হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ডে (Hathras Gang Rape) দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা রঞ্জিত বাহাদুর শ্রীবাস্তব (Ranjeet Bahadur Srivastava)। মৃতা,নির্যাতিতাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তিনি। দাবি করলেন, মূল অভিযুক্ত সন্দীপ সিংয়ের সঙ্গে নাকি সম্পর্ক ছিল দলিত তরুণীর। তিনিই ১৪ সেপ্টেম্বর তাঁকে বাজরার খেতে ডেকেছিলেন। হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর এমন ঘটনা ঘটে। এই ধরনের মহিলাদের দেহ নাকি এভাবেই পাওয়া যায়। রঞ্জিত বাহাদুর শ্রীবাস্তবের দাবি, এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে।বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্রনারায়ণ সিংহের পর এমন মন্ত্ম করলেন যোগী সরকারের আর এক ‘রত্ন!’
বিজেপি নেতা রঞ্জিতের মতে, হাথরস কাণ্ডের অভিযুক্তরা ‘নির্দোষ’ এবং নির্যাতিতা তরুণী ‘আওয়ারা’। তাঁর দাবি, অভিযুক্তের সঙ্গে ১৯ বছরের দলিত তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি বলেছেন, ‘‘১৪ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতা অভিযুক্তকে খেতে আসার জন্য বলেছিল। কারণ তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই খবর সংবাদ মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়াতে ইতিমধ্যেই বেরিয়েছে।’’
আরও পড়ুন:অক্টোবরেই বিয়ের পিঁড়িতে ‘সিংহম’ নায়িকা কাজল আগরওয়াল, পাত্র কে?
হাথরসে অভিযুক্ত উচ্চবর্ণের চার অভিযুক্ত যুবকদের ব্যাপারে যথেষ্ট সংবেদনশীল বিজেপির ওই নেতা। অভিযুক্তদের পক্ষে তাঁর সওয়াল, ‘‘আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি ছেলেগুলো নির্দোষ।’’ সিবিআই চার্জশিট না দেওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তদের জেলে না রাখারও দাবি করেছেন তিনি। কারণ, ‘‘প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তদের জেলে রাখলে তাঁদের মানসিক নির্যাতন হবে। এর ক্ষতিপূরণ কি সরকার দেবে? তাঁদের হারানো যৌবন কে ফিরিয়ে দেবে?’’
This is the mind set of @BJP4India leader Ranjeet Shrivastav from Barabanki… @NCWIndia @sharmarekha would your kind office dare to book such mindset’s? pic.twitter.com/4cYUZsjBx9
— Netta D'Souza (@dnetta) October 6, 2020
১৪ সেপ্টেম্বর হাথরাসে দলিত তরুণীর গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে চার উচ্চবর্ণের যুবকের বিরুদ্ধে। তারপর থেকে একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে। রাতের অন্ধকারে ক্ষেতের মাঝে তরুণীর মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে। তারপর সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) হলফনামা দিয়ে উত্তরপ্রদেশের (UP) পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়নি।
মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ পুলিশ আবার দাবি করে নির্যাতিতার ভাইয়ের নামে থাকা সিমকার্ড যে ফোনে ছিল, সেই ফোন এবং মূল অভিযুক্ত সন্দীপ সিংয়ের ফোনের মধ্যে নাকি শতাধিকবার কল করা হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার ১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে কথোপকথন হয়েছে বলেও দাবি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এই দাবির পরই আবার বিজেপি নেতা অমিত মালব্য নির্যাতিতার ভাইকে জিজ্ঞাসবাদের দাবি জানান।
রঞ্জিতের এই মন্তব্য কানে গিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রধান রেখা শর্মার। তিনি বলেছেন, ‘‘উনি কোনও দলেরই নেতা হওয়ার যোগ্য নন। নিজের আদিম ও অসুস্থ মানসিকতা দেখিয়ে দিচ্ছেন তিনি। আমি শীঘ্রই তাকে নোটিস পাঠাবো।’’এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার নারীবিদ্বেষী ও সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেছেন বারাবঁকীর ওই বিজেপি নেতা। সীতাপুর, লখনউ সহ বেশ উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলার তাঁর বিরুদ্ধে মোট ৪৪টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: আলওয়ার গণধর্ষণ-কাণ্ডে চার অভিযুক্তের আমৃত্যু কারাবাস