দেশে করোনা মহামারীতে নিত্যদিন তিন-চার লাখ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, প্রাণ হারাচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ। এই কঠিন পরিস্থিতির মাঝেও কাজ চলছে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের। দিল্লিতে লকডাউন জারি থাকলেো শ্রমিকদের বিশেষ বাসে করে নিয়ে আসা হচ্ছে সংসদ ভবনে। কারণ নির্ধীরিত দিনের মধ্যেই শেষ করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। শুক্রবার কেন্দ্রের এই “বিলাসিতা”কেই আক্রমণ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন এটি “অপরাধমূলক অপচয়”।
পুরনো সংসদভবনের পাশেই প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হচ্ছে নতুন সংসদ ভবন। বর্তমান সংসদের পাশেই ৬৪,৫০০ বর্গমিটার জুড়ে তৈরি হবে ত্রিভূজাকৃতির নতুন সংসদ ভবন। রাজপথ থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন ও ইন্ডিয়া গেট অবধি রাস্তা ও তার আশেপাশের অঞ্চল সংস্কার করতে হবে। যে সংস্থা এই প্রকল্পের কাজ করছেন, তার তরফে জানানো হয়েছে আনুমানিক খরচ ১১ হাজার ৭৯৪ কোটি থেকে বেড়ে তা ১৩ হাজার ৪৫০ কোটিতে পৌঁছেছে।
কেন্দ্রের তরফে এই প্রকল্পকে ‘অত্যন্ত প্রয়োজনীয়’ প্রকল্প হিসাবে দেখা হচ্ছে। আগামী বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী বাসভবন তৈরির কাজ শেষ করার ডেডলাইন দিয়েছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: করোনার দোসর এবার ‘কালো ছত্রাক’! বিপদ বাড়াচ্ছে রোগীদের
যদিও এই প্রজেক্টের বারংবার বিরোধিতা করেছে বিরোধীরা। এ দিন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেন, “সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প হল অপরাধমূলক অপচয়। দয়া করে একটা নতুন বাড়ি বানানোর জন্য নিজেদের অন্ধ ঔদ্ধত্যকে সরিয়ে রেখে সাধারণ মানুষের জীবনের দিকে নজর দিন।”
এর আগেও রাহুল গান্ধী সহ একাধিক বিরোধী নেতারা করোনাকালে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের বিরোধিতা করেছেন ও কাজ স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছেন। সম্প্রতিই রাহুল গান্ধী টুইট করে লিখেছিলেন, “সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প প্রয়োজনীয় নয়, প্রয়োজনীয় হল একটি সঠিক লক্ষ্যযুক্ত কেন্দ্রীয় সরকার।”
Central Vista is criminal wastage.
Put people’s lives at the centre- not your blind arrogance to get a new house!
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) May 7, 2021
অন্যদিকে, দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও লিখেছেন তিনি।
মোদীকে লেখা চিঠিতে রাহুল প্রথমেই প্রধামমন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রাথমিক কর্তব্যের কথা। লিখেছেন, ‘কোভিড সুনামি সমান তালে তাণ্ডব চালানোয় আমি আপনাকে চিঠি লিখতে বাধ্য হচ্ছি। এই অভূতপূর্ব সংকটের সময়ে আপনার একমাত্র প্রাধান্য হওয়া উচিত সাধারণ মানুষের কল্যাণ। দেশের মানুষ যে প্রবল কষ্টের মধ্যে দিয়ে চলেছেন, তা থামাতে আপনার সব কিছু করা উচিত। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভারতের দায়িত্বের কথা মনে রাখা প্রয়োজন’।
রাহুল চিঠিতে জানিয়েছেন, ভারতের নাগরিক বৈচিত্র্যের কারণেই ভাইরাস এতবার রূপ পাল্টে আক্রমণ করতে পারছে। আরও ভয়াবহ হচ্ছে তার প্রকার। সেই পরিস্থিতিতে তিনি চারটি বিশেষ দিকের কথা উল্লেখ করেছেন। চিঠিতে লিখেছেন, ‘বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দেশে ভাইরাসের প্রজাতি পরিবর্তনের দিকে নজর রাখা, নতুন প্রজাতির উপর ভাইরাসের কর্মক্ষমতা কতটা, তা বিচার করা, দেশের মানুষের দ্রুত টিকাকরণ করা ও ভারতের আবিষ্কার সম্পর্কে সারা পৃথিবীর মানুষকে অবগত করা’।
আরও পড়ুন: মমতা একা নন, বিধায়ক না হয়েও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার নজির অতীতেও রয়েছে এ দেশে