হজযাত্রীদের দাখিল করতে হবে আয়কর রিটার্ন, কেন্দ্রের নয়া ফরমানে মাথায় হাত সাধারণ মানুষের

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

স্বাধীন ভারতে এই প্রথমবার সমস্যায় পড়লেন দেশের হজযাত্রীরা। তাদের চলতি বছরে হজ যাত্রার আগে দাখিল করতে হবে আয়কর রিটার্ন। অন্তত নতুন আয়কর আইনে সংশোধনী এনে সেটাই বলছে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ দপ্তর। একাধিক চাটার একাউন্ট্যান্ট এমনকি হজ কমিটির সিইও বিগত ছয় মাসে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রককে। কিন্তু এই বিষয়ে এখনও বিভ্রান্তি বজায় রয়েছে।

২০১৯ সালে অর্থ আইন সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে বলা হয় যারা বিদেশ যাত্রার জন্য ২০১৯-২০ সালে দুই লাখের উপর খরচ করবেন তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। এমনকি তাদের বার্ষিক আয় যদি করযোগ্য আয়ের কম হয় তবুও তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। হজযাত্রীরা ফ্যাসাদে পড়েছেন এই সংশোধনের ফলে।

অল ইন্ডিয়া পার্সোনাল ল বোর্ডের কার্যকরী সদস্য বিশিষ্ট আইনজীবী জাফরাইব জিলানী বলেন প্রতিবছর ভারত থেকে কয়েক লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান মক্কা ও মদিনায় হজ করতে যান। তাদের হজ করতে যাওয়ার খরচ ২ লাখ টাকার অনেক বেশি হয়। সরকার সেটা জানে। ভারত থেকে যে মুসলমানরা হজ করতে যান তাদের অধিকাংশই তাদের সারা জীবনের সঞ্চয় এমনকি তাদের জমিজমা বিক্রি করেও হজের খরচ মেটান তাদের ধর্মীয় ফরমান পালনের তাগিদে। কারণ হজ হলো ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি স্তম্ভ। এখন সরকারের এই আইন অনুযায়ী এদের সবাইকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে যদিও এদের অধিকাংশেরই করযোগ্য নয়।

আরও পড়ুন: এবার নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া মধ্যপ্রদেশে, গণধর্ষণের পর গোপনাঙ্গে ঢোকানো হল রড

এই হজযাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন কৃষক শ্রমজীবী বিধবা মহিলা যারা মূলত গ্রামে থাকেন। এরা বহুকষ্টে হজের টাকা যোগাড় করে জীবনে মাত্র একবার মক্কা মদিনা হজ করতে যান। এদের ৭৫ শতাংশ মানুষ এমন যারা জীবনে আয়কর কথাটা শোনেননি। সরকারের আইন অনুযায়ী এদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এটা মুসলমানদের হয়রান করা ছাড়া আর কি বলা যায়।

জিলানী জানান, মোদি সরকার মুসলমানদের উত্ত্যক্ত করার জন্য অর্থ আইনে এই ধরনের সংশোধনী এনেছে। এই কথা এজন্য বলছি কারণ উক্ত আইনের সংশোধনীতে সরকার চীনের মানস সরোবরের তীর্থযাত্রায় এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাবে থাকা নানকানা সাহিব গুরুদোয়ায় যাওয়ার জন্য ভারতীয়দের আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যতামূলক থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয় হল পাকিস্তানের মত দেশে তীর্থ যাত্রীদের যাওয়ার জন্য কোনরকম শুল্ক বা কর চাপায়নি।

এবছর হজযাত্রার খরচ ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।আর হজযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রত্যেক হজযাত্রীকে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। বহু হজযাত্রী সমস্যায় পড়বেন। হজযাত্রীদের আয়কর না দিতে হলেও রিটার্ন তৈরি করতে কিছু টাকা খরচ হবে।

অন্যদিকে, রাজ্য হজ কমিটির চেয়ারম্যান নাদিমুল হক জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কেন্দ্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভিকে চিঠি দেওয়া হবে। চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজ্য থেকে যে সমস্ত ব্যক্তি হজ সম্পন্ন করতে যান, তাঁরা বেশিভাগই গ্রামগঞ্জ থেকে আসা সাধারণ মানুষ। কেউ জমি, কেউ বাগান আবার কেউ সারাজীবন অল্প বিস্তর টাকা জমিয়ে হজ করতে যান। তাঁরা অত্যন্ত সাধারণ মানুষ। অথচ কেন্দ্রের সরকার এই সমস্ত হজযাত্রীর আয়করের অধীনে নিয়ে আসছে। তারা কোনওভাবে আয়কর দাতার অধীনে পড়তে পারেন না।’

আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের কমিটিতে কেন কৃষি আইনের সমর্থকরাই, সরব আন্দোলনরত কৃষকরা

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest