The News Nest: লকডাউনের মধ্যে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও দোকান খুলে রেখেছিলেন। সেই ‘অপরাধ’-এ এক প্রৌঢ় এবং তাঁর ছেলেকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল তামিলনাড়ু পুলিশের বিরুদ্ধে। মৃতেরা হলেন পি জয়রাজ (৫৮) এবং ইম্যানুয়েল বেনিকস (৩১)। হেফাজতে থাকাকালীন নৃশংস শারীরিক অত্যাচার চালানোর পাশাপাশি তাঁদের উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয় বলেও অভিযোগ উঠছে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে কার্যত আগুন জ্বলছে গোটা রাজ্যে। পুলিশি নৃশংসতার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছেন সাধারণ মানুষ। পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন : ভারত লাদাখে বসাচ্ছে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র, নজরে চিনা যুদ্ধ বিমান
গত শুক্রবার পুলিশ তাঁদের ধরে নিয়ে যায়। চারদিন বাদে হাসপাতালে বাবা, ছেলের মৃত্যু হয়। তাঁদের আত্মীয়রা অভিযোগ করেছেন, সান্তনকুলম থানায় পুলিশ বাবা, ছেলেকে প্রচণ্ড মারধর করেছিল। তাই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। আত্মীয়রা দু’জনের দেহে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।
ঘটনার জেরে তুতিকোরিনে বহু ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দুই সাব ইনসপেক্টর-সহ চার পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলেও জানা যায়। মুখ্যমন্ত্রী ই কে পালানিস্বামী (K Palaniswami) এই দু’জনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে মৃতদের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মৃতদের পরিবারের যে কোনও একজনকে চাকরি দেবেন বলেও জানান। তবে পুলিশের অত্যাচারেই ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলে প্রাণ হারিয়েছেন কিনা সেই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পি জয়রাজ পেশায় কাঠের ব্যবসায়ী। তাঁর ছেলে ইম্যানুয়েল একটি মোবাইলের দোকান চালাতেন তুতিকোরিনে। ঘটনার সূত্রপাত গত ১৯ জুন। ওই দিন সন্ধ্যায় বাবা-ছেলে ওই দোকানে ছিলেন। রাত সওয়া ৮টা নাগাদ দোকানের শাটার নামাতে যান জয়রাজ। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পর কেন দোকান বন্ধ করা হচ্ছে, তা নিয়ে এলাকায় টহল দেওয়া পুলিশকর্মীদের সঙ্গে তাঁর বচসা বাধে। ছেলে ইম্যানুয়েলও সেই বচসায় জড়িয়ে যান। কিছু ক্ষণ পর বিষয়টি মিটে যায়। দু’জনে বাড়ি ফিরে যান।
ইম্যানুয়েলের বন্ধুদের দাবি, তার পর দিন অর্থাৎ ২১ জুন সকাল ৭টা নাগাদ ফের আইনজীবী নিয়ে থানায় হাজির হন তাঁরা। তখন তাঁরা জানতে পারেন, জয়রাজ এবং ইম্যানুয়েলের বিরুদ্ধে ১৮৮ (সরকারি নির্দেশ অমান্য), ৩৫৩ (সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া), ২৬৯ (দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে জীবননাশক সংক্রমণ ছড়ানো) এবং ৫০৬ (২) (অপরাধমূলক হুমকি) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
রক্তাক্ত অবস্থায় জয়রাজ এবং ইম্যানুয়েলকে তাঁরা দেখতে পান তাঁরা তানায়। ইম্যানুয়েলের আইনজীবী এস মণিমারন জানিয়েছেন, হাজতের যেখানে জয়রাজ এবং ইম্যানুয়েলকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল, সেই জায়গাটা রক্তে ভেজা ছিল।
আরও পড়ুন : লাদাখে ফের ভারতীয় এলাকা দখল করল চিন, ‘ফল ভুগতে হবে’ হুঁশিয়ারি ভারতের