#নয়াদিল্লি: সাধারণ নির্বাচনের ফল ঘোষণার প্রায় পর পরই কংগ্রেসের লোকসভার নেতা নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এ বার সংসদের সাংবিধানিক পদও পেলেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন অধীরবাবু।
লোকসভা ভোটে কংগ্রেস এ বার মাত্র ৫২ টি আসনে জিতেছে। দেশের মোট লোকসভা আসনে দশ শতাংশ আসনেও না জেতায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পায়নি কংগ্রেস। অধীরবাবু লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা নির্বাচিত হলেও খাতায়কলমে তিনি বিরোধী দলনেতা নন। নিয়ম অনুযায়ী বিরোধী দলনেতার পদ ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদ মর্যাদার সমতুল। অধীরবাবু বিরোধী দলনেতা না হওয়ায় ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমতুল মর্যাদা পাননি।
কিন্তু পাবলিক অ্যাকাউন্টস চেয়ারম্যান হিসাবে এ বার সেই মর্যাদা পেয়ে গেলেন তিনি। এর অর্থ পরিষ্কার। বাংলা থেকে একমাত্র অধীর চৌধুরীরই বর্তমানে ক্যাবিনেট র্যাঙ্ক রইল। এর ফলে সংসদে তাঁর নিজস্ব দফতর থাকবে। সরকারি গাড়ি ও অন্য সুবিধা পাবেন। শুক্রবার সংসদের ওই অফিসে গিয়েই দায়িত্ব বুঝে নেন অধীরবাবু।
এই নিয়ে তৃতীয় কোনও বাঙালি সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হলেন। অতীতে সত্তরের দশকের গোড়ায় সংসদে পিএসি চেয়ারম্যান হয়েছিলেন সিপিএম নেতা জ্যোতির্ময় বসু এবং প্রবাদপ্রতীম সিপিআই নেতা হীরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। তা ছাড়া কংগ্রেস নেতা সিএম স্টিফেন, অটল বিহারী বাজপেয়ী, পি ভি নরসিংহ রাও, মুরলী মনোহর জোশী প্রমুখ পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে বসেছিলেন।
পিএসি-র চেয়ারম্যান পদটি ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ। এই পদটি বিরোধী দলের জন্যই বরাদ্দ করার ঐতিহ্য রয়েছে। গত লোকসভায় এই পদে ছিলেন কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। স্বাভাবিক কারণেই এ বার ওই পদে অধীরবাবুর নাম প্রায় নিশ্চিত ছিল।ক্যাগের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের এক্তিয়ার রয়েছে এই কমিটির। তবে পিএসি-র চেয়ারম্যানে পদে যোগ্য দাবিদারের নাম ঘোষণা করে থাকেন অধ্যক্ষ। সরকারের সঙ্গে সহমতের ভিত্তিতেই ঐতিহ্যগত ভাবে লোকসভার প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে ওই পদে মনোনীত করা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই লোকসভায় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি আরও একটি গুরুদায়িত্ব চাপল অধীরবাবুর কাঁধে।
জানা গিয়েছে, এ বারের পিএসি-তে ২২ জন সদস্য রয়েছেন। এঁদের মধ্যে ১৫ জন সদস্য লোকসভার এবং বাকি সাত জন রাজ্যসভার। ১৫ জনের মধ্যে ন’জনই আবার বিজেপি সাংসদ। বাকি ছ’জনের মধ্যে বিজেপির দুই শরিক শিবসেনা এবং জেডিইউ-র এক জন করে সাংসদ। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সব মিলিয়ে কমিটির কর্তৃত্ব নিজের হাতে রাখা বেশ কঠিনই হতে পারে অধীরবাবুর কাছে।