গত শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে ২০২০ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচক। তাতে দেখা যাচ্ছে, ১০৭টি দেশের মধ্যে ৯৪ তম স্থানে রয়েছে ভারত। তার অবস্থান বাংলাদেশ ও পাকিস্তানেরও পিছনে।
২০১৯ সালেও অবশ্য ক্ষুধার তীব্রতায় ভারত নজির গড়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ইউনিসেফ জানায় ভারতের অর্ধেক শিশুই অপুষ্টির শিকার। গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের অবস্থান সবচেয়ে খারাপ। এবছর ১০৭টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ৯৪ তম, পাকিস্তানের স্থান পেয়েছে ৮৮ নম্বরে আর বাংলাদেশ উঠে এসেছে ৭৫ তম স্থানে।
আরও পড়ুন : গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের বহুতলে বিধ্বংসী আগুন, মৃত এক কিশোর–সহ ২, আতঙ্কে স্থানীয়রা
শুক্রবার সন্ধেয় আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই রিপোর্ট প্রকাশ করে ইন্টারন্যাশানাল ফুড পলিশি রিসার্ট ইন্সটিটিউট। ১০০ পয়েন্টের ভিত্তিকে প্রতিটি দেশকে স্কোর দেওয়া হয়। উল্লেখ্য এখানে স্কোর বেড়ে যাওয়া মানে দেশটি ক্ষুধা নিবারণে ভালো জায়গায় নেই।পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের স্কোর ২০.৪. ভারতের স্কোর ২৭.২। ভারতের আগে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া নেপালও। অন্য দিকে আফগানিস্তান, রাওয়ান্ডার মতো দেশগুলির অবস্থা ভারতের কাছাকাছি।
রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়েছে। ক্ষুধার সূচকে আগের থেকে বিশ্বের অবস্থা ভালো। তবে ৩১টি দেশের অবস্থায় শোচনীয়। নতুন করে এই শোচনীয় তালিকায় নাম লিখিয়েছে ন’টি দেশ। রিপোর্টটি নাম করেই বলছে, ভারত নেপাল এবং পাকিস্তানের মতো দেশ গুলিতে, অপুষ্টি,দারিদ্র, অশিক্ষাই এই অবস্থার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য যতদিন না সম্পদ সঠিকভাবে বন্টন হবে, ততদিন এই সমস্যা কমবে না। আর্থিক উন্নয়ন মানে কেবল মুকেশ আম্বানির কোম্পানির জয়গান নয়। কেবল বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন ফেরি নয়। সরকার নিজের দায়িত্ব কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেল বেসরকারি কোম্পানির হাতে চাপিয়ে দিলে তাতেও উন্নতি হয় না। উন্নয়ন একটা নীতিবোধ। এই বোধের ভিত্তি যদি বিদ্বেষ, অবিশ্বাস, জাত-পাতের গন্ডি পার হতে না পারে তা হলে উন্নয়ন হবে না।
এদেশে বার বার যেটা দেখা গিয়েছে তা হল। কোনো একটি বিশেষ স্লোগানকে বড় করে যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই স্লোগানের সবথেকে অপব্যাবহার সেই দলই করে। ‘বিকাশের’ স্লোগান দিয়ে এসেছেন মোদী। সুতরাং তার জমানায় বিকাশের হাল সবথেকে বেহাল হবার কথাই ছিল।
যদিও আম্বানির বাণিজ্যিক পরাক্রমকেও সম্ভবত শাসক দল নিজের বিকাশ মনে করে। সমস্যা বেড়েছে সেখানে। একদল ‘মিডিয়াজীবি’ তৈরী করে আসল বিষয় থেকে সর্বদা জনগনের দৃষ্টি সরিয়ে রক্ষা হচ্ছে। এই মিডিয়া জীবিদের কাজ ব্যাক্তি মোদীর ফিটনেসের খবর দেশবাসীকে শোনানো। কখনো তার নাটকীয় বিনোদনমূলক ভাষণ জনগনের কাছে সেল করা। সেগুলিকে ট্রেন্ডিংয়ের ব্যবস্থা করা। দেশ নয় মোদীর ওপর ভরসা করতে শেখানো। বিশ্ব ক্ষুধা দিবসে ৭৫ রুপি মুদার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।অগণিত মানুষ যখন পরের দিন কি খাবেন ভেবে উঠতে পারছেন না, তখন অবশ্য মোদীজি সঞ্চয় করার সুপরামর্শ দিয়েছেন।…’কি বিচিত্র এই দেশ !’
আরও পড়ুন : করোনা আক্রান্ত দিলীপ ঘোষ, প্রবল জ্বর নিয়ে ভর্তি সল্টলেক আমরি হাসপাতালে