অধীর চৌধুরীকে লোকসভার দলনেতার পদ থেকে সরিয়ে দিল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার এআইসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর জায়গায় ওই পদে আনা হচ্ছে পঞ্জাবের লুধিয়ানার সাংসদ রভনীত সিংহ বিট্টুকে। এখন তিনি লোকসভায় কংগ্রেসের সচেতক। অধীরকে সরানোর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলার ভোটের জন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরকে রাজ্যে অনেক বেশি সময় দিতে হচ্ছে। তাই তাঁকে লোকসভার দলনেতার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল। লোকসভার স্পিকারের দফতরকে চিঠি দিয়ে ওই পরিবর্তনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুরোধ মেনে নেওয়া হয়েছে। বাজেট অধিবেশনের বাকি দিনগুলিতে অধীরের দায়িত্ব সামলাবেন বিট্টু।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, একই ভাবে অসমের ভোটের কারণে লোকসভার উপ দলনেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংসদ গৌরব গগৈকে। লোকসভায় কংগ্রেসের সংসদীয় দলের দায়িত্ব সামলান মোট পাঁচজন। অধীর, গৌরব, কে সুরেশ (কেরল), মানিক টেগোর (তামিলনাড়ু) এবং বিট্টু। বিট্টু ছাড়া চারজনেই তাঁদের রাজ্যের ভোট নিয়ে ব্যস্ত। তাই বিট্টুকে লোকসভা দলনেতার দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।
কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি, বাংলার ভোট মিটে গেলে অধীরকে আবার ওই পদে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তবে এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার একটি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ ঘটনা ঘটেছে। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার ঘটনায় প্রদেশ সভাপতি অধীর যে মন্তব্য করেছিলেন, তা থেকে দূরত্ব রচনা করেছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। প্রসঙ্গত, বুধবার নন্দীগ্রামের ওই ঘটনার পর অধীর বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাটক করছেন!’’ বৃহস্পতিবার ওই বিষয়ে এআইসিসি-র মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাতে বলেন, ‘‘প্রদেশ সভাপতি মমতা সম্পর্কে যা বলেছেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। উনি হয়তো স্থানীয় কোনও সূত্রে খবর পেয়ে ওই মন্তব্য করেছেন। আমি এবং দল তাঁর ওই মন্তব্যের বিরোধিতা করছি।’’
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বহরমপুর লোকসভা আসন থেকে পঞ্চম বার জয়ী হলে অধীরকে লোকসভার দলনেতা করেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। জয়ী মাত্র ৫২ জন সাংসদের মধ্যে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ছিলেন অধীরই। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, রাম মন্দির নির্মাণ বিতর্ক কিংবা জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ এবং ৩৫এ ধারা প্রত্যাহার করা নিয়ে আলোচনা— সবেতেই লোকসভার দলনেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন অধীর। লোকসভার দলনেতার সঙ্গেই পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন অধীর। সেই পদে অবশ্য তিনি এখনও রয়েছেন।