বাংলা ও গোবলয়ের রাজনীতির মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। জয় শ্রীরাম স্লোগান কিংবা ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিয়ে বাংলার মানুষকে পদ্মমুখী করা সহজ নয়। একথা বুঝছেন সংঘ প্রধান। বাংলার অবাঙালিদের মধ্যে মধ্যে গেরুয়া রাজনীতির পুরোনো ছক কাজ করলেও, বাঙালিদের মধ্যে তার বিষয়ে গুরুত্ব নেই।
এখানকার বেশিরভাগ হিন্দু হিংসা চান না। আর সেটাই বিজেপির রণকৌশলে বাধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ। ফলে রণকৌশল বদলানো ছাড়া উপায় নেই। এমন অবস্থায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত জানালেন হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদের মাধ্যমে কিছু মানুষ স্বার্থ লাভের রাস্তা খোঁজে।
আরও পড়ুন : ‘হাই কম্যান্ড চাইছে, বামেদের সঙ্গে জোট হবেই’, বিক্ষুব্ধদের সাফ জনালানে অধীর
এদিন ভাগবত দাবি করেছেন, ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন নয়। বরং সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সব থেকে সুখে আছে বলে দাবি করেছেন তিনি।আরএসএস প্রধান এদিন বলেন, ”মহারানা প্রতাপের সৈন্য দলে অনেক মুসলিম সেনা ছিল। তারা মোঘলদের বিরুদ্ধে লড়েছে। এটাই আমাদের ভারতবর্ষ। আমাদের দেশের নাম উচ্চারিত হলে সংহতির কথাই আসে সবার আগে। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভেদাভেদ করে কিছু মানুষ। তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য।”
আসলে এমনিতে মোদী জমানায় বারবার বিজেপি নেতারা ভারতীয় মুসলিমদের নিশানা করে রাজনীতিতে ফায়দা পেতে চেষ্টা করেছে। এতদিন তারা এই কৌশলেই সফল হয়েছে। এই নেতারা অনেকেই আজও মনে করেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে সংঘ ও মোদীজির গুড বুকে থাকা যায়।
অনেকে বলেন এই তাদের এই ধারণা আসলে মোদীজি, যোগিজি এবং মোহন ভাগবতরা বদ্ধমূল করেছেন। যেসব বিজেপি এবং গেরুয়া নেতা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তারা শাসকদলের প্রধানের ভাষণ শুনে অনুপ্রাণিত হয়ে পোশাক দেখে ব্যাবধান ও বিদ্বেষ শিখেছে। এমন অভিযোগ নয়া নয়। কিন্তু এবার নির্বাচন বিহার এবং বাংলায়। দু’জায়গাতেই মুসলিম সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাদের চোখ বন্ধ করে উপেক্ষা করা যাবে না।
ভাগবত বলেন, ”আমাদের দেশের সংবিধানে কোথাও লেখা নেই যে এখানে মুসলিমদের কোনও জায়গা নেই। কোথাও বলা নেই যে এদেশে থাকতে হলে হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ বলে মেনে নিতে হবে। যখনই দেশের সংস্কৃতির উপর আক্রমণ হয়েছে এদেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তা সে হিন্দু হোক বা মুসলমান। এটাই আমাদের দেশ। আপনারা পাকিস্তানে দেখুন। সেখনে সংখ্যালঘু হিন্দুদের একঘরে করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ভারতে মুসলিমরা সুখে রয়েছে।” এদেশে প্রতিটি মানুষের নিজের ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে। তার জন্য কাউকে জবাবদিহি করার কোনও প্রয়োজন নেই।
ভাগবতের এই কথা শুনে অনেকেই কপালে ছক তুলে প্রশ্ন করেছেন ,’আরে ভগবতের হলটা কি’ ? দলটাকে এবার তিনি কংগ্রেস বানাতে চাইছেন ? এমনিতেই অনেকেই বলেন গরু বাদ দিলে দলটা আসলে কংগ্রেসই!!!
আরও পড়ুন : সড়ক ২ এর জের! ‘লক্ষ্মী বম্ব’ ট্রেলারে ‘লাইক’-‘ডিজলাইক’ সংখ্যা লুকানো হল ইউটিউবে