মিলছে না মৃতের সংখ্যা, ২৪ ঘন্টা জ্বলন্ত চিতার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শ্মশান ঢাকল যোগীরাজ্য

এই ঘটনার পরেই যোগী সরকারের নিন্দা করে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়ড়া।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ভয়াবহতা মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে । সংবাদ মাধ্যমের পাতায় ছবি দেখে কেঁপে উঠছে বুক । দ্বিতীয় ঢেউয়ে আরও অনেক বেশি শক্তিশালী করোনা, আরও অনেক বেশি মারাত্মক । বিগত সব রেকর্ড ভেঙে এখন প্রত্যেকদিন দেশে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন ২ লাখেরও বেশি মানুষ । হাসপাতালে বেড নেই, চিকিৎসক নেই, অক্সিজেনের অভাব, ভেন্টিলেটরের অভাব…বিনা চিকিৎসায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে । চারিদিকে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি ।

দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতোই উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউতেও একই চিত্র দেখা গেল। এখানেও করোনায় মৃত্যর জন্য শ্মশান ঘাট ও কবরস্থানগুলিতে অন্যান্য সাধারণ দিনের তুলনায় এই ক’‌দিনে মৃতদেহের রাশ বেড়েছে। একদিকে যেখানে বৈকুন্ঠ ধাম ও গুলালঘাটের কর্মীরা শেষকৃত্যের তালিকা শেষ করার জন্য দিনরাত এক করে দিয়ে খাটছেন, সেখানে আলমবাগ শ্মশানে কোভিড মৃতদেহ শেষকৃত্য করার অনুমতি নেই।

এর মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ে একটি ভয়াবহ ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে । বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল, করোনায় মৃতের সংখ্যা চেপে দেওয়া হচ্ছে সরকারি রিপোর্টে । রিপোর্টে যা দেখানো হচ্ছে, প্রকৃত সংখ্যাটা তার তুলনায় অনেকটা বেশি । লখনউয়ের একাধিক শ্মশানে দেখা যাচ্ছে ভয়ঙ্কর চিত্র । ২৪ ঘণ্টাই শবদেহ দাহ হচ্ছে সেখানে । গত কয়েকদিনে শ্মশানের আগুন নিভতে দেখা যায়নি ।

আরও পড়ুন: ফের সুপ্রিম কোর্টে রাফাল বিতর্ক, শুনানি ২ সপ্তাহ পর

শ্মশানের একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন । এ বার নীল মেটাল শিট দিয়ে ঘিরে ফেলা হল গোটা শ্মশান চত্বরটাই । যাতে ভিতরের দৃশ্য কোনও ভাবে বাইরে থেকে দেখা না যায় । শুধু তাই নয়, শ্মশানের বাইরে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি নোটিশ । যেখানে লেখা আছে, অনুমতি ছাড়া শ্মশান চত্বরে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না । কারণ এটি করোনা আক্রান্ত এলাকা ।

এই ঘটনার পরেই যোগী সরকারের নিন্দা করে সরব হয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢ়ড়া। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে নিন্দনীয় ও সত্য গোপনের চেষ্টা বলে ব্যখ্যা করেছেন তিনি । একটি ট্যুইটে প্রিয়াঙ্কা লিখেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে একটি অনুরোধ রইল, এই পরিস্থিতিকে গোপন করতে সময়, সম্পদ এবং শক্তি ব্যয় করা বৃথা। মহামারী রোধ করতে, জীবন বাঁচাতে এবং সংক্রমণের রুখতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’’

গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তরপ্রদেশে ২০,৫১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও করোনায় আক্রান্ত । গোটা রাজ্যে নাইট কার্ফু জারি করা হয়েছে । শুধুমাত্র লখনউ শহরেই বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩১ হাজার ।

শহরের কবরস্থান এবং সমাধি স্থানেও মৃতদেহের সংখ্যা বেড়েছে। মৌলানা খালিদ রসিদ ফরাঙ্গী মাহালি, ইদগার ইমাম বলেছেন, তিনি এত কবর কখনও এক সঙ্গে দেখেননি। তিনি লোকেদের বাড়ির ভিতরে থাকতে এবং কোভিড -১৯ নির্দেশকে কঠোরভাবে অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে আইসবাগ কবরস্থানে গত দশদিনে ২০০ টির বেশি দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছে।

বেলাগাম করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে এ বার লকডাউনের পথে হাটল উত্তর প্রদেশ সরকার। আপাতত সপ্তাহ শেষে কেবল রবিবারই লকডাউন জারি থাকবে গোটা রাজ্যে।  তবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে কঠোর হয়েছে সরকার। মাস্ক না পরে ধরা পরলে প্রথমদিন ১ হাজার টাকা ও দ্বিতীয়বার ধরা পরলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। এছাড়াও ১০ জেলায় রাত আটটা সকাল সাতটা অবধি লখনউ, প্রয়াগরাজ, বারাণসী, কানপুর, গৌতমবুদ্ধ নগর, গাজিয়াবাদ, মিরাট, গোরক্ষপুরে করোনা কার্ফু জারি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: লকডাউনের সিঁদুরে মেঘ! পরিযায়ীদের ভিড় উপচে পড়ছে ট্রেনে-বাসে

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest