সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, বাড়ি পৌঁছনো পর্যন্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। কেন্দ্র যতই যুক্তি পেশ করুক না কেন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে।
এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে পরিযায়ীদের নথিভুক্তিকরণ, পরিবহণ এবং খাবারের ব্যবস্থা ঠিকমতো করতেই হবে। নাম নথিভুক্ত করার পরেও ট্রেনের টিকিট পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে পরিযাযী শ্রমিকদের। শ্রমিকদের ঘরে ফেরার জন্য ট্রেন বা বাসের ভাড়া নেওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। রেল মন্ত্রক এবং রাজ্য সরকার ট্রেনের ভাড়া ভাগ করে নেবে। যে রাজ্য থেকে তাঁরা ফিরছেন, ট্রেন সফরের সময় সেই রাজ্যকে শ্রমিকদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: শরীরে করোনা উপসর্গ, হাসপাতালে ভর্তি বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র