The News Nest: আত্মনির্ভর ভারতের ডাক দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তার জমানতেই একের পর সরকারি সংস্থা যাচ্ছে বেসরকারি হাতে। বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া ১৫১টি ট্রেনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১৫টি রুটের দূরপাল্লার ট্রেন রয়েছে।
রেল জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সংস্থা ওই ট্রেন চালাতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া ডাকার কাজ শুরু করে দিতে চাইছে রেল। তবে কোন কোন সংস্থা আগ্রহী, তা তারা জানায়নি।
আরও পড়ুন : স্বাধীনতা দিবসের মধ্যেই আসছে করোনার টিকা COVAXIN,জানাল আইসিএমআর
রেল মন্ত্রকের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে রেলের ঘরে প্রায় ত্রিশ হাজার কোটি টাকা ঢুকবে। ওই উদ্যোগকে বেসরকারিকরণের অভিমুখে বড় মাপের পদক্ষেপ বলছেন রেলের কর্মী সংগঠনের নেতৃত্ব।আর কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কথায়, ‘‘সরকার গরিবের জীবনরেখা রেলকে ছিনিয়ে নিচ্ছে।’’
বঙ্গের যে ট্রেন রুটগুলি বেসরকরি হাতে যাচ্ছে
1.রাঁচী ভায়া পুরুলিয়া
2. হাওড়া-পুণে
3.হাওড়া-চেন্নাই
4.হাওড়া-পুরী
5.হাওড়া-রাঁচী
6.নিউ বঙ্গাইগাঁও-হাওড়া
7.হাওড়া-আনন্দবিহার(দিল্লি)
8.হাওড়া-বারাণসী ভায়া পটনা
9.. শিয়ালদহ-গুয়াহাটি
10 হাওড়া-ভাগলপুর
11. আসানসোল-পুরী
12. আসানসোল-সুরাত
13.. হাওড়া-সেকেন্দ্রাবাদ
14.হাওড়া-বেঙ্গালুরু
15.হাওড়া-মুম্বই
বর্তমানে প্রতি যাত্রী পিছু প্রতি কিলোমিটারে ৪৩ পয়সা ভর্তুকি দেয় রেল। রেল সূত্রের মতে, টিকিটের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বেসরকারি হাতে যাওয়ায় তাতে ভর্তুকির সুবিধে থাকবে না। ফলে টিকিটের প্রকৃত দাম ও বেসরকারি সংস্থার লাভ দুই মিলিয়ে টিকিটের যা দাম হবে তা সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। রাহুলের কথায়, ‘‘ যা কেড়ে নেওয়ার নাও! কিন্তু মনে রেখো, জনতা এর জবাব দেবে।’’
বর্তমানে ভর্তুকি দেওয়া সত্ত্বেওবাতানূকুল দ্বিতীয় ও প্রথম শ্রেণির কামরার ভাড়া একই রুটের বিমানভাড়ার সঙ্গে কার্যত পাল্লা দেয়। বহু যাত্রীই সময় বাঁচাতে প্রয়োজনে কিছু বেশি টাকা দিয়ে হলেও বিমানে যাতায়াত করাই পছন্দ করছেন। ফলে বাতানূকুল শ্রেণিতে গত দু-তিন বছর ধরেই যাত্রী হারাচ্ছে রেল। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, ভর্তুকিহীন বেসরকারি সংস্থার ট্রেনের ভাড়া যদি বিমানের ভাড়া থেকে বেশি হয়, তা হলে লোকে কেন ট্রেনে যাবেন।
বিরোধীদের দাবি, ওই মডেল অল্প দিনেই ভেঙে পড়বে। প্রাক্তন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর মতে, ‘‘যখন দেশের মানুষ আর্থিক সংকটে, তখন রেলের মতো সুলভ ও সুবিধাজনক পরিবহণ বেসরকারি হাতে গেলে ভাড়া কি আর সাধারণ মানুষের আয়ত্তে থাকবে? পরিকাঠামো নির্মাণ করবে সরকার আর বেসরকারি সংস্থাকে মুনাফা অর্জনের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে? কার স্বার্থে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল স্পষ্ট করুক সরকার।’’
দিনের পর দিন কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখিয়ে বহু কিছু বেচে দিচ্ছে মোদী সরকার। কিন্তু ভক্তদের মুখে কোনো কথা নেই। কে জানে হয়ত তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া ‘হিন্দু খতরে মে ‘ ভাবনা নিয়েই তারা বেশি আকুল। জ্বালানি তেলের নিয়মিত দাম বাড়া, রেল বেসরকারিকরণ, এলআইসি বেসরকারিকরণ নিয়ে ভাবনার অবকাশের তাদের নেই।
যে কোনও ভক্তকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে , মোদির বিকল্প কি রাহুল হতে পারে? বিষয়টা তো মোদী কিংবা রাহুলের নয়। বিষয়টা আমাদের বেঁচে থাকার। কিন্তু তা তাদের বোঝায় কার সাধ্যি। অনেকের বক্তব্য সেই অর্থে নরেন্দ্র মোদী সত্যিই ভাগ্যবান, কারণ তিনি একটা বিশাল ভক্তকুল পেয়েছেন, যারা অনেকেই তাকে ‘হিন্দুদের প্রতিনিধি’ মনে করে। নিজের যোগ্যতায় তিনি তা অর্জন করেছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই দেশের সাড়ে বারোটা বেজে গেলেও তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পরবে না। গদি মিডিয়া চুপ। ‘চামচা’ সেলেবদেরও এ বিষয়ে টুইট নেই।
আরও পড়ুন : কানপুরে অপরাধীকে পাকড়াও করতে গিয়ে এনকাউন্টারে নিহত ৮ পুলিশকর্মী