মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর ২৩৪টি আসনে নির্বাচন হয়। বাকি রাজ্যের তুলনায় ভোটের হার অনেকটাই কম তামিলনাড়ুতে। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, তামিলনাড়ুতে সন্ধে সাতটা অবধি মোট ৬৫.১১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
এদিন ভোট দিয়ে বেরিয়ে অভিনেতা কমল হাসান বলেন, ““বিভিন্ন বুথে টাকা বিলি করা হচ্ছে। আমাদের কাছে এর প্রমাণও রয়েছে। আমি প্রতিবাদ করছি না বা নির্বাচন বন্ধ করার কথা বলছি না। আমি কেবল অন্যায়ের অভিযোগ জানাচ্ছি।” বিজেপি প্রার্থী খুশবু সুন্দরও বিরোধী দল ডিএমকে-র বিরুদ্ধে টাকা বিলির অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, “ডিএমকের কর্মীদের ভোটারদের মধ্যে টাকা বিলি করতে দেখেছি আমরা। এই বিষয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি। ডিএমকে যেন তেন প্রকারে ভোটে জিততে চাইছে।”
অন্যদিকে, ভোটার তালিকা থেকে শশীকলার নাম বাদ যাওয়াকে কেন্দ্র করে চলছে তোলপাড়। কোনও স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় ভোটার তালিকায় নাম নেই শশীকলার, মনে করা হচ্ছে এমনটাই। কিন্তু এই নিয়ে শশীলার অনুগামীরা জানাচ্ছেন, আম্মার ছায়াসঙ্গীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
এই প্রথম তামিলনাড়ুতে ভোট হল দ্রাবিড় রাজনীতির দুই প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্বের ছত্রছায়া ছাড়াই। দু’জন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এম করুণানিধি আর জয়ললিতার উত্থান কার্যত এক ভাবেই – ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরোধিতা করে। দু’ জন মাত্র দু’বছরের ব্যবধানে মারা গিয়েছেন। এর ফলে কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে তামিলনাড়ুর দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এআইএডিএমকে এবং ডিএমকে।
আরও পড়ুন: WB election 2021: কোথাও হুমকি, কোথাও বোমাবাজি, তৃতীয় দফাতেও কাঠগড়ায় সেই কেন্দ্রীয় বাহিনী
এআইএডিএমকে এখনও সে অর্থে অভিভাবকহীন। জয়ললিতার অনুপস্থিতিতে দলের প্রধান এখন মুখ্যমন্ত্রী ই পালানিস্বামী তথা ইপিএস। কিন্তু দলের মধ্যে যথেষ্ট দ্বন্দ্ব আছে। বিশেষ করে উপমুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলবমের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব সর্বজনবিদিত।
অন্য দিকে করুণানিধির অবর্তমানে দলের রাশ খুব ভালো ভাবেই ধরে নিয়েছেন তাঁর ছেলে এমকে স্ট্যালিন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাবার থেকে তিনিই অনেক ভালো ভাবে জোটধর্ম পালন করতে পারেন। তাই তো দু’ বছর আগের লোকসভা নির্বাচনে তামিলনাড়ুর ৪০টা আসনের মধ্যে মাত্র ২৩টা নিজেদের জন্য রেখে বাকিগুলো কংগ্রেস, সিপিএম এবং সিপিআইয়ের জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন। ফলও এসেছিল হাতেনাতে ৩৯ আসনে জিতে যায় ডিএমকে জোট।
এই জোটই কিন্তু এ বার ক্ষমতায় আসার জন্য এক পা এগিয়েই রেখেছে। এমনই বলছে বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা। এমনকি রাজ্যে দুই-তৃতীয়াংশ আসন জিতে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে এই জোটের। ফলে এই প্রথম বার বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে শাসক জোটকে নেতৃত্ব দিয়ে ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে ইপিএসের জন্য। এর পাশাপাশি অভিনেতা কমল হাসনও একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে তামিলানাড়ুর রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন: অসম নির্বাচন: শেষ দফায় ভোট পড়ল ৮১.৬৬ শতাংশ