চারিদিকে আর্তনাদ, রক্ত, ধ্বংসলীলার সাক্ষী থাকা কংক্রিটের স্তূপের মধ্যে থেকে চার বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করলেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) কর্মীরা। বাড়ি ভেঙে পড়ার প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর হল এই উদ্ধার।মহারাষ্ট্রের রায়গড়ের ধ্বংসস্তূপে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলা উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা দেখেন ধ্বংস স্তুপের নিচে ৪ বছরের জাভেদ। তাদের দেখেই সে হেসে ওঠে।
রায়গড়ের পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপারেশন চালিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)। সময় যত এগোচ্ছিল ততই বাঁচার আশা হারাচ্ছিলেন কংক্রিটের চাদরের নিচে চাপা পড়ে থাকা মানুষগুলো। কিন্তু ওই যে কথায় আছে, রাখে হরি তো মারে কে! আর তাই বোধহয় এ যাত্রায় সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এল বছরে চারেকের এই শিশু।
আরও পড়ুন : OMG! মঙ্গলে জলের দামে বিকোচ্ছে জমি! কিনলেন শ্রীরামপুরের সৌনক
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মহম্মদ জাভেদ বাঙ্গি নামে ওই শিশুটিকে মঙ্গলবার দুপুর ১ টা ১৫ নাগাদ কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর বড়সড় কোনও আঘাত লাগেনি।
#WATCH: A 4-year-old boy was rescued from under the debris at the site of building collapse in Mahad, Raigad. #Maharashtra pic.twitter.com/polMUhzmqN
— ANI (@ANI) August 25, 2020
সোমবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ রায়গড় জেলার কাজলপুর এলাকার ‘তারিক গার্ডেন’ নামে বহুতলটি ভেঙে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে পড়েন অনেকে। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বুধবার বিকেল পর্যন্ত মোট ১৬ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তারইমধ্যে এনডিআরএফের কমান্ড্যান্ট অলোক কুমার বলেন, ‘আমরা যখন স্নিফার ডগের সাহায্যে শিশুটির খোঁজ পাই, তখন আমাদের দ্বিগুণ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছিল। কারণ কংক্রিটের চাদর সরাতে গিয়ে শিশুটির মাথায় পাথর পড়ে যেতে পারত। আপাতত সে সুস্থ আছে, এটাই আমাদের সাফল্য।’
স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের প্রধান বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে আমাদের দেখতে পেয়ে হেসে ওঠে এবং সেই অপূর্ব দৃশ্যের বর্ণনা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।’একরত্তিকে বুকে আগলে অবশ্য মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন মা।
শিশু জাভেদ জানায় “আচমকাই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বিল্ডিংটা। সকলের চিৎকার, কান্না শুনতে পাচ্ছিলাম। পাশে দাদা-দিদিকে দেখতে পেলেও কেউ কথা বলছিল না। শুয়ে ছিল। মা আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিল। ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে কতক্ষণ আটকে ছিলাম জানি না। ভীষণ জলতেষ্টা পাচ্ছিল। আল্লাহকে বলছিলাম একটু জল দিতে। ঠিক তখনই করা যেন এসে আমাকে উদ্ধার করল”। প্রসঙ্গত, সোমবার সন্ধে নাগাদ ভেঙে পড়েছিল রায়গড়ের অভিজাত এলাকার এই পাঁচতলা আবাসন। এখানে মোট ৪৭টি পরিবারের ২০০ জন বসবাস করতেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয়েছে ১২টি মৃতদেহ।
আরও পড়ুন : জুম কলে বৈঠকের মাঝেই যৌনতায় মত্ত যুগল! এরপর কি হল…