না ফেরার দেশে বিশিষ্ট আলেম মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খান। বুধবার রাতে দিল্লির অ্যাপোলো হাসাপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর।
মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খান ব্যক্তি জীবনে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক ছিলেন। তাঁর জ্যেষ্ঠ ছেলে সানিয়াসনাইন খান জানান, বক্ষব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার পর গত সপ্তাহে তাঁকে দিল্লির একটি বেসরকারি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাঁর করোনা শনাক্ত হয়।
মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খান ১৯২৫ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের আজমগড় জেলার বাধরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ফরিদুদ্দিন খান এবং মায়ের নাম জেবুন্নিসা খাতুন। ১৯২৯ সালে তার বাবা মারা যান। তিনি ১৯৩৮ সালে মাদরাসাতুল ইসলাহ নামক একটি প্রথাগত ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন এবং ১৯৪৪ সালে সেখান থেকে লেখাপড়া সমাপ্ত করেন।
আরও পড়ুন: ট্যাঙ্কারে লিক, নাসিকের হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে ২২ রোগীর ছটফটিয়ে মৃত্যু
এক টুইট বার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে জানান, ‘মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খানের আকস্মিক মৃত্যুতে গভীর শোকাহত। তিনি ধর্মতত্ত্ব ও আধ্যাত্মিকতার বিষয়ে গভীর জ্ঞানের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তিনি সমাজসেবা এবং সামাজিক ক্ষমতায়নের বিষয়েও বেশ অনুরাগী ছিলেন। তাঁর পরিবার ও অসংখ্য শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা’।
Saddened by the passing away of Maulana Wahiduddin Khan. He will be remembered for his insightful knowledge on matters of theology and spirituality. He was also passionate about community service and social empowerment. Condolences to his family and countless well-wishers. RIP.
— Narendra Modi (@narendramodi) April 22, 2021
মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খান ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ছিলেন। এ ছাড়া সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘আন্তর্জাতিক ডেমিরগাস শান্তি পুরস্কার’ পেয়েছেন। ২০০০ সালের জানুয়ারিতে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মভূষণ, মাদার তেরেসার কাছ থেকে জাতীয় নাগরিক পুরস্কার এবং রাজিব গান্ধী জাতীয় সদ্ভাবনা পুরস্কার (২০০৯) লাভ করেছেন। তাকে আবুধাবিতে সাঈদিনা ইমাম আল হাসান ইবনে আলি শান্তি পুরস্কার (২০১৫) প্রদান করা হয়। সম্প্রতি তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্ম বিভূষণ পুরস্কার লাভ করেন।
মাওলানা ওয়াহিদুদ্দিন খান পবিত্র কোরআনের উর্দু, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় অনুবাদসহ প্রায় দুই শয়ের বেশি গ্রন্থ রচনা করেন। ইসলামের আধ্যাত্মিকতা বিষয়ে তাঁর অনেক আলোচনা ইউটিউব খুবই জনপ্রিয় হয়।
আরও পড়ুন: প্রাণ কেড়ে নিল আগুন! মহারাষ্ট্রের হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত ১৩