শেষ পর্যন্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে চিনা সেনাবাহিনীর আগ্রাসনের কথা সরকারি ভাবে স্বীকার করল দিল্লি। জুন মাসের কাজের খতিয়ান দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘গত ৫ মে থেকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর, বিশেষ করে গালওয়ান উপত্যকা অঞ্চলে চিনা আগ্রাসনের মাত্রা বেড়ে চলেছে। গত ১৭-১৮ মে চিনারা কুগরাং নালা, গোগরা এবং প্যাংগং ৎসো সরোবরের উত্তর তীরবর্তী অঞ্চলে ঢুকে পড়েছে।’
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ঘটনার জেরে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে পরিস্থিতির মীমাংসা করতে ৫ মে সশস্ত্র আদানপ্রদান ঘটেছে। ৬ মে দুই পক্ষের মধ্যে কর্পস কম্যান্ডার স্তরে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছে। যদিও তার পরে গত ১৫ জুন দুই বাহিনীর মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়, যার জেরে দুই পক্ষেই বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে।’
আরও পড়ুন : আমদাবাদের কোভিড হাসপাতালে আগুন, মৃত্যু অন্তত ৮ জনের
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সংঘর্ষের পরে সেনা প্রত্যাহারের উদ্দেশে ২২ জুন দ্বিতীয় কর্পস কম্যান্ডার ফ্ল্যাগ মিটিং হয়। যদিও সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালু রয়েছে, আপাতত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা ঘিরে এই অচলাবস্থা বেশ কিছু কাল বহাল থাকবে।’
‘পূর্ব লাদাখে চিনের একতরফা আগ্রাসনের জেরে অত্যন্ত সংবেদনশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং তার উপরে কড়া নজরদারি ও প্রয়োজনে দ্রুত পদক্ষেপ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’চিনা লাল ফৌজের দখলদারি নিয়ে বিরোধীরা সোচ্চার হলেও এবং তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও এড়িয়ে গিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। এবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতি সেই কৌতূহলের নিরসন ঘটাল।
অনেকে বলছে ভারতীয় মিডিয়া চিনের সুবিধা করে দিচ্ছে। চীন ২০ কিলোমিটার ঢুকে এসে তিন কিলোমিটার পিছিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় মিডিয়া সেই তিন কিলোমিটার পিছিয়ে যাওয়াকেই মোদী সরকারের বীরত্ব বলে দেখতে চাইছে। ফলে একটু একটু করে ভারতে নিজেদের দখলদারি বাড়াতে চীনের অসুবিধা হচ্ছে না। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন আমাদের সেনারা কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেয়নি। কেউ ঢুকে আস্তে পারেনি। এদিনের সরকারি বিবৃতি সামনে আসার পর বিরোধীরা অনেকে বলছেন প্রধানমন্ত্রী বুঝে নিয়েছেন এদেশের জনগনের সামনে যেকোনো অসত্য বলতে কোনো অসুবিধা নেই। কেবল হিন্দুত্বের মোড়োকে জাতীয়তাবাদ নিয়ে তারস্বরে স্লোগান দিলেই চলবে।
আরও পড়ুন : সবথেকে কার্যকর ও ‘খাঁটি’ হ্যান্ড স্যানিটাইজার কী করে চিনবেন? জেনে নিন উপায়