এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কায় হেঁশেলে আগুন মধ্যবিত্তের। সেই জ্বালা আরও বাড়াতে আগামী মাস থেকে শুরু হওয়া নতুন অর্থবর্ষে (২০২১-২২) রান্নার গ্যাসে ভর্তুকির পরিমাণে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ফেব্রুয়ারিতে যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তাতে আসন্ন অর্থবর্ষের জন্য এই খাতে সরকারি ভর্তুকির পরিমাণ রাখা হয়েছে মাত্র ১৪,০৭৩ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবর্ষে (২০২০-২১) রাখা হয়েছিল ৪০,৯১৫ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এই ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৩৭,৪২৮ কোটি টাকা। যদিও পরে বর্তমান অর্থবর্ষের ক্ষেত্রে ভর্তুকির পরিমাণ সংশোধিত করে করা হয়েছে ৩৭,২৫৬ কোটি টাকা।
বর্তমানে ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম ৮৪৫.৫ টাকা। যার মধ্যে মাত্র ১৯.৫৭ টাকা একজন গ্রাহক ভর্তুকি হিসেবে পান। এই টাকা গত বছরের জুন মাস থেকে পাচ্ছেন সকলে। অর্থাৎ গত ১০ মাস ধরে এই সামান্য টাকাই ভর্তুকি হিসেবে পেয়ে যাচ্ছেন আমজনতা।
আরও পড়ুন: কিল-চড়-লাথি! বিহার বিধানসভা থেকে বিরোধী বিধায়কদের পিটিয়ে বের করে দিল পুলিশ
আগামী অর্থবর্ষে ভর্তুকির পরিমাণ চলতি বছরের ভর্তুকির এক তৃতীয়াংশ করে দেওয়ার, এই সামান্য ভর্তুকি কতদিন মধ্যবিত্তের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে, সেটিই বড় প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উজালা প্রকল্পের আওতায় আগামী ২ বছরে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী আরও এক কোটি বাড়িতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে পরিষ্কার হিসেব বলছে, মূলত এই ভর্তুকির টাকা উজালা প্রকল্পে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার খাতেই খরচ করা হবে। পুরনো ক্ষেত্রে ভর্তুকি কতটা পাওয়া যাবে তা নিয়ে যথেষ্টই সন্দেহ রয়েছে।
শেষবার কবে ১০০ টাকার বেশি ভর্তুকি গ্রাহকেরা পেয়েছিলেন, তা কেউই মনে করতে পারছেন না। তবে রান্নার গ্যাসে এই ভর্তুকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেওয়ায় মূলত কোপ যে মধ্যবিত্তের উপরেই পড়তে চলেছে তা জলের মতই পরিষ্কার বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে দেশে মোট ২৮.১৫ কোটির কিছু বেশি বাড়িতে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে কম বেশি ৮ কোটি বাড়িতে এই সিলিন্ডার দেওয়া হয়েছে উজালা প্রকল্পে। তাই এই বিরাট সংখ্যক মানুষের জন্য সামান্য এই ভর্তুকি যে আদৌ কোনও সুরাহার হবে না, তা এখনই স্পষ্ট। এভাবেই ক্রমাগতই ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে হেঁশেল আগুন ধরাবার. পথই সুগম করেছে মোদী সরকার।
আরও পড়ুন: Breaking বুকে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ