#বেঙ্গালুরু: প্রত্যাশামতোই আস্থাভোটে জিতে গেল কর্নাটকের বিএস ইয়েদুরাপ্পা সরকার। সোমবার সকালেই কর্নাটক বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে সফল হন ইয়েদি। এই আস্থাভোটের মধ্যে দিয়ে গত প্রায় এক মাস ধরে চলতে থাকা কর্নাটকের নাটকের অবশেষে সমাপ্তি ঘটল।
সোমবার সকালে বিধানসভায় আস্থা প্রস্তাব আনেন সদ্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ইয়েদুরাপ্পা। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে ঘণ্টাখানেক আলোচনা হয়। গতকাল স্পিকার রমেশ কুমার দলত্যাগ বিরোধী আইনে ১৪ বিদ্রোহী বিধায়কদের বিধায়ক পদ বাতিল করেন। এর আগে আরও ৩ জনের বিধায়ক পদ খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। যার ফলে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে পথ আরও সুগম হয় বিজেপির। ১৭ জন বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ হওয়ায় বিধানসভার আসন সংখ্যা কমে হয়েছিল ২০৭। ম্যাজিক ফিগার দাঁড়িয়েছিল ১০৪। এইমুহূর্তে, ১০৫ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। আর এই সমীকরণে ভর করেই এ বার কর্নাটক দখল করে নিল গেরুয়া শিবির।
এদিন বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিএস বিধায়ক কুমারস্বামী বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। এমনকি নরেন্দ্র মোদী এবং জেপি নাড্ডার জন্যও নয়। তিনি এ দিন বিজেপিকে আশ্বাস এবং কটাক্ষ করে বলেন, “আপনাদের হাতে ১০৫ বিধায়ক ১০০ কমানোর চেষ্টা আমরা করবো না। মানুষের স্বার্থে আপনাদের সহযোগিতা করব।”
কংগ্রেস বিধায়ক সিদ্দারামাইয়া এদিন ইয়েদুরাপ্পাকে কটাক্ষ করে বিধানসভায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন কিন্তু কোনও গ্যারান্টি নেই। বিদ্রোহী বিধায়কদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন কিন্তু তাঁদের নিয়ে স্থায়ী সরকার গড়তে পারবেন কি? প্রশ্ন তোলেন সিদ্দারামাইয়া। এরপর আস্থাভোটের বিরোধিতা করে তাঁর অভিযোগ, এই সরকার অসংবিধানিক এবং অনৈতিক। বিধায়ক পদ খারিজ হওয়া ওই ১৭ জন আগামী চার বছরে মন্ত্রী হওয়া তো দূর ভোটে লড়ার ক্ষমতা হারালেন। এর জন্য স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের জন্য সাধুবাদ জানান কংগ্রেস-জেডিএস বিধায়করা। সিদ্দারামাইয়া বলেন, লোভী রাজনীতিকদের জন্য কড়া বার্তা পৌঁছল। স্পিকারের এই সিদ্ধান্ত দেশের কাছে দৃষ্টান্ত তৈরি হল বলে মনে করছেন জেডিএস বিধায়করা।
আস্থাভোটে জিতে বিরোধীদেরও বার্তা দিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। ভুলে যাওয়া ও ক্ষমা করে দেওয়াই আমার নীতি।’’ উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার আস্থাভোটে হেরে যান কুমারস্বামী। তার পর থেকে ইয়েদিয়ুরাপ্পার মুখ্যমন্ত্রীর মসনদে বসা ছিল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু তার পরেও দু’ দিন বিশেষ কোনো পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি ইয়েদিকে। অবশেষে গত শুক্রবার সকালে রাজ্যপাল বজুভাই বালার কাছে সরকার গড়ার দাবি জানিয়ে ওই দিন সন্ধ্যাতেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ দেন ইয়েদিয়ুরাপ্পা। তার পরেই সোমবার আস্থাভোটের ডাক দেন তিনি।