ভারতে কমছে মুক্ত চিন্তার পরিসর, খর্ব হচ্ছে রাজনৈতিক স্বাধীনতা! দাবি মার্কিন রিপোর্টে

ফ্রিডম হাউজের প্রতিবেদনে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক স্বাধীনতার নিরখে ভারতের অবস্থান ক্রমেই তলানিতে নামছে।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

জেনেইউ-এ ছাত্র আন্দোলন, সিএএ বিরোধী আন্দোলন হোক বা সাম্প্রতিক কালে দিল্লির কৃষক আন্দোলন, প্রতিক্ষেত্রেই বিরুদ্ধ কণ্ঠস্বর দমনের চেষ্টার অভিযোগ উঠছে কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে। চাপানো হয়েছে দেশদ্রোহিতার মামলাও। এমতাবস্থায় এবার বিশ্বের রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতা বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে ভারতে ক্রমেই কমছে মুক্ত চিন্তার পরিসর। সঙ্কুচিত হচ্ছে রাজনৈতিক স্বাধীনতা, কমছে গণতান্ত্রিক পরিসর। ‘ফ্রিডম হাউজ-এর রিপোর্টে এমনই বলা হয়েছে ভারতের অবস্থানের গণতন্ত্রের মাপকাঠিতে ।

ফ্রিডম হাউজ কোনও অনামী সংস্থা নয়। বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতার মানদণ্ড হিসাবে তাদের বার্ষিক রিপোর্ট বহু ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। বহু পুরনো মার্কিন সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অধিকার ও স্বাধীনতার বিষয়ে গবেষণা চালায়। এই বিষয়ে প্রতি বছর ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড’ নামের রিপোর্ট প্রকাশ করে সংস্থা। প্রথমবার এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয় ১৯৭৩ সালে। জীবনযাত্রার মান, রাজনৈতিক পরিবেশ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, আইন প্রণয়ন, নির্বাচনের পরিবেশ ইত্যাদি বহু মাপকাঠির মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে নম্বর দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী কোনও দেশের স্বাধীনতার মানকে ‘স্বাধীন’, ‘আংশিক স্বাধীন’ ও ‘পরাধীন’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

২০২০ সাল পর্যন্ত তালিকায় ‘স্বাধীন’ দেশ হিসেবেই চিহ্নিত ছিল ভারত।  যদিও এই সময়েও স্বাধীনতার মান-এর স্কোর ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হয়েছে। ২০১৮ সালের স্বাধীনতার মান ছিল ১০০-র মধ্যে ৭৭। ২০২০-তে সেটা কমে দাঁড়ায় ৭১। আর চলতি বছরেও অব্যাহত সেই ধারা। বর্তমানে ভারতের স্কোর ১০০-র মধ্যে ৬৭ । ২০২১ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে গণতন্ত্রিক অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিরিখে ভারতকে ‘আংশিক স্বাধীন’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: সরকারের বিরোধিতা করার অর্থ দেশদ্রোহিতা নয়, ফারুক আবদুল্লা মামলায় ‘সুপ্রিম’ রায়

বলা হয়েছে যে এক সময়ে গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল ভারতের। কিন্তু বর্তমানে আর সেই পরিস্থিতি নেই। রিপোর্টে পর্যবেক্ষণ, সামনের সারির স্বাধীন দেশের তালিকা থেকে ভারতের এই অধঃপতন বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের মানকে আরও নিচু করে তুলবে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘২০১৪ সাল থেকে মানবাধিকার সংগঠনগুলির উপর চাপ সৃষ্টি, শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিকদের হেনস্থা ও ভয় দেখানো এবং সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই কারণেই ভারতের রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও সামাজিক স্বাধীনতা ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।’ এসেছে দিল্লিতে সিএএ বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়েরের প্রসঙ্গও।

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে স্বাধীনতার অবনমনের এই রিপোর্ট সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসে নয়াদিল্লি। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তরফ থেকে তড়িঘড়ি এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে দোষ চাপানোর চেষ্টা করা হয় রাজ্যগুলির ঘাড়ে। বলা হয়, ‘ফ্রিডম হাউসের রিপোর্ট পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর’। মোদী সরকারের যুক্তি, কেন্দ্রে একটি দলের সরকার থাকলেও দেশের অনেক অঙ্গরাজ্যেই অন্য দল বা জোট সরকার চালাচ্ছে। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার সংশ্লিষ্ট রাজ্যের। ফলে এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ভাবে একটি দল বা সরকারকে দোষারোপ করা অনুচিত।

আরও পড়ুন: ১০ থেকে ৩০ টাকা, একধাক্কায় দেশের সর্বত্র প্ল্যাটফর্ম টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিল রেল, বাড়ল প্যাসেঞ্জার ট্রেনের ভাড়াও

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest