Site icon The News Nest

যে কোনও ভারতীয় এখন জমি কিনতে পারবেন জম্মু-কাশ্মীরে, বিজ্ঞপ্তি জারি কেন্দ্রের

kashmir valley

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আনুষ্ঠানিক সিলমোহরের পর কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরে জমি কিনতে পারবেন ভারতের যে কোনও নাগরিক। আগে শুধু স্থানীয়রাই জমি কিনতে পারবেন। এবার থেকে শুধুমাত্র কৃষিজমির ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকল। স্বাভাবিকভাবেই এই সিদ্ধান্ত খুশি নয় স্থানীয় দলগুলি।

গত বছর ৫ আগস্ট কাশ্মীরিদের মতামতের তোয়াক্কা না করে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে দুটি আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করা হয়। জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ। কেবল কাশ্মীরের জনগণ নন, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর পর্যন্ত মতামত নেয়নি কেন্দ্র। রদ করা হয় ৩৭০ ধারা ও ৩৫-এ ধারা। কেড়ে নেওয়া হয় বিশেষ মর্যাদা।

এই ২টি ধারা বিলুপ্তির জেরেএবার জম্মু ও কাশ্মীরে সম্পত্তি কিনতে পারবেন দেশের যে কোনও নাগরিক সেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার তা বাস্তবায়িত করার পথএ বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল মোদী সরকার। জম্মু ও কাশ্মীরে এখন দেশের যে কোনও ব্যক্তি জমি কিনে সেখানে বসতি স্থাপন করতে পারবেন। মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রন থেকে এই বিষয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। তবে কৃষিজমির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা এখনও অব্যাহত থাকছে।

আরও পড়ুন : চাঁদের আলোকিত অংশে রয়েছে জল! এতদিনের ধারণা ভেঙে বিপ্লবিক আবিষ্কার নাসার

জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা জানান, “আমরা চাই যে জম্মু ও কাশ্মীরে শিল্প স্থাপিত হোক। আর তাই বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে চাষের জমি কেবল রাজ্যের মানুষের জন্যেই থাকবে। ” যদিও বিশেষ মর্যাদা থাকলে সেখানকার শিল্প গড়তে কি অসুবিধা হাত তা স্পষ্ট নয়। সংসদে গুলাম আজাদ দেখিয়েছিলেন উন্নয়নের বিভিন্ন মাপকাঠিতে জম্মু-কাশ্মীরের অবস্থান গুজরাটের ওপর।

এদিনকার নির্দেশিকা অনুযায়ী কেন্দ্র জেঅ্যান্ডকে ল্যান্ড রেভিনিউ অ্যাক্ট, ১৯৯৬-এর সংশোধন করেছে। ফলে দেশের যে কোনও প্রান্তের মানুষ জমি কিনতে পারবেন এবার ভূস্বর্গে। লাগবে না ডোমিসাইল সার্টিফিকেট। ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদুল্লা বলেন যে জমি আইনে এই বদল মেনে নেওয়া যায় না। এবার জম্মু-কাশ্মীরকে যে কেউ কিনে নেবে বলে তিনি অভিযোগ করেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন যে লেহতে ভোট শেষ হওয়ার পরে এই নিয়ম আনা হল। বিজেপিকে বিশ্বাস করে লাদাখিরা এই প্রতিদান পেল বলে তিনি অভিযোগ জানান।

পিডিপির প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতি বলেছেন যে জনগণের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা এটি। তাঁর অভিযোগ, ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত করা, জাতীয় সম্পদ লুঠ করা ও এবার জম্মু-কাশ্মীরকে বিক্রি করার প্রচেষ্টা, সবই কেন্দ্রের পরিকল্পনা ধাপে ধাপে ক্ষমতা হ্রাস করার জন্য। রুটি, রোজগার না দিতে পেরে বিজেপি এখন এমন আইন আনছে যেটা সরল মানুষকে আকৃষ্ট করে, বলে তিনি অভিযোগ করেন। একযোগে পূর্বতন রাজ্যের তিন ভাগকে এর বিরুদ্ধে লড়তে তিনি আর্জি জানান।

বহুদিন ধরে সংঘ চাইছে কাশ্মীরের জনবিন্যাসে একটা পরিবর্তন আনতে। সেখানে মুসলিমদের সংখ্যাধিক্য তাদের বহুকাল থেকেই ‘না পসন্দ’। গুরু আরএসএসের সে ইচ্ছাকে মোদির নেতৃত্বে বাস্তব করল শাসক দল বিজেপি। সম্প্রতি করণ থাপারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফারুক আব্দুল্লাহ বলেন, উন্নয়নের মিথ্যা প্রচার করছে বিজেপি। সারা ভারতে যখন ৪ জি, কাশ্মীরি পড়ুয়ারা তখন ২ জি-তে অনলাইনে পড়ছে। সেই নেট ভালো করে চলেও না। আর প্রচার হচ্ছে কাশ্মীরিদের উন্নয়নের জন্য সবটা হচ্ছে।

সমতলের মানুষের কাছে কাশ্মীরিদের ভিলেন হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। দিনের পর দিন তাদের নিয়ে মিথ্যাচার চলেছে। আজও চলছে। প্রতিটি মোড়ের মাথায় সেনা। ওলি-গলিতে সেনা। ভয়ে মানুষ মুখ খুলতে পারছে না। সেটাকেই শাসক দল বলছে কাশ্মীর শান্ত। জানিয়েছেন ফারুক আব্দুল্লাহ।

আরও পড়ুন : নেতা কিংবা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে ধর্ম খুঁজছেন ? সেটা আপনার মূর্খামি

Exit mobile version