প্রায় তিন মাস ধরে করোনাভাইরাস এবং করোনাভাইরাস পরবর্তী জটিলতার কারণে অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু কাজে এল না সেই লড়াই। সোমবার প্রয়াত হলেন অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের। অসমের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘দীর্ঘদিন রোগে ভোগার পর বিকেল ৫ টা ৩৪ মিনিটে মৃত্যু হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের।’
আগামী বছর বিধানসভা ভোটের জন্য অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) নেতা এবং কংগ্রেস কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক চালাচ্ছিলেন ৮৬ বছরের কংগ্রেস নেতা। তারইমধ্যে গত ২৫ অগস্ট তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। পরে তাঁর রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও প্রায় গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। ২৫ অক্টোবর তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছিল।
কিন্তু করোনাভাইরাস পরবর্তী জটিলতার কারণে ২ নভেম্বর তাঁকে আবারও হাসপাতালে ভরতি করতে হয়েছিল। তখন থেকেই তাঁকেই নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে ফুসফুসে অক্সিজেন পাঠানো হলে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস পুরোপুরি যন্ত্রনির্ভর হয় না। শনিবার বিকেলের দিকে তাঁকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে (পুরোপুরি যন্ত্রনির্ভর) দেওয়া হয়। তাঁর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে গিয়েছিস। রবিবার তাঁর ডায়ালিসিস করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তারপর সোমবার বিকেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: এবার ব্যাংকের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন টাটা, বিড়লা, আম্বানি
তাঁর প্রয়াণে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী-সহ একাধিক নেতা। একটি টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘শ্রী তরুণ গগৈ জি জনপ্রিয় নেতা এবং বর্ষীয়ান প্রশাসক ছিলেন। অসমের পাশাপাশি যাঁর কেন্দ্রে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছিল। তাঁর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত। এই শোকের মুহূর্তে তাঁর পরিবার এবং সমর্থকদের সমবেদনা জানাচ্ছি। ওম শান্তি।’
Shri Tarun Gogoi Ji was a popular leader and a veteran administrator, who had years of political experience in Assam as well as the Centre. Anguished by his passing away. My thoughts are with his family and supporters in this hour of sadness. Om Shanti. pic.twitter.com/H6F6RGYyT4
— Narendra Modi (@narendramodi) November 23, 2020
অসমে কংগ্রেসের মুখ গগৈয়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘শ্রী তরুণ গগৈ সত্যিকারের কংগ্রেস নেতা ছিলেন। অসমের সব মানুষ এবং সম্প্রদায়কে একসঙ্গে নিয়ে আসার জন্য তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমার কাছে তিনি ছিলেন অসামান্য এবং বিজ্ঞ নেতা। আমি তাঁকে ভালোবাসতাম এবং অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতাম। আমি তাঁকে মিস করব। গৌরব (গগৈ) এবং তাঁর পরিবারের প্রতি ভালোবাসা এবং সমবেদনা জানাচ্ছি।’
১৯৩৬ সালের ১ এপ্রিল জন্ম তরুণ গগৈয়ের। ১৯৭৬ সালে ইন্দিরা জমানায় অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন তিনি। লোকসভায় ৬ বারের সাংসদ তিনি। ১৯৭১-৮৫ সাল পর্যন্ত যোরহাট থেকে লড়েছিলেন তিনি। এরপর কালিয়াবর থেকে নির্বাচিত হন তিনি(১৯৯১-৯৬/১৯৯৮-২০০২)।
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘নিভার’, গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার