Site icon The News Nest

‘বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না, আমি এখনও কংগ্রেস সদস্য’, কুৎসা রটানোর অভিযোগ পাইলটের

তাঁকে উদ্ধৃত করে ঘনিষ্ঠ নেতা আগেই জানিয়েছিলেন, জীবনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কোনও কাজ করেননি। এবার রাজস্থানের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে তিনি বলেন, ‘আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি না। যাঁরা বলছেন, তাঁরা আমায় গান্ধীদের চোখে ছোটো দেখাতে চাইছেন।’ পাশাপাশি সকাল ১১টার সময় যে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন, সেটিও বাতিল করে দিয়েছেন পাইলট।

অন্যদিকে, ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সচিন বলেছেন, ‘‘রাহুল গান্ধী সরে যাওয়ার পর থেকেই দলে ও রাজস্থান সরকারে আমার আত্মসম্মান বজায় রেখে চলাটা মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। তবে ভোটে অনেক পরিশ্রম করেই কংগ্রসকে ক্ষমতায় এনেছিলাম। তাই বিজেপিতে যাব কেন?’’ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সচিন বলেছেন, ‘‘আমার কারও উপর রাগ নেই। আমি কোনও বিশেষ ক্ষমতা বা সুবিধা চাইছি না। আমি শুধু একটা জিনিসই চেয়েছিলাম। সেটা হল, বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে গিয়ে কংগ্রেস যে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, গেহলট সরকার যেন সেগুলি রক্ষা করে। সেই সব প্রতিশ্রুতিগুলি রক্ষার লক্ষ্যে যেন আন্তরিক ভাবে সচেষ্ট হয়।’’

আরও পড়ুন: সারা দেশে করোনায় প্রাণ নিয়েছে প্রায় ৯৩ জন চিকিৎসকের, জানাল আইএমএ

সচিনের কথায়, ‘‘উনি (গেহলট) আমাকে আত্মসম্মান নিয়ে কাজ করতে দেননি। রাজস্থানের উন্নয়নে কোনও কাজই করতে দেননি। আমার নির্দেশ অগ্রাহ্য করতে বলা হত আমলাদের। কোনও সরকারি ফাইলই আমার কাছে পাঠানো হত না। মাসের পর মাস কোনও বৈঠক হয়নি রাজ্য মন্ত্রিসভার। কংগ্রেস পরিষদীয় দলেরও। মানুষের উন্নয়নে যদি কাজই না করতে পারি, তা হলে শুধুই পদ আঁকড়‌ে থেকে কী লাভ?’’ তবে এই বিষয়গুলি যে তিনি মুখ বুঁজে সহ্য করেছিলেন, তা নয়। সচিন জানিয়েছেন, রাজস্থানে যিনি এইআইসিসি-র তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাঁকে বেশ কয়েক বার তাঁর ক্ষোভ, অসন্তোষের কথা তিনি জানিয়েছিলেন। আমি দলের প্রবীণ নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। একান্তে আলোচনা করেছি মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের সঙ্গেও। কিন্তু মাসের পর মাস, মন্ত্রী, বিধায়কদের কোনও বৈঠকই হত না। তাই আমার ক্ষোভ, অসন্তোষের বিষয়গুলি নিয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা, বিতর্কের অবকাশই থাকতো না।

তিনিও বিজেপির ‘পুতুল’ বনে গিয়েছেন কি না এই প্রশ্নের জবাবে সচিন বলেছেন, ‘‘এই অভিযোগের সত্যতা নেই বিন্দুমাত্র। কংগ্রেসকে রাজস্থানে জেতাতে আমি কম পরিশ্রম করিনি। তা হলে আমার দলের বিরুদ্ধে আমি কাজ করতে যাব কেন? যাঁরা রটাচ্ছেন, আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি, তাঁরা আমার ভাবমূর্তি কলঙ্কিত করতেই এই সব বলে বেড়াচ্ছেন।  নানা রকমের উস্কানি থাকলেও আমি দলের বিরুদ্ধে একটাও কথা বলিনি।’’

গত কয়েকদিনের টানা নাটকের পর মঙ্গলবার পাইলটকে উপ-মুখ্যমন্ত্রিত্ব এবং প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। সুরজেওয়ালা দাবি করেন, গত ৭২ ঘণ্টায় কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতা পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে উদ্যোগী হন। কিন্তু রাজস্থান কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি নাকি কোনও উত্তর দেননি। কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান নেতা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে জানান, তিনটি এমন শর্ত রেখেছেন পাইলট, যা পূরণ করা অসম্ভব।

অনেকেই মনে করছিলেন, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পথ ধরে তিনিও বিজেপিতে যোগ দেবেন। কিন্তু সে সম্ভাবনা নিজেই খারিজ করলেন তরুণ গুর্জর নেতা। যার ফলে আপাতত তাঁর সামনে খোলা রইল দুটি রাস্তা। এক কংগ্রেসে ফিরে এসে গান্ধী পরিবারের আনুগত্য স্বীকার করা। দুই, নিজের আলাদা দল তৈরি। তরুণ নেতা কোন পথে যান সেটাই এখন দেখার।

আরও পড়ুন: রাজ্যে নিষিদ্ধ, মোদীর গুজরাতেই জন্মদিনের পার্টিতে মদের উল্লাসে বিজেপি নেতারা

 

Exit mobile version