#বেঙ্গালুরু: কর্নাটকের নাটকের সমাপ্তি ঘটতে চলেছে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে কর্নাটকের ব্যাটন এইচডি কুমারস্বামীর হাতে থাকবে না কি বিএস ইয়েদ্দিয়ুরাপ্পার হাতে চলে যাবে। তবে এরই মধ্যে আস্থাভোটের আগে জোট সরকারের জন্য কিছুটা স্বস্তির বার্তা দিয়ে এক বিদ্রোহী বিধায়ক বলেছেন তিনি পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।
গত দু’ সপ্তাহ ধরে কর্নাটকের নাটক চলছে। শুরুটা হয়েছিল কংগ্রেসের দশ এবং জেডিএসের তিন জন বিধায়কের পদত্যাগকে ঘিরে। তখন থেকেই সরকার ভেঙে যাওয়ার জল্পনা শুরু হয়। বিদ্রোহী এই বিধায়কদের রক্ষাকর্তা হিসেবে চলে আসে বিজেপি। তাঁদের নিরাপদে মুম্বইয়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর বিদ্রোহীদের সংখ্যা আরও বাড়ে। বর্তমানে বিদ্রোহী বিধায়কের সংখ্যা ১৬। এর সঙ্গে দু’জন নির্দল বিধায়ক রয়েছেন, যাঁরা বিধায়কপদ থেকে পদত্যাগ করেননি, কিন্তু কুমারস্বামী মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
এ দিকে বিদ্রোহীদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি কর্নাটক বিধানসভার স্পিকার রমেশ কুমার। ইচ্ছে করেই তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন না, সেই অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিদ্রোহীরা। যদিও এই মামলায় স্পিকারের পক্ষেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাদের সাফ বক্তব্য, পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে কি না, সেটা একমাত্র স্পিকারই ঠিক করবেন, আদালত তাদের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেবে না। যদিও পাশাপাশি বিদ্রোহীদের পক্ষেও রায় দিয়ে আদালত বলে আস্থাভোটে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁদের ওপরে কোনো চাপ সৃষ্টি করা যাবে না।
যদিও শেষ মুহূর্তে কংগ্রেস শিবিরে কিছুটা স্বস্তির বার্তা দিয়ে দলে ফিরে এসেছেন এক বিধায়ক রামলিঙ্গ রেড্ডি। আস্থাভোটে কংগ্রেসের পক্ষেই তিনি ভোটে দেবেন বলে জানিয়েছেন রেড্ডি। তবে বিদ্রোহীদের মধ্যে একজনের ফিরে আসা কংগ্রেস-জেডিএসের পক্ষে খুব একটা ভালো খবর নয়
জেডিএস এর ৩৭ বিধায়কের ওপরে জারি হয়েছে দলের হুইপ। এদের মধ্যে রয়েছেন বিদ্রোহী বিধায়ক নারায়ণ গৌড়া, গোপালাইয়া ও এস বিশ্বনাথ। বৃহস্পতিবার এদের বিধানসভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।ইতিমধ্যেই কুমারস্বামী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, দলের কোনও বিধায়ক আস্থা ভোটে উপস্থিত না থাকলে বা দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিক্ষুব্ধ বিধায়করা যে দলীয় হুইপ মানতে বাধ্য নন, তা বুধবার জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই রায়ে কর্নাটকের রাজনৈতিক চালচিত্র পুরোপুরি বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা। তা আঁচ করেই স্পিকার কেআর রমেশ কুমারের দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী ও কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সিদ্দারামাইয়া। তাঁদের দাবি, ‘হুইপ জারি করা সাংবিধানিক অধিকার’। শীর্ষ আদালতের রায় ও সাংবিধানিক অধিকার এই ‘দ্বন্দ্ব’-এর কথা স্পিকারকেও জানিয়েছেন তাঁরা।
যদি বিদ্রোহীরা বিধানসভায় উপস্থিত না থাকেন, তা হলে কর্নাটকের ম্যাজিক ফিগার হবে ১০৫। এই মুহূর্তে কংগ্রেস এবং জেডিএসের বিধায়ক সংখ্যা ১০১ এবং দুই নির্দলের সমর্থন নিয়ে বিজেপির পক্ষে সংখ্যা ১০৭। ফলে আস্থাভোটে পাল্লা যে ইয়েদ্দিয়ুরাপ্পার দিকেই ভারী তা বলাই বাহুল্য।