২৮ লক্ষ মানুষের জমায়েতে ‘সুপারস্প্রেডার’ কুম্ভমেলা! নিজামুদ্দিনের সঙ্গে তুলনাই হয় না, সাফাই মুখ্যমন্ত্রীর

খোলা মেলা জায়গায় কি করোনা ছড়ায় না? এই প্রশ্ন করেছেন অনেকেই। 
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

কুম্ভে দ্বিতীয় শাহি স্নানের জন্য গত কাল বিকেল পর্যন্ত হরিদ্বারে এসে পৌঁছেছেন প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষ। গোটা দেশে কোভিডের প্রকোপ বাড়লেও কুম্ভে ন্যূনতম কোভিড সতর্কতা বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ফলে কুম্ভ কোভিড সংক্রমণের ‘সুপারস্প্রেডার’ হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ছে। কুম্ভ ফেরত তীর্থযাত্রীদের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা নিয়ে এ দিন মুখ খুলেছে সে রাজ্যের শাসক জোটের শরিক শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেস।

কিন্তু উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিংহ রাওয়তের মতে, সব কোভিড বিধি মেনেই কুম্ভমেলা পরিচালনা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে তাঁর আশা, ঈশ্বরভক্তি রোগের ভয়কে জয় করতে সাহায্য করবে। কিন্তু আগামিকাল দ্বিতীয় শাহি স্নানের আগে বাস্তব চিত্রটা কী? উত্তরাখণ্ড সরকারের মেডিক্যাল দফতরের হিসেব অনুযায়ী, রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা থেকে সোমবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ১৮,১৬৯ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০২ জন কোভিড পজ়িটিভ। আজ হরিদ্বারে ৫৯৪ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এ নিয়ে ২ দিনে হরিদ্বারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার জনে।

হরিদ্বারের স্টেশন, হর কি পৌড়ী ও ঘাটগুলিতে দেখা যাচ্ছে না থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের কোনও ব্যবস্থা। যাঁরা মাস্ক পরছেন না তাঁদের উপরে নজরদারি করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বলীয়ান নয়া সিসিটিভি ব্যবস্থা ব্যবহার করছে উত্তরাখণ্ড। তবে মাস্ক না পরে যাঁরা ঘুরছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষণ চোখে পড়ছে না কোথাও।

আরও পড়ুন: ‘তুচ্ছ আর্জি’, কোরানের ২৬ আয়াত স্তবক বাদের জন্য পিটিশন, মোটা অঙ্কের জরিমানা

কুম্ভযাত্রী ও সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বিপুল জনসমাগমের ফলে কোভিডের বিরুদ্ধে প্রথম যে ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে সেটি হল কুম্ভে আসতে ইচ্ছুক সকলের আরটি-পিসিআর পরীক্ষা। বিভিন্ন চেকপোস্টে যাত্রীদের আরটি-পিসিআর রিপোর্ট আছে কি না, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু না থাকলে কোনও যাত্রীকে আটকানো হচ্ছে না মেলায় কোভিড মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক অবিনাশ খন্না জানালেন, রাজ্যের সীমানা, স্টেশন ও ঘাটে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছিল আজ সকালে ঘাটে কেবল বিভিন্ন আখড়ার সদস্যদের স্নানের অধিকার ছিল। তাই স্ক্রিনিং ও পরীক্ষা বন্ধ আছে।’’

গত বছরের রেকর্ডও ভাঙছে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। এ দিকে এই পরিস্থিতিতেও চলছে কুম্ভ মেলা। করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে গত বছরে তবলিগি জামাতের মার্কাজ়ের সঙ্গে কুম্ভের তুলনা টানছে অনেক শিবির। করোনাকালে দুই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের তুলনা টানতেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত। তাঁর সাফ কথা, কুম্ভ মেলার সঙ্গে নিজামুদ্দিনের তুলনা করা চলে না।

মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “কুম্ভ ও মরকজের মধ্যে তুলনা করাই উচিত নয়। মরকজ একটি আবদ্ধ জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে কুম্ভের আয়োজন গঙ্গার ঘাটের মতো খোলামেলা জায়গায় হচ্ছে।” কিন্তু খোলা মেলা জায়গায় কি করোনা ছড়ায় না? এই প্রশ্ন করেছেন অনেকেই।  একইসঙ্গে তিনি বলেন, “কুম্ভ মেলায় যারা অংশ নিতে আসছেন, তারা কেউ বাইরের লোক নয়। সকলেই নিজেদের মানুষ। নিজামুদ্দিনে তো ভিন দেশ থেকেও লোক সামিল হয়েছিল।”

গতবছরের তুলনায় এই বছর যেখানে সংক্রমণের হার অধিক, সেখানে দুই পরিস্থিতি ভিন্ন কীভাবে, প্রশ্ন করা হলে তিরথ সিং রাওয়াত জানান, গতবছর যখন করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছিল না। কী কী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত, সেই বিষয়েও সাধারণ মানুষ জানতেন না। কিন্তু বিগত এক বছরে সাধারণ মানুষ অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। তারা করোনা ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কেও জানেন।

কিন্তু নিয়ম মানা হচ্ছে কি? বাস্তব চিত্র কিন্তু সেকথা বলছে না।

আরও পড়ুন: ভোটের মধ্যে দায়িত্ব ছাড়লেন অরোরা, নয়া মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest