নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে গিয়ে আর্থিক প্যাকেজের নামে এবার বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। পঞ্চম দফায় সাংবাদিক বৈঠক করে এদিন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন, ‘নতুন আত্মনির্ভর ভারত দাঁড়িয়ে থাকবে পাবলিক সেক্টর এন্টারপ্রাইস পলিসির উপর। স্ট্র্যাটেজিক সেক্টরে ও সরকারি ক্ষেত্রেও প্রাইভেট সেক্টরকে স্বাগত জানানো হবে।’
‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই প্রকল্পের পঞ্চম পর্বের ঘোষণা করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আজ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ব্যবসা ক্ষেত্রের প্যাকেজ ঘোষণা করছেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাজেট ছাড়াও ৪০ হাজার কোটির অতিরিক্ত প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তিনি।
এ ছাড়াও এ দিনের ঘোষণায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, সরকারি সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের রাস্তা পুরোপুরি খুলে দেওয়া। এই প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সরকারি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেও পরিবর্তনের সময় হয়েছে। তাই সরকারি সংস্থাগুলির একটি স্ট্র্যোটেজিক সেক্টরের তালিকা তৈরি হবে। সেই তালিকা অনুযায়ী বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’ পাশাপাশি সংযুক্তিকরণের প্রক্রিয়াও জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। তিনি জানিয়েছেন, যে ভাবে ব্যাঙ্কগুলি সংযুক্তিকরণ করা হয়েছে, সেই প্রক্রিয়া চালু থাকবে।
আরও পড়ুন: ইয়াকুবের কোলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ অমৃতের! রাস্তাতেই শেষ দুই পরিযায়ীর বন্ধুত্ব
উল্লেখ্য, শনিবার নির্মলার ঘোষণার দিকে নজর রাখলেই বোঝা যাবে সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাশ আর নিজের হাতে রাখতে চাইছে না। অন্যভাবে বললে কসলা, খনিজ, এমনকি মহাকাশ গবেষণাতেও বেসরকারি সংস্থার অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে।
কোভিড সংক্রমণের কারণে রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায় যে মুখ থুবড়ে পড়েছে তা রবিবার স্বীকার করে নিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কিন্তু সেই সহানুভূতি দেখিয়েও যে দাওয়াইয়ের কথা ঘোষণা করলেন তিনি তাতে স্পষ্ট, কেন্দ্রের ভরসায় হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই অনেকটা করে নিতে হবে রাজ্যকে। কেন্দ্র আরও ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে তুলনায় বেশি অগ্রিমও মিলবে। কিন্তু তার অনেক শর্ত, অনেক ঝক্কি। রবিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে নির্মলা সীতারামন বলেন, “রাজ্যগুলি তাদের এফআরবিএম ‘ম্যানেজ করবে’ সেটা তাদের ব্যাপারে। কেন্দ্র তা কী করে বলবে”। অর্থাৎ স্পষ্ট কথায় কেন্দ্রের দায় নেই।
রবিবার নতুন ঘোষণার মধ্যে নির্মলা জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফেরার পর তাদের কাজের সুযোগ দিতে হবে। রাজ্যগুলি একশ দিনের কাজ প্রকল্পে তাঁদের কাজের সুযোগ দিতে পারেন। সেই কারণে একশ দিনের কাজ প্রকল্পে বাজেটে প্রস্তাবিত ৬১ হাজার কোটি টাকার পরিবর্তে এই অর্থবর্ষে ১ লক্ষ ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে।
আরও পড়ুন: পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অমানবিক অত্যাচার , ক্ষুধার্ত শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ পুলিশের