Site icon The News Nest

টিকা উৎসবের মধ্যে ভ্যাকসিনের আকাল, বেহাল দশার ছবি দেশজুড়ে

covid 10 20210410 402 602

দেশজুড়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভে ব্যতিব্যস্ত একাধিক রাজ্য। ইতিমধ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা পজিটিভ ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৭৯ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯০ হাজার ৫৮৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৮৩৯ জনের। একদিকে ঊর্ধগামী সংকমণের পারদ, অন্যদিকে ভ্যাকসিনের আকাল। আক্রান্তদের পরিষেবা দিতে কেন্দ্রের মুখ চেয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়ের মতো একাধিক রাজ্য।

এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সারা দেশে চারদিনব্যাপী ‘টিকা উৎসব’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেদিন ভার্চুয়াল বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা যোগ দেন। আজ, রবিবার থেকে এই বিশেষ কর্মসূচি শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় আপৎকালীন সংকট কাটছে না। চারিদিকে টিকাদানের উৎসব। অথচ রাজ্যগুলির ভাঁড়ার টিকাশূন্য!

যেমন, পঞ্জাব। মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দ্র সিং ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন, তাঁদের হাত মোটে দিনপাঁচেক চালানোর মতো ভ্যাকসিন অবশিষ্ট আছে। এরপর কী হবে, কেউ জানে না। রাজস্থানের ছবি আরও ভয়াবহ। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীও টিকার স্বল্পতার সমস্যা তুলে ধরেছে। টিকার মেয়াদ মোট দু’দিন।

তুলনায় কিছুটা স্বস্তিতে দিল্লি। কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, কোনওমতে সাত থেকে দশদিনের ডোজ তাঁরা চালিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু এটা তো কোনও স্থায়ী সমাধান নয়। কিন্তু টিকার অভাবে যখন অধিকাংশ বেসরকারি টিকাকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেখানে ‘টিকা উৎসব’ হবে কী দিয়ে, সেই প্রশ্ন আজ তুলেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাই সমস্যার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছেন আম আদমি পার্টির নেতা রাঘব চাড্ডা। সকলের হয়ে সওয়াল করে তিনি বলেন, ‘একাধিক রাজ্যে ইতিমধ্যে ভ্যাকসিনের আকাল দেখা দিয়েছে। বাকি রাজ্যগুলিতে আগামী কিছুদিনের মধ্যে সংকট দেখা দেবে৷ দয়া করে ব্যবস্থা নিন।’

আরও পড়ুন: শুধু কৃষি আইনে রক্ষা নেই, দেড়গুণ সারের দাম বাড়িয়ে কোপ কেন্দ্রের

যদিও আজ সকালে মোদী দেশবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি সকলকে টিকাদান কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি বলেন, ‘একজনের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ এলে চারপাশের লোকেরা মিলে ‘মাইক্রো কন্টেইনমেন্ট জোন’ তৈরি করুন। পরিবার কিংবা পাড়ার লোকদের এজন্য এগিয়ে আসতে হবে।’

প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের প্রতিষেধক নীতি নিয়েই। গোড়া থেকেই প্রতিষেধক বণ্টনের প্রশ্নে কেন্দ্রীভূত নীতি নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যগুলিকে খোলা বাজার থেকে প্রতিষেধক কিনতে দেওয়া তো দূর, কোনও রাজ্যকে কত প্রতিষেধক দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তও গোড়া থেকেই নিয়েছে কেন্দ্র। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজ্যের দাবিকে উপেক্ষা করার পাশাপাশি অভিযোগ উঠেছে স্বজনপোষণেরও। বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিকে বেশি প্রতিষেধক দেওয়ার অভিযোগ গোড়া থেকেই উঠেছে। মহারাষ্ট্রের চেয়ে গুজরাতের জনসংখ্যা অর্ধেক হওয়া সত্ত্বেও দুই রাজ্যকেই সমসংখ্যক প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে! একই অভিযোগ কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ়েরও।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, এই মুহূর্তে অন্তত ৪০ লক্ষের বেশি প্রতিষেধক বিভিন্ন রাজ্যকে পাঠানোর পর্যায়ে রয়েছে। যা দিয়ে আগামী ৭-১০ দিনের টিকাকরণ সেরে ফেলা যাবে। কিন্তু তাতে সামগ্রিক চিত্র যে বিশেষ বদলাবে না, তা মানছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের বাজারে তৃতীয় বা চতুর্থ কোনও প্রতিষেধক না-আসা পর্যন্ত বর্তমান ঘাটতি মেটা কার্যত অসম্ভব।

আরও পড়ুন: Mathabhanga Firing: সাংবাদিক বৈঠক করে শীতলকুচির নিহতদের পরিবারের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা মমতার

 

 

Exit mobile version