Site icon The News Nest

ভ্রূণহত্যার জের? গত তিন মাসে উত্তরাখণ্ডের ১৩৩টি গ্রামে জন্মায়নি কোনো শিশুকন্যা!

SAVE GIRL CHILD

#দেরাদুন: তিন মাসে একটিও কন্যাসন্তান জন্মায়নি উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার ১৩৩টি গ্রামে। জেলার স্বাস্থ্য দফতরের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরকাশী জেলায় তিন মাসে জন্মানো ২১৬টি শিশুর প্রত্যেকেই পুত্র সন্তান। রেকর্ডটিকে ঘিরে নড়েচড়ে বসেছে উত্তরাখন্ডের প্রশাসন।

সম্প্রতি উত্তরকাশী জেলায় শিশু-স্বাস্থ্য নিয়ে সমীক্ষা চালায় জেলার স্বাস্থ্য দফতর। সেখান থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট দেখে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি স্বাস্থ্য অধিকারিকরা। দেখা যায় দুন্ডা ব্লকে গত তিন মাসে ২৭ টি গ্রামে জন্মানো শিশুর সংখ্যা ৫১টি। তার মধ্যে নেই একটিও কন্যা সন্তান। ভাটওয়ারি ও নওগাও ব্লকের গ্রামগুলিতেও একই ছবি।

বিষয়টি নজরে আসার পরেই তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরকাশীর জেলা প্রশাসন। কেন একটিও কন্যা সন্তান জন্ম নিল না সে বিষয়ে পুর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরকাশী জেলার ম্যাজিস্ট্রেট। তাঁর নির্দেশে গঠিত হয়েছে একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল। এই দলের সদস্যরা জেলার প্রতিটি গ্রামে যাবেন। সেখানে প্রতিটি পরিবারে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের সংখ্যা গুনে দেখবে এই প্রতিনিধি দল। সেই সংখ্যায় পুত্র ও কন্যাসন্তানের অনুপাত খুঁজে বের করা হবে। সে ক্ষেত্রেও বৈষম্য প্রকট হলে পূর্ণ তদন্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কন্যাভ্রুণ হত্যাই এর পেছনে দায়ী বলে মনে করছে প্রশাসন।

দেশ জুড়ে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পের প্রচার চলছে, তখন তা যে উত্তরকাশীর মানুষজনকে বিশেষ সচেতন করতে পারেনি, সে কথা বলাই যায়। কারণ তিন মাসে গত তিন মাসে উত্তরকাশী জেলার ১৩২টি গ্রামে কোনও শিশুকন্যা জন্মাল না, এটা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। উত্তরকাশীর জেলাশাসক আশিস চৌহান জানিয়েছেন, শিশু জন্মগ্রহণের ক্ষেত্রে কী কারণে নারী-পুরুষ অনুপাতে এমন বৈষম্য দেখা দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর জন্য বিস্তারিত সমীক্ষা ও গবেষণা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক করে, ওই অঞ্চলের স্থানীয় ‘আশা’ কর্মীদের নজরদারি বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। তার ভিত্তিতে তাঁদের একটি রিপোর্টও জমা দিতে বলা হয়েছে।
এই অপরাধ রুখতে সরকার ও প্রশাসন কোনও কাজ করছে কি না জানি না।” শুধু ভ্রূণহত্যাই নয়, মেয়ে হওয়ার পরেই সদ্যোজাত সন্তানকে মেরে দেওয়া হচ্ছে, এমন সন্দেহও প্রকাশ করা হয়েছে জেলার নানা স্তরে।
গোটা উত্তরাখণ্ডে গড়ে ১০০০ পুরুষ পিছু মহিলার সংখ্যা গড়ে ৯৬৩। কিন্তু শুধু উত্তরকাশী জেলার ক্ষেত্রে সেই মহিলাদের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৯৫৮। নারী-পুরুষ অনুপাতের বিচারে রাজ্যের মধ্যে নবম স্থানে রয়েছে এই জেলা। উত্তরকাশী ব্যতিক্রম নয়। গোটা দেশের পরিসংখ্যানই বলছে, এ দেশে জন্মের হার কমছে। সেই সঙ্গে কমেছে কন্যাসন্তান জন্মের হারও। দেশের মানুষ এখন কম সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। কিন্তু বেশি সংখ্যায় পুত্র-সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। এবং গ্রামের তুলনায় শহরে এই প্রবণতা বেশি। যা থেকে স্পষ্ট, শহরে কন্যাভ্রূণ হত্যা বেশি হচ্ছে।

 

Exit mobile version