সমালোচনায় অস্বস্তি? কেন্দ্রের নির্দেশে ‘গায়েব’ বিরোধীদের ট্যুইট

তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়ান বলেন, ‘টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়ায় আমরা কেন ক্ষুব্ধ হচ্ছি! ওঁরা তো শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা নাগরিকদের অক্সিজেন বন্ধ করে দিচ্ছেন।’
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

কৃষক আন্দোলনের পর এ বার কোভিড সঙ্কট নিয়ে টুইটেও সরকারি নিষেধাজ্ঞা। নোভেল করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় এই মুহূর্তে রকেট গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে দেশে। একই সঙ্গে অব্যাহত মৃত্যুমিছিলও। তা নিয়ে সাংসদ থেকে বিধায়ক, অভিনেতা থেকে পরিচালক… মাইক্রোব্লগিং সাইটে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন অনেকেই। বিষয়টি নজরে আসতেই টুইটার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে কেন্দ্রীয় সরকার।

তাঁদের নোটিস ধরিয়ে বলা হয় যে, এই ধরনের টুইট দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের পরিপন্থী। তার পরেই টুইটারের তরফে সরকারের সমালোচনায় লেখা মোট ৫২টি টুইট নিষিদ্ধ করা হয়, যাতে দেশের সাধারণ মানুষের নজরে না পড়ে সেগুলি। সেই সঙ্গে ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম থেকে ১০০-এর বেশি করোনা সংক্রান্ত ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট এবং অ্যাকাউন্ট সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হল।

বিষয়টি চাউর হতেই যদিও দিল্লির একটি সূত্রে সাফাই দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কোভিড সঙ্কট সামাল দেওয়ায় সরকারি ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খুলেছে বলে নয়, পুরনো ছবি দিয়ে ভুয়ো খবর ছড়ানো এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্যই টুইটগুলি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছিল।

যে সমস্ত হ্যান্ডলের টুইট নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, সাংসদ রেবানাথ রেড্ডি, অভিনেতা বিনীতকুমার সিংহ, চিত্র নির্মাতা বিনোদ কাপরি এবং অবিনাশ দাসের হ্যান্ডল। কোভিড পরিস্থিতিতে হাসপাতালে শয্যার অভাব, অক্সিজেন, ওষুধে ঘাটতি, কুম্ভমেলায় জনসমাগমের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে টুইট করেছিলেন তাঁরা। মলয় লেখেন, ‘যে ভাবে অতিমারিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছেন, দেশের মানুষকে প্রাধান্য দেওয়ার বদলে যে ভাবে অন্য দেশে টিকা পাঠাচ্ছেন, তার জন্য দেশ প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমা করবে না’। এ নিয়ে টুইটারের তরফে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারও কোনও উচ্চবাচ্য করেনি বিষয়টি নিয়ে। তবে যাঁদের টুইট নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেককে নোটিস পাঠিয়েছে টুইটার। তাতে বলা হয়েছে, ভারত সরকারের নির্দেশেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। তাঁদের ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন লঙ্ঘন করেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: না ফেরার দেশে বিশিষ্ট আলেম মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খান, শোক প্রকাশ মোদীর

কোনও দেশের সরকারের নির্দেশে তারা কী কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একটি ওয়েবসাইটে সেই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য তুলে ধরে প্রযুক্তি সংস্থাগুলি। ভারত সরকারের এই নির্দেশের কথাও সেখানে তুলে ধরেছে তারা। তাতে জানানো হয়েছে, গত ২২ এবং ২৩ এপ্রিল তাদের টুইটগুলি নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেয় ভারত সরকার। প্রভাবশালীদের টুইটগুলি দেশের মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে ভেবেই সরকারের তরফে এমন নির্দেশ দেওয়া হয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তবে টুইটগুলি এমন ভাবে সরানো হয়েছে যে, ভারতের নাগরিকরাই সেগুলি দেখতে পাবেন না। অন্য দেশ থেকে সেগুলি দেখা যাবে।

এই নিয়ে দ্বিতীয় বার এই ধরনের পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতায় পথে নামা লক্ষ লক্ষ কৃষকের আন্দোলন যখন ব্যাপ্তি পাচ্ছিল, সেই সময়ও কড়া পদক্ষেপ করে তারা। কৃষকদের সমর্থনকারী একাধিক টুইটার হ্যান্ডল ব্লক করতে নির্দেশ দেয় তারা। সরকারের সমালোচনায় লেখা বহু টুইট মুছে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ – এর দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারমূলক পেজ ‘বাংলার গর্ব মমতা’-র ফেসবুক পেজও আছে ব্লক তালিকায়। এক আধিকারিক বলেন, ‘ব্লক করে দেওয়ার নির্দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী হ্যান্ডেলও আছে।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভুয়ো তথ্যের জন্য সেই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।’

কেন্দ্রের সেই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়ান। তিনি বলেন, ‘মো-শাহ হলেন স্বৈরাচারী। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই সেটা বলে আসছি। পরাজিতরা সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না।’ সেইসঙ্গে তিনি কটাক্ষ করেছেন, ‘টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়ায় আমরা কেন ক্ষুব্ধ হচ্ছি! ওঁরা তো শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা নাগরিকদের অক্সিজেন বন্ধ করে দিচ্ছেন।’

আরও পড়ুন: অক্সিজেন সরবরাহ আটকালে ফাঁসি, বেনজির হুঁশিয়ারি দিল্লি হাইকোর্টের

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest