জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেশে আর্তনাদ তৈরি করছে, গোরক্ষকদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে টুইটারে সরব নুসরত

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

#কলকাতা: গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে বিশিষ্টদের চিঠি নিয়ে যখন তোলপাড় দেশ, ঠিক সেই আবহে এবার এ ইস্যুতে সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ তথা টলি তারকা নুসরত জাহানও। গণপিটুনি রুখতে আইন আনুক সরকার, এমন অনুরোধ করেই এবার টুইট করলেন বসিরহাটের সাংসদ। পাশাপাশি, মোদী সরকারকে বিঁধে নুসরত লিখেছেন, ২০১৪-২০১৯ সালের মধ্যে মুসলিম, দলিত, সংখ্যালঘুরা সবথেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। সব কিছু দেখেও ‘সরকার চুপ’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ।

শ্রীরামচন্দ্রের নাম জড়ানো কোনও ধর্মীয় ধ্বনি কী ভাবে ‘রণহুঙ্কার’-এ পরিণত হচ্ছে ও গণপিটুনির মতো ঘটনাকে ডেকে আনছে সে বিষয়ে টুইটারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন নুসরত। তাঁর মতে, এই ধরনের আচরণ দেশের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করছে, যা কখনওই উচিত নয়। টুইটে কবি ইকবালের ‘সারে জঁহা সে অচ্ছা’ কবিতার অংশবিশেষ তুলে ধরে ভারতবর্ষের জাতিগত বৈচিত্র ও ঐতিহ্যের কথা বলেছেন তিনি। টুইটার পোস্টে নুসরত লিখছেন, ‘‘গোমাংস খাওয়া ও গরু পাচারের নামে গুজব ছড়িয়ে সারা দেশেই গোরক্ষকরা নাগরিকদের উপর নানা ভাবে আক্রমণ শানাচ্ছেন। কিন্তু এই সব ঘটনা নিয়ে সরকার নীরব। কোনও ব্যবস্থাও নিচ্ছে না, আমি এতে ব্যথিত।’’ এমনকি, গত বছর ১৭ জুলাই গণপিটুনি প্রতিরোধে সরকারের ভূমিকার প্রতি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মনে করিয়ে তিনি আক্ষেপের স্বরে লিখেছেন ‘পর সরকার চুপ হ্যায়!’

ভারতের অখণ্ডতাকে ভাগ করার চেষ্টা হচ্ছে বলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ নুসরত এদিন বলেন যে ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তাঁরাই দেশের প্রকৃত ভালো চান৷ তাঁদের সমর্থন করেন বলেও এদিন জানান তৃণমূল সাংসদ৷

নুসরত জাহানের এই টুইটের পাল্টা হিসেবে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘নুসরত জাহানকে বলব, আপনি প্রথম আপনার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখুন, যাতে ওঁর এলাকায় গণপিটুনি বন্ধ হয়। সন্দেশখালিতে আমাদের ৪ কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এখনও ২ জনের দেহ পাওয়া যায়নি। মুখ্যমন্ত্রীকে বলা হোক এসব। সবচেয়ে বেশি গণপিটুনির ঘটনা বাংলাতেই ঘটছে’’।

উল্লেখ্য,বুধবারই গোটা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানা ক্ষেত্রের ব্যক্তিত্বরা উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে৷ এঁদের মধ্যে ছিলেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, গৌতম ঘোষ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়দের মত ব্যক্তিত্ব৷ ছিলেন চিত্র পরিচালক কেতন মেহতা, অঞ্জন দত্ত, অনুপম রায়, আদুর গোপালকৃষ্ণণ, রূপম ইসলাম, ঋদ্বি সেন, ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ, সংগীতশিল্পী শুভা মুদগলরাও৷ মোট ৪৯ জন ব্যক্তিত্বর সই করা এই চিঠি বুধবার গিয়ে পৌঁছয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে৷ এদিন বিদ্বজনেদের চিঠিতে জয় শ্রীরাম ধ্বনির প্রভাব থেকে গণপিটুনি,এমনই বহু বিষয়ের উল্লেখ করা হয়৷ দলিত থেকে মুসলিমদের গণপিটুনি, অসহিষ্ণুতার মতো বিষয় ছিলই৷ সেই সঙ্গে জোর দেওয়া হয় জয় শ্রীরাম স্লোগানের প্রভাবে আইন শৃঙ্খলাতেও যে একটা প্রভাব পড়ছে, পরিস্থিতি অশান্ত হচ্ছে এই বিষয়টির ওপরেও৷

তবে বিষয়টি স্বীকার করেনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ কেন্দ্রের মোদী সরকার দেশের নাগরিকদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে বলে জানানো হয়৷ রাজ্যসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী জি কিষণ রেড্ডি ২০১৪ সালে মোদী সরকারের ক্ষমতায় আসার পর কোনও সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন৷ তিনি এও জানান, দেশে ২০১৪ সালের পর থেকে কোনও কারফু জারি হয়নি৷ ২০১৩ সালে যেখানে ৮২৩টি হিংসার ঘটনা ঘটেছিল. ২০১৮ সালে তা নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ৭০৮য়ে৷

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest