জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। জোশীমঠ জুড়ে শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন। রবিবার রাতভর উদ্ধারকাজ চালিয়েছে আইটিবিপি। এখনও অবধি ১৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। হদিশ নেই ১৭০ জনের। ১৩টি গ্রাম একেবারে বিচ্ছিন্ন। প্রকৃতির রোষে তছনছ হয়ে গিয়েছে তপোবন বাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পিপলকোটি পাওয়ার প্রজেক্ট, ঋষিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্প। বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বিশেষজ্ঞ দল। অন্যদিকে চামোলি নদীতে জল বাড়তে থাকায় উত্তরাখণ্ডজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে বিধ্বস্ত দেবভূমিতে রেইকি চালিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, তপোবন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র (হৃষি গঙ্গা প্রকল্প) পুরোপুরি ধুয়েমুছে গিয়েছে। ঘটনাস্থলের কমপক্ষে চারটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই তালিকায় আছে তপোবনের এনটিপিসি বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
উদ্ধার চালাচ্ছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ), ইন্দো-টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। ভারতীয় সেনার দল মোতায়েন করা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যদের দেরাদুন থেকে জোশীমঠ পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টার এবং বিমান।
একটি সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াত। মুখ্যমন্ত্রী এই বক্তব্যের পর ওই শ্রমিকদের জীবিত থাকা সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছেন অনেকে।
ইন্ডিয়া টুডে-কে তিনি জানিয়েছেন, অপর সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ এখনও সে ভাবে শুরুই করা যায়নি। আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গ কাদায় ভর্তি হয়ে গিয়েছে। যে কারণে আইটিবিপি-র জওয়ানরা সুড়ঙ্গের বেশি ভিতরে ঢুকতেই পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মাত্র ১৫০-২০০ মিটার ভিতর অবধি যেতে পেরেছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা। সোমবার সকাল থেকে ওই সুড়ঙ্গে আইটিবিপি, সেনা ও রাজ্য সরকারের উদ্ধারকারী দল ফের কাজ শুরু করবেন।
আরও পড়ুন: খর্ব হচ্ছে নাগরিকদের অধিকার! গণতন্ত্র সূচকে আরও দু’ধাপ নামল ভারত
২০১৩ সালে কেদারনাথের স্মৃতি উসকে ফের গত রবিবার দেবভূমিতে আছড়ে পড়ে বিপর্যয়। এদিন রাত ১১টা নাগাদ জোশীমঠ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে তপোবন ও রাইনি গ্রামের কাছে শুরু হয় মেঘভাঙা বৃষ্টি। ভেঙে পড়ে নন্দাদেবী হিমবাহের একটি অংশও। এরপরই উপচে পড়ে ঋষিগঙ্গা। নদীর বান দু’কূল ভাসিয়ে নামতে শুরু করে পাহাড়ি পথ ধরে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায় গ্রামের পর গ্রাম।
Uttarakhand: Rescue operation continues on the second day at Joshimath in Chamoli where a flash flood, triggered due to glacier burst, occurred y'day.
12 people were rescued from one tunnel y'day. The second tunnel is being cleared with the help of JCB machines to rescue people pic.twitter.com/WEe0qA6rXi
— ANI (@ANI) February 8, 2021
আরও পড়ুন: নেপথ্যে চাপ? কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে বিতর্কের মাঝেই পদত্যাগ টুইটার ইন্ডিয়ার কর্মকর্তার