অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের অভিযোগের ভিত্তিতে সাহিত্যিক অরুন্ধতী রায়ের একটি বই ইংরেজির স্নাতকোত্তর পাঠ্যসূচি থেকে সরিয়ে নিল তামিলনাড়ুর একটি বিশ্ববিদ্যালয়। লেখিকার ‘ওয়াকিং উইথ দ্য কমরেড’ নামক ইংরেজি স্নাতকোত্তর সিলেবাস থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এবিভিপির তরফে বলা হয়েছে এই বইটি দেশবিরোধী এবং মাওবাদীদের গৌরবান্বিত করেছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে অরুন্ধতি রায় বলেন, “আমার কাজ বই লেখা, পাঠ্যসূচিতে সেটির অন্তর্ভুক্তি চেয়ে লড়াই করা নয়। সাহিত্যের প্রতি যে সংকীর্ণ মনোভাব বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় দেখা যাচ্ছে, এটা শুধু এদের সমালোচকদের জন্য নয়, সমর্থকদের জন্যও ক্ষতিকর।”
আরও পড়ুন : LOC-তে পাকিস্তানকে মোক্ষম জবাব ভারতের, নিহত ৮ পাক সেনা
আলোচনার পরে বইটির সংবেদনশীল বিষয়বস্তুর কারণে পাঠ্যসূচি থেকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্তে পৌঁছয় কমিটি, জানিয়েছেন উপাচার্য কে পিচুমানি। তাঁর কথায়, ‘আমরা ঝামেলা এড়াতে চেয়েছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পড়ুয়াদের জন্য কী ভাবে পাঠ্যসূচি সাজাব, তা আমাদের খেয়াল রাখতে হয়। সিন্ডিকেট সদস্যদের থেকেও পর্যন্ত আমরা এই নিয়ে একাধিক ফোন ও অভিযোগপত্র পেয়েছি।’
২০১১ সালে প্রকাশিত বইটির মূল বিষয় মাওবাদী বনাম ভারত সরকারের সংঘর্ষ, যা এবিভিপি-র নজরে রাষ্ট্র বিরোধী। এই কারণে অরুন্ধতীর লেখা বইটির পরিবর্তে পাঠ্যসূচিতে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত প্রয়াত এম কৃষ্ণানের লেখা ‘মাই নেটিভ ল্যান্ড: এসেস অন নেচার’ বইটি অন্তর্ভুক্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পিটিআইকে এবিভিপি জানায়, “এই বইটি গত তিন বছর ধরে সিলেবাসের অংশ এটা দুঃখজনক। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উপর নকশাল ও মাওবাদী মতাদর্শ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
অন্যদিকে, DMK এবং CPI(M) এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। ডিএমকে যুব শাখার সম্পাদক ও সাংসদ কানিমোঝি ট্যুইট করে বলেন, রাজনীতি করে ঠিক করা হচ্ছে ছাত্ররা কী পড়বে, এটাই সমাজের সবথেকে বড় ব্যর্থতা। সিপিআইএমের লোকসভার সদস্য এস ভি ভেঙ্কাটেশন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ট্যুইট করেন।
প্রায় দশ দিন আগে বইটির বিষয়বস্তু আরএসএস-এর নজরে আনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়া। আরএসএস সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের তিরুনেলভেলি শাখার সদস্য গোপী গঙ্গাধরণের মতে, ‘বইটিতে নকশালপন্থায় জোর দেওয়া হয়েছে। বইটি ভারত বিদ্বেষী, মানবতা বিদ্বেষী। আমাদের দাবি যুক্তিপূর্ণ। এই সাফল্যের ভিত্তিতে এবার আমরা তামিল নাডুর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিও খতিয়ে দেখব।’
বৃহস্পতিবার তামিলনাডুর প্রগতিশীল লেখক ও শিল্পী সংগঠন সাধারণ সম্পাদক Aadhavan Dheetchanya এই ঘটনার প্রতিবাদে একটি ভার্চুয়াল প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছেন।
আরও পড়ুন : বাজি ফাটানো বন্ধ করতে গিয়ে বেলুড়ে আক্রান্ত পুলিশ, গুরুতর আহত ৭ পুলিস কর্মী