বুধবার সকালে যে বুলেটিন প্রকাশ করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক, তাতে দেখা গিয়েছিল মঙ্গলবার দেশে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা ত্যিন লক্ষ ছুঁইছুঁই। বৃহস্পতিবার সকালের বুলেটিন সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৩৫ জন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৩০ হাজার ৯৬৫ জন। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে দু’হাজার ১০৪ জনের।
এই প্রথম পৃথিবীর কোনও দেশে ২৪ ঘণ্টার সংক্রমণ তিন লক্ষের গণ্ডি টপকাল। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে আমেরিকাতেও এই অবস্থা তৈরি হয়নি দ্বিতীয় ধাক্কায় ভারতে হয়েছে। এদিনের বুলেটিনেও দেখা যাচ্ছে মহারাষ্ট্রের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। একদিনে ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন মারাঠা মুলুকে। তা ছাড়া উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, কেরল, দিল্লি—এই পাঁচ রাজ্যের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বেলাগাম সংক্রমণের মধ্যেই একাধিক রাজ্যে অক্সিজেনের সংকট দেখা দিয়েছে। যদিও গতকাল রাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন বলেছেন, সংক্রমণের শীর্ষে থাকা পাঁচ রাজ্যকে অক্সিজেনের কোটা বাড়ানো হবে।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল সীতারাম ইয়েচুরির বড় ছেলের
এর মধ্যেই দেখা যাচ্ছে কোভিড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার পরেও অনেকে সংক্রামিত হচ্ছেন। মঙ্গলবার কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়ে নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই যখন ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তখন তথ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিল, কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ড করোনা প্রতিরোধে কাজ করছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী ভ্যাকসিন নেওয়া ১০ হাজার জনের মধ্যে তিন-চার জন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক কমিটির সদস্য ডাক্তার ভিকে পাল সাংবাদিক বৈঠক করে এই পরিসংখ্যান জানিয়েছেন।
কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে ভারত এ পর্যন্ত কোভ্যাক্সিনের ১.১ কোটি ডোজ এবং কোভিশিল্ডের ১১.৬ কোটি ডোজ প্রয়োগ করেছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর অধিকর্তা ডাক্তার বলরাম ভার্গব বলেছেন, “এই ভ্যাকসিনগুলি মারাত্মক সংক্রমণ এবং মৃত্যু হ্রাস করে। এগুলি সংক্রমণের সম্ভাবনাও কমিয়ে দেয়। ”
ভারত বায়োটেক এবং অ্যাস্ট্রাজেনিকার তরফে তাঁদের টিকা ‘১০০ শতাংশ সফল’ বলে দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে দু’টি টিকা নেওয়ার পরেও প্রতি ১০ হাজারে কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে ০.০৪ শতাংশ এবং কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে প্রায় ০.০৩ শতাংশ মানুষ কোভিড সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। যদিও এই নগণ্য সংখ্যায় আতঙ্কের কোনও কারণ নেই বলেই দাবি কেন্দ্রের। কারণ, করোনা হলেও টিকা কমাবে মৃত্যুর সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন: 6th Phase: মঙ্গলকোটে লাঠালাঠি, TMC বুথ এজেন্টকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ BJPর বিরুদ্ধে