শারীরিক স্পর্শ ছাড়া কোনও নাবালিকার জামার ওপর দিয়ে বুকে হাত দেওয়া ঘটনাকে পকসো আইনের আওতায় যৌন নির্যাতন হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। একটি মামলায় এমনই রায় দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। এই নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় বিতর্ক। এবার সেই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। দুই সপ্তাহ বাদে এই মামলাটির শুনানি করবে আদালত।
বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ জানিয়েছিল, ত্বক স্পর্শ না করে নাবালিকার বুকে চাপ দেওয়াকে পকসো আইনের আওতায় আনা যাবে না। যার অর্থ ত্বকে-ত্বকে সংস্পর্শ না হলে সেই ঘটনাকে পকসো আইন অর্থাৎ দ্য প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস আইনে ফেলা যাবে না।১৯ জানুয়ারি এই বিতর্কিত পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছিলেন বিচারপতি পুষ্প গনেদিওয়ালা। পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল যেহেতু শারীরিক সংস্পর্শ হয়নি তাই এই অপরাধ পকসো আইনের অন্তর্ভুক্ত নয়। নিম্ন আদালতের রায় সংশোধন করে সাজা কমানোর নির্দেশ দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: TRPহেরাফেরি: অর্ণব আমাকে $ ১২,০০০ ও ৪০ লক্ষ টাকা দিয়েছে, জানালেন পার্থ দাশগুপ্ত
এদিন সরকারের শীর্ষ আইন অফিসার অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন যে এই নির্দেশ অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও একটি বিপজ্জনক উদাহরণ তৈরি হয়ে যেতে পারে এর জেরে। এই জন্য আদালতকে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন তিনি। অন্যদিকে এই অর্ডারের বিরুদ্ধে আপিলও করা হচ্ছে বলে জানান এজি। আদালত আপাতত হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে রদ করে এজিকে পিটিশন ফাইল করার অনুমতি দেন।
২ বছরের এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে ৩৯ বছরের এক ব্যক্তিকে পকসো আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারায় আওতায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সঙ্গে ৫০০ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছিল। অনাদায়ে আর এক মাসের জেলের সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত।
তবে বম্বে হাইকোর্টে জানিয়েছে, যৌন অভিপ্রায়ে কোনও শারীরিক স্পর্শ না হওয়ায় সেই ঘটনাকে পকসো আইনের আওতায় ধরা যাবে না। ওই ব্যক্তি নাবালিকার বুকে চাপ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, নাবালিকার টপ খোলা হয়েছিল কিনা বা টপের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে নাবালিকার বুকে স্পর্শ করেছিল কিনা, সেই সংক্রান্ত নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া ওই নাবালিকার বুকে চাপ দেওয়ার ঘটনাকে যৌন নির্যাতনের আওতায় বিবেচনা করা যাবে না। রায়ে আরও জানানো হয়েছে, যৌন নিযার্তনে যে ‘শারীরিক স্পর্শ’-এর কথা বলা হয়েছে, তা অবশ্যই সরাসরি হতে হবে।
বম্বে হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণের নিন্দায় সরব হয়েছিলেন সচেতন মহলের একাংশ। ‘এই দেশ হেনস্থাকারীদের জন্যই’ বলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল বলিউড থেকে টলিউড।
আরও পড়ুন: মোদীর পায়ের কাছে বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, ক্ষুদিরামের ছবি! বিতর্কে বিজেপি