হল না আস্থাভোট, শুক্রবার পর্যন্ত মুলতুবি কর্নাটক বিধানসভা, প্রতিবাদে অবস্থানে বিজেপি বিধায়করা

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#বেঙ্গালুরু: মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী বৃহস্পতিবার আস্থাভোটের প্রস্তাব রাজ্য বিধানসভায় পেশ করলেও এ দিন এ নিয়ে কোনো ভোটাভুটি হল না। স্পিকার কেআর রমেশ কুমার শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত বিধানসভা মুলতুবি করে দিয়েছেন।

কুমারস্বামী আস্থাভোটের প্রস্তাব পেশ করে বলেন, তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা চান। বিধানসভায় বিতর্কের শুরুতেই বিরোধী দলনেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেন, ‘‘আশা করি, এক দিনেই আস্থাভোট প্রক্রিয়া শেষ হবে।’’ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত বিজেপির সেই আশা পূর্ণ হল না এ দিন। পাল্টা বলতে গিয়ে ইয়েদুরাপ্পাকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, বিরোধী দলনেতার খুব তাড়াহুড়ো রয়েছে।’

এ দিন বিধানসভায় বিতর্ক শুরু হলেও, দিনের বেশির ভাগ সময়ই সরকার পক্ষ ব্যস্ত ছিল কংগ্রেস বিধায়ক শ্রীমন্ত পাতিলকে অপহরণের অভিযোগ নিয়ে। কংগ্রেসের অন্য বিধায়কদের সঙ্গেই বেঙ্গালুরুতে ছিলেন শ্রীমন্ত। তাঁকে বুধবার মুম্বইয়ে দেখা যায়। কর্না‌টকের মন্ত্রী ডি কে শিবকুমার অভিযোগ করেন, ‘‘বিজেপি শ্রীমন্তকে অপহরণ করেছে।’’ পরে জানা যায়, শ্রীমন্ত পাতিল বুকে ব্যথা নিয়ে মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

বিতর্ক সরগরম হয়ে ওঠে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের নিয়েও। তাঁরা দলীয় হুইপ মানতে বাধ্য নন, তা বুধবারই জানিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, এ দিন সকালেই স্পিকার কেআর রমেশ কুমারের দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী ও কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সিদ্দারামাইয়া। তাঁদের দাবি, ‘হুইপ জারি করা সাংবিধানিক অধিকার’। শীর্ষ আদালতের রায় ও সাংবিধানিক অধিকার এই দুইয়ের ‘দ্বন্দ্ব’-এর কথা স্পিকারকেও জানান তাঁরা। সেই বিতর্কও বিধানসভার অধিবেশনে উঠে আসে বার বার।

তর্ক-বিতর্ক, হই হট্টগোল— এক সময় পরিস্থিতি এমন হয় যে, এ দিন অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার কেআর রমেশ কুমার। এর পর, কংগ্রেস ও জেডিএস আস্থাভোট নিয়ে টালবাহানা করছে বলে রাজ্যপাল বাজুভাই বালার দ্বারস্থ হয় বিজেপির প্রতিনিধিদল। এ দিনই আস্থাভোট শেষ করার জন্য স্পিকার কেআর রমেশ কুমারকে জানান রাজ্যপাল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি। এর প্রতিবাদে বিধানসভাতেই রাত কাটাবেন বিজেপি বিধায়করা।

গত দু’ সপ্তাহ ধরে কর্নাটকের নাটক চলছে। শুরুটা হয়েছিল কংগ্রেসের দশ এবং জেডিএসের তিন জন বিধায়কের পদত্যাগকে ঘিরে। তখন থেকেই সরকার ভেঙে যাওয়ার জল্পনা শুরু হয়। বিদ্রোহী এই বিধায়কদের রক্ষাকর্তা হিসেবে চলে আসে বিজেপি। তাঁদের নিরাপদে মুম্বইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর বিদ্রোহীদের সংখ্যা আরও বাড়ে। বর্তমানে বিদ্রোহী বিধায়কের সংখ্যা ১৬। এর সঙ্গে দু’জন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন, যাঁরা বিধায়কপদ থেকে পদত্যাগ করেননি, কিন্তু কুমারস্বামী মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

এ দিকে বিদ্রোহীদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি কর্নাটক বিধানসভার স্পিকার রমেশ কুমার। ইচ্ছে করেই তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন না, সেই অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিদ্রোহীরা। যদিও এই মামলায় স্পিকারের পক্ষেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাদের সাফ বক্তব্য, পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে কি না, সেটা একমাত্র স্পিকারই ঠিক করবেন, আদালত তাদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবে না। যদিও পাশাপাশি বিদ্রোহীদের পক্ষেও রায় দিয়ে আদালত বলে আস্থাভোটে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁদের ওপরে কোনো চাপ সৃষ্টি করা যাবে না।

বিক্ষুব্ধ ১৮ বিধায়কের ইস্তফাপত্র গৃহীত হলে বা তাঁরা আস্থাভোটে অংশগ্রহণ না করলে, জোট সরকারের বিধায়ক সংখ্যা ১১৮ থেকে কমে হবে ১০০। অন্য দিকে,  বিজেপিকে সমর্থনকারী বিধায়কের সংখ্যা হবে ১০৭। ম্যাজিক ফিগার ১০৫ হওয়ায় সরকার গড়ার জন্য বিজেপির পাল্লাই ভারী হবে।

 

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest