মধ্যবিত্তের পকেটে টান ধরিয়ে ক্রমশই বাড়ছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। যদিও দেশের পেট্রোপণ্যের উপর শুল্ক-ছাড়ে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছে বাংলা-সহ ৩টি রাজ্য। তবে তাতে আমজনতা আদৌ কতটা স্বস্তি পেয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কিন্তু প্রশ্ন হল, জ্বালানির উপর কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারই কর আদায় করে। তাহলে কেন শুধু কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে? বিরোধী শিবিরের দাবি, এর কারণ হল পেট্রোপণ্যের উপর করের পরিমাণ। রাজ্য সরকারগুলির তুলনায় পেট্রোপণ্যে কেন্দ্র অনেক বেশি কর নেয়। গতকালই রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র (Amit Mitra) বলছিলেন,”এই মুহূর্তে প্রতি লিটার পেট্রলে ৩২.৯০ টাকা ও ডিজেলপিছু ৩১.৮০ টাকা কর এবং সেস নিচ্ছে কেন্দ্র। সেখানে রাজ্য সরকার প্রতি লিটার পেট্রলে মাত্র ১৮.৪৬ টাকা ও ডিজেলে লিটারপিছু মাত্র ১২.৫৭ টাকা কর নিচ্ছে।”
বিরোধীদের দাবি, পেট্রোপণ্য থেকে কেন্দ্রের আয় যেহেতু রাজ্য সরকারের তুলনায় অনেক বেশি। তাই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার দায়ও কেন্দ্রের উপর বেশি বর্তায়। স্বাধীনতার পর থেকে কেন্দ্রই মূলত পেট্রপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে। সোমবারও দেখা গিয়েছে, দেশের ৪টি মেট্রো শহরে পেট্রল-ডিজেলের দাম লিটার প্রতি প্রায় ১০০ টাকা। কলকাতায় ১ লিটার পেট্রল কিনতে খরচ করতে হবে ৯১.৭৮টাকা এবং ডিজেলের দাম লিটারপিছু ৮৪.৫৬ টাকা।
আরও পড়ুন: ভুয়ো ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পেলেন কেকে, যাচাই না করেই শুভেচ্ছা জানিয়ে চিঠি নরেন্দ্র মোদীর!
রাজ্যগুলির তরফে এই দাম কমানোর প্রচেষ্টা শুরু হলেও এখনও শুল্ক ছাড়ে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার। উল্টে, মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে কেন্দ্রের তরফে সব মিলিয়ে পেট্রল ১৩ টাকা এবং ডিজেলে ১৬ টাকা করে আবগারি শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেল কিনতে ভারতের ১৯.৯ ডলার খরচ করতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ওই আমদানি করা তেলের দাম-সহ যে সমস্ত সংস্থা তা উৎপাদন করে, তাদের ঘাড়েই পেট্রোপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দামের দায় দাপিয়েছে।
ইতিমধ্যেই কংগ্রেস (Congress) শাসিত রাজস্থান এবং ছত্তিশগড় পেট্রপণ্যের উপর করছাড় দিয়েছে। বিজেপি শাসিত অসম করোনাকালে পেট্রল এবং ডিজেলের উপর যে অতিরিক্ত সেস বসিয়েছিল, তা প্রত্যাহার করেছে। একধাক্কায় অনেকটা দাম কমিয়েছে মেঘালয় সরকার। গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সরকারও পেট্রল-ডিজেলে একটাকা করে সেস কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সব মিলিয়ে ১৮টি রাজ্য ইতিমধ্যেই পেট্রোপণ্যে ভ্যাট কমিয়েছে।
এই অবস্থায় মোদী সরকার কার্যত নির্বিকার। নেতা- মন্ত্রীরা ব্যস্ত ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে প্রচার করতে। দেশের মানুষের পেটে টান পড়ছে, সেকথা ভাবার সময় তাঁদের কোথায়? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়ে।
আরও পড়ুন: শর্ত সাপেক্ষে ছ’মাসের জামিন পেলেন অশীতিপর কবি ও সমাজকর্মী ভারভারা রাও