ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান নয়, বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে অযোধ্যায় প্রস্তাবিত মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের শুভ সূচনা হবে। আগামী ২৬ জানুয়ারি অর্থাৎ প্রজাতন্ত্র দিবসকেই এই শুভ কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। যে কারণে বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি প্রস্তাবিত মসজিদের নির্মাণ স্থলে তোলা হবে জাতীয় পতাকাও। রবিবার দীর্ঘ বৈঠকের পর এমনটাই জানাল ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন (আইআইসিএফ)। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে।
রাম মন্দিরের নির্মাণস্থল থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ধান্নিপুরে মসজিদটি তৈরি হতে চলেছে। মসজিদ নির্মাণকার্যের তত্ত্বাবধানে থাকা আইআইসিএফ এ নিয়ে রবিবারই একদফা বৈঠক করে। সেখানেই সর্বসম্মতিতে ২৬ জানুয়ারি মসজিদ নির্মাণের সূচনা করার সিদ্ধান্ত নেন সংগঠনের ৯ ট্রাস্টি। পরে এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়, ওই দিন সকাল ৯টায় বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে প্রকল্পের সূচনা ঘটবে। আয়কর ছাড়, বিদেশি অনুদান ইত্যাদি নিয়েও আলোচনা হয়েছে এক প্রস্থ।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এলাকায় সবুজায়ন ঘটানোই আমাদের লক্ষ্য। তার জন্য আমাজন বৃষ্টি অরণ্য, দাবানলে ভস্ম হয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন এলাকা এবং বিশ্বের নানা দেশ থেকে চারা এনে লাগানো হবে, যাতে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো যায়’। হাসপাতাল, জাদুঘর, গ্রন্থাগার, বাগান, কমিউনিটি কিচেন, ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল রিসার্চ সেন্টার এবং প্রকাশনী সংস্থা-সহ মসজিদ চত্বরের একটি নকশায় ইতিমধ্যেই অনুমোদন দিয়েছে অযোধ্যা জেলা প্রশাসন।
মাটি পরীক্ষা করে নির্মাণকার্য শুরুর অনুমোদনের জন্য আবেদন জানানো হবে শীঘ্রই। ঐতিহ্য মেনে মসজিদের মাথায় বিশালাকার গম্বুজ থাকলেও, তা আদ্যোপান্ত পাশ্চাত্য স্থাপত্যের আদলে তৈরি করা হচ্ছে। মসজিদের মূল ভবনটিও আধুনিক স্থাপত্যেরই নিদর্শন। মসজিদ চত্বরে থাকছে পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও।
Proposed Design of Mosque in #Ayodhya #design pic.twitter.com/yAE4cJNCrg
— Vikas Kumar Singh?? (@banarasivikas) December 19, 2020
প্রস্তাবিত হাসপাতালটির যে নকশা তুলে ধরা হয়েছে, শহরের ঝাঁ-চকচকে বিল্ডিংগুলি তার কাছে হার মানতে বাধ্য। মসজিদ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা মুখ্য আর্কিটেক্ট এসএম আখতার বলেন, ‘‘হাসপাতালে ৩০০ বেডের ব্যবস্থা থাকবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের আনা হবে। মসজিদে একসঙ্গে মানুষ নমাজ পড়তে পারবেন। গোটা মসজিদটি সৌরশক্তিচালিত হবে। মসজিদের ভিতরের তাপমাত্রা বাড়ানো-কমানোর ব্যবস্থা থাকবে।’’ এ ছাড়াও মসজিদের জন্য বরাদ্দ পাঁচ একর জমিতে কমিউনিটি কিচেন এবং গ্রন্থাগার নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি। দুঃস্থ মানুষদের সেখানে দু’বেলা খাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে।
গত বছর অযোধ্যা মামলার রায় শোনায় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জায়গায় রামমন্দির নির্মাণে সায় দেওয়ার পাশাপাশি মসজিদ নির্মাণের জন্য অন্যত্র পাঁচ একর জমির বন্দোবস্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘জয় বাংলা’ ডাক দিয়ে শিবসেনার বঙ্গে পা! ভাগ হয়ে যাবে কি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট?