যমুনা সেতু পেরোতে দেয়নি পুলিশ, বাড়ি ফিরেও রামপুকার দেখতে পেলেন না মৃত ছেলেকে

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

নয়াদিল্লি: উসকো-খুসকো চুল। চোখেমুখে ক্লান্তি। এলোথেলো বেশ। কোনওমতে মোবাইল ফোনটাকে কানে আঁকড়ে রেখেছেন। দেখে বোঝাই যাচ্ছে, ফোনের ওপারের মানুষটির কাছ থেকে এমন কোনও দুঃসংবাদ পেয়েছেন যে কান্না আর চেপে রাখতে পারছেন না। একানাগাড়ে হাউ হাউ করে কেঁদে চলা এই মানুষটির ছবি গত দু’দিনে হয়তো অনেকের কাছেই পৌঁছেছে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। ইনি রামপুকার পণ্ডিত। পরিযায়ী শ্রমিক।

ছেলে মৃত্যু পথযাত্রী, বাবাকে শেষ দেখা দেখতে চাইছে। কিন্তু পুলিশ যে তাঁকে যেতে দিচ্ছে না পায়ে হেঁটে। নেই গাড়ি বা ট্রেনের ব্যবস্থাও। ফলে অসহায় হয়ে কাঁদছিলেন রামপুকার। সেই দৃশ্য দেখেই এগিয়ে আসেন পিটিআই সংবাদ সংস্থার আলোকচিত্রী অতুল যাদব। রামপুকারকে জিজ্ঞাসা করেই তিনি জানতে পারেন, তাঁর কান্নার কারণ।

আরও পড়ুন: পরিযায়ী যন্ত্রণা! দুই ছেলেকে বাঁকে বয়ে ১৬০ কিমি হেঁটে বাড়ি ফিরলেন রূপায়া টুডু

বিহারের বেগুসরাই জেলায় থাকেন রামপুকার। নয়ডাতে মজদুরের কাজ করেন। লকডাউনের জন্য কাজ বন্ধ, চরম অর্থসংকট। তার মধ্যেই গ্রাম থেকে খবর আসে ছেলে মৃত্যুপথযাত্রী। অসহায় বাবা যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটে বেড়িয়ে পড়ে বিহারের গ্রামের উদ্দেশ্যে। উত্তরপ্রদেশের সীমান্তে পর্যন্ত হেঁটে পৌঁছে যান তিনি। কিন্তু পুলিশ যমুনা সেতু পেরোতে দেয়নি। তিন দিন ধরে সেতুর উপরেই বসে আছেন তিনি। অতুল ওঁকে কিছু বিস্কুট আর জল দিলেন। সান্ত্বনাও দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ভাষা জোগায়নি।

অতুল পুলিশের কাছে গেলেন। অনুরোধ করলেন, ওঁকে কি যেতে দেওয়া যায় না? পুলিশ গাঁইগুঁই করছিল। তবে সংবাদমাধ্যমের লোক দেখে জানাল, ওঁকে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। অতুল ছবি জমা দিলেন অফিসে। কিন্তু এ সবের মধ্যে মানুষটির নাম, ফোন নম্বর কিছুই নেওয়া হয়নি। 

কী করে খবর পাওয়া যাবে, উনি ফিরতে পারলেন কি না? বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ছবিটা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। বিচলিত করেছিল বহু মানুষকে। খবরের কাগজগুলো খুঁজে বার করল ওঁকে। সেখান থেকেই অতুল জানলেন, ওঁর নাম রামপুকার পণ্ডিত। উনি বিহারে ফিরেছেন। ওঁর ছেলে আর নেই।

মৃত্যুশয্যায় শুয়ে থাকা ছেলেটি শেষবারের জন্য দেখতে পায়নি তার বাবাকে। কান্না নিয়ে বাড়ি পৌঁছে রামপুকার জানতে পারেন, শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে তাঁর প্রাণপ্রিয় ছেলেটার।

আরও পড়ুন: ইয়াকুবের কোলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ অমৃতের! রাস্তাতেই শেষ দুই পরিযায়ীর বন্ধুত্ব

Gmail 2

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest