ওয়েব ডেস্ক: পূর্ব-লাদাখের ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনার অনুপ্রবেশের ঘটনা যে ভাবে ‘খারিজ’ করেছেন নরেন্দ্র মোদী, তাতে স্তম্ভিত-হতভম্ব দেশের কূটনৈতিক ও সামরিক মহল। পাকিস্তান হলে তিনি এমন সংযত থাকতেন কি, উঠছে সে প্রশ্নও।
নরেন্দ্র মোদী এইধরণের সাবজেক্টকে ভোট ক্যাম্পেনে হাতছাড়া করতে চান না। তাঁর বিরুদ্ধে বারবার উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে ইন্ধনের অভিযোগ উঠেছে। সেই তিনি চিনের মতো প্রতিপক্ষের সঙ্গে চলতি সঙ্ঘাতের মধ্যেই কী করে এমন মন্তব্য করে বসলেন, তা নিয়ে বিস্মিত রাজনৈতিক মহলও।
আরও পড়ুন : আটক জওয়ানদের ছেড়েছে চিন, জম্মু-কাশ্মীরের হিরানগরে পাকিস্তানি ড্রোন গুলি করে নামাল বিএসএফ
অস্বস্তি তাঁর সরকারের অন্দরেও। শুরু হয়েছে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা। শনিবার খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতর তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বিবৃতি জারি করেছে।সর্বদল বৈঠকে শুক্রবারের ওই মন্তব্যে সরাসরি ‘স্থান’ এবং ‘পাত্রের’ নাম করেননি মোদী। বলেছিলেন, ‘‘ওখানে কেউ আমাদের সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে আসেনি। ওখানে আমাদের এলাকায় কেউ ঢুকেও বসে নেই। আমাদের কোনও পোস্ট (সেনা চৌকি) অন্য কারও দখলেও নেই।’’
এর পরই শুরু হয়ে যায় শোরগোল। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলএসি) পেরিয়ে এসে চিনের এই আগ্রাসী কাণ্ড নিয়ে যখন দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়, তখন দেশের খোদ প্রধানমন্ত্রী কী করে এমন মন্তব্য করে বসলেন, যা কার্যত শত্রুপক্ষের হাতেই অস্ত্র তুলে দিল!
রাজনীতিবিদরা কেউই জোর গলায় প্রশ্ন করে ‘দেশদ্রোহী’ ট্যাগ ঝোলাতে চাইছে না। কিন্তু বুঝছে সবাই। সোনিয়া যে প্রশ্ন তুলেছিলেন তার উত্তর দিতে গিয়েই ঢোক গিলতে হয়েছে মোদিকে। বাংলায় নির্বাচন সামনের বছর। ফলে সেই বালাকোট-পুলওয়ামার ভুল মমতা করেননি। তিনি দৃঢ় ভাবে সরকারের পাশে থাকার কথা বলেছেন।
কিন্তু তাতে কি! শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে গিয়ে মাছ যে গোটাটাই বেআব্রু হয়ে পড়ছে! লোকজন সোশ্যাল সাইটে লিখছে চীন যদি ঢুকে না আসে তাহলে আমাদের জওয়ানরা শহীদ হল কেন? চিন ঢুকে আসেনি একথা বলার অর্থ হল গালওয়ান চিনের। সেখানে আমাদের সেনারা তাহলে কি করছিলো? ভক্ত ছাড়া সব সুস্থ মানুষের মনে এই প্রশ্নের উদয় হয়েছে।
উত্তর চাইতে হলে রাহুল গান্ধীর কাছে যান। এটাই নয়া সিস্টেম। রাহুল জবাব না দিতে পারলে প্রশ্ন করুন নেহরুকে। খামোকা শাসককে প্রশ্ন করে চক্ষশূল হওয়ার থেকে সেফ সাইডে থাকা ভাল।
আরও পড়ুন : টানা ১৪ দিন বাড়ল পেট্রোল, ডিজেলের দাম, বাড়ছে চিন্তা, নেই প্রতিবাদ