ক’দিন আগেই হজরত মুহাম্মদকে নিয়ে তাঁর আঁকা কার্টুন ক্লাসে ছাত্রদের দেখিয়েছিলেন তিনি সন্ত্রাসবাদীর হাতে নিহত হলেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ একে ইসলামি জঙ্গিদের কাজ বলে জানিয়েছেন। ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি । হত্যাকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। কিন্তু তার পরিচয় জানা যায়নি।
এই শিক্ষক প্যারিসের ৩০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমের এক শহরতলিতে একটি মিডল স্কুলে কাজ করতেন। হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় ফরাসি পুলিশ। সেখানে হামলাকারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু সে বাদা দেয়। তখনই পুলিশ গুলি চালায়। এই ঘটনায় একজন নাবালক-সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : ধর্মীয় উত্তেজনার ছড়ানোর অভিযোগ, কঙ্গনা ও রঙ্গোলির বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ আদালতের
এই প্রথম নয়। এমন ঘটনা ফ্রান্স আগেও ঘটেছে। শার্লে এবদোর ঘটনা অনেকেরই মনে রয়েছে। সারা বিশ্ব সন্ত্রাসবাদীর নিন্দায় মুখর হয়েছিল। এবার তেমনটাই হয়েছে। হয় উচিতও। কিন্তু প্রশ্ন হল হজরত মুহাম্মদ (PBUH)এর এমন কার্টুন বানানোর উদ্দেশ্যই বা কি। কেনই বা মুসলিমদের আবেগ ও মূল্যবোধে ধাক্কা দিতে বারবার একই আচরণ করা হয়। কেউ হয় যুক্তি দিয়ে বলবেন, যীশু কিংবা মোজেসের ছবিও তো দেখানো হয়। বহু ঠাকুর-দেবতার ছবি ছাপা হয়। তাহলে মুহাম্মদের (PBUH)বেলায় সমস্যা কোথায় ?
হজরত মুহাম্মদের (PBUH) কোথাও কোনও ছবি কিংবা মূর্তি নেই। তিনি সচেতনভাবে এর থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। অজ্ঞতার যুগ থেকে আরবদের আলোয় নিয়ে আসার কালে তিনি তাদের বুঝিয়ে দেন নিরাকার সর্বশক্তিমান, পরমকরুনাময় সকল শক্তির মালিক ছাড়া কারও উপাসনা করা যাবে না। সেদিন আরবে বহু শিল্পী ছিলেন। চাইলে তিনি নিজের ছবি আঁকাতে পারতেন। কিন্তু তিনি এসেছিলেন ব্যক্তি ও মূর্তিপূজার অন্ধত্ব থেকে বিশ্বাসীদের মুক্তি দিতে। ইসলামে ব্যক্তি পুজোর কোনও জায়গা নেই। যদি তাঁর কোনও ছবি থাকত, তাহলে আজ তা নিয়েই মুসলিমরা মেতে থাকত। সেটা তিনি চাননি।
ফ্রান্সে মুহাম্মদের (PBUH)কার্টুন ছেপে এই মস্করা করার প্রবণতা যেন বন্ধ হবার নামই করছে না। কারও নগ্ন ছবি তাঁর অনুমতি ছাড়া সোশ্যাল সাইটে ছড়িয়ে দেওয়া বিনোদন হতে পারে না। সেটাকে স্বাধীনতাও বলে না। সেটা স্বেচ্ছাচার। তা উদ্দেশপ্রণোদিত। কোনও দেশ চায় না তার দেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা হোক অন্য দেশে। জাতীয়ও পতাকা মানে কি কেবল রং আর প্রতীক? তা কিন্তু নয়। বাইরে থেকে দেখলে তেমনই মনে হয় । কিন্তু আসলে জাতীয় পতাকা একটা দেশের আত্মাভিমানের প্রতীক। তাই অন্য দেশ জাতীয় পতাকার অপমান করলে প্রতিবাদ হয়। এটা সব দেশ করে। দেশের অপমান সহ্য করাকে কেউ সহনশীলতা বলে বাহবা দেন না। অথচ তারাই আশা করেন হজরত মুহাম্মদকে(PBUH) নিয়ে মস্করা মুসলিমরা খুব মুশি মনে মেনে নেবেন। এটা দ্বিচারিতা। হজরত মুহাম্মদকে নিয়ে এই আপত্তিকর প্রবণতাও বন্ধ হয় উচিত। কার কতবার এমন কার্টুন এঁকে বিশেষ ধর্মের লোকেদের রক্তাক্ত করার অসাধু চেষ্টা হবে?সেটা ভেবে দেখতে হবে ইমানুয়ালদের।
আরও পড়ুন : মোদীর উপর রাগ নিয়েই বিহারের ভোটে প্রার্থী ‘মোদী’ নিজেই !