৬৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রাক্তন সমাজবাদী নেতা অমর সিং। গত সাত মাস ধরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। শনিবার দুপুরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর পরিবারকে মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে দেন।
২০১৩ সালে তাঁর একটি কিডনি বিকল হয়ে যায়। সেই কিডনি ট্রান্সপ্লান্টও হয়। তার পর থেকে আর সেরে উঠতে পারেননি মুলায়ম সিং ঘনিষ্ঠ এই নেতা। শনিবারই তিনি হাসপাতাল থেকে টুইট করে বালগঙ্গাধর তিলকের প্রয়ান দিবসে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি, ইদের শুভেচ্ছাও জানান তিনি। গত ২২ মার্চ হাসপাতাল থেকেই একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। ওই ভিডিয়োতে তিনি তাঁর সমর্থকদের করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী পাশে দাঁড়ানোর আবেদন করেন। ২০২০ সালের শুরুর দিকে একবার অমর সিংয়ের মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়িয়েছিল। সেবার সব জল্পনায় জল ঢেলে ছোট্ট একটি ভিডিয়োর সঙ্গে লিখেছিলেন, ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’।
আরও পড়ুন: আদালত অবমাননা আইন ‘বাক স্বাধীনতার পরিপন্থী’,বাতিলের দাবিতে মামলা
১৯৫৬ সালে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে জন্ম অমর সিংয়ের। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক হন। সামাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদবের একসময় কাছের মানুষ ছিলেন অমর সিং। দলের সাধারণ সম্পাদকও ছিল। রাজ্যসভার সাংসদও হয়েছিলেন। এক সময় দিল্লির অন্যতম শক্তিকেন্দ্র ছিলেন এই নেতা। সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে যুক্ত হলেও সব দলের নেতাদের সঙ্গে ছিল তাঁর সখ্যতা। বলিউডে বচ্চন পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। কিন্তু এক সময় সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে যোগ ছিন্ন হয় তাঁর। তারপর থেকেই কিছুটা হলেও রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা হারান এই নেতা। ২০১১ সালে টাকার বিনিময় ভোট স্ক্যামে কিছুদিন জেলেও ছিলেন তিনি। তারপর ২০১২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নিজের দল গঠন করে ভোটে লড়েন তিনি। কিন্তু সাফল্য আসেনি। এরপর আরএলডি দলে যোগ দেন তিনি।
২০১৬ সালে নির্দল প্রার্থী হিসাবে সমাজবাদী পার্টির সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভা নির্বাচনে জিতে ফের দিল্লির রাজনীতিতে ফেরেন অমর। ফের রাজ্যসভায় প্রত্যাবর্তনে মনে হচ্ছিল হয়তো আবার সক্রিয় হবেন এই সদাহাস্য নেতা। কিন্তু শরীরটা সায় দিচ্ছিল না। হালে অবশ্য অমর সিং অনেকটাই বিজেপির দিকে ঝুঁকছিলেন।
তবে চিকিৎসা শেষ করে আর দেশে ফেরা হল না ‘টাইগারের’। অমর সিংয়ের মৃত্যুতে একজন বর্ণময় চরিত্র মুছে গেল ভারতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট থেকে।
আরও পড়ুন: ভোট, মিড ডে মিল রান্না শিক্ষকদের কাজ নয়, তাঁরা শুধু পড়াবেন:কেন্দ্র