ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ লক্ষ পার হয়েছে শনিবার। এই আবহে লালকেল্লায় ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দাবি, দেশে একটি নয়, তিন তিনটি করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে! তাঁর মন্তব্য, ‘‘গবেষকরা জোর কদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের সবুজ সঙ্কেত পেলেই শুরু হবে করোনা টিকার গণ উৎপাদন। সরকার প্রত্যেক দেশবাসীর কাছে ন্যূনতম সময়ে করোনার টিকা পৌঁছে দেওয়ার রূপরেখাও তৈরি করে ফেলেছে।’’
করোনাকালে এম ৯৫ মাস্ক উৎপাদন, পিপিই কিট এবং ভেন্টিলেটর তৈরিতে ভারত যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ভারতে আগে মাস্ক, পিপিই, ভেন্টিলেটর তৈরি হত না। অতিমারীতে ১৩০ কোটির ভারত শুধু দেশের জন্যই মাস্ক, পিপিই তৈরি করেনি বরং বিশ্বকেও চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করেছে। তিনি বলেন, এখন শুধু ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র পথ অনুসরণ করলে চলবে না ভারতের নতুন মন্ত্র হবে ‘মেক ফর ওয়ার্ল্ড’।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে আচমকা ঘোষণা, ৪৮ জন পাইলটকে ছাঁটাই এয়ার ইন্ডিয়ার
দিল্লির লাল কেল্লা থেকে এই নিয়ে টানা সাতবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ দিলেন নরেন্দ্র মোদী। করোনা যোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানিয়েই তাঁর এদিনের ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা অদ্ভুত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। করোনা অতিমারীর জন্য এবারে লালকেল্লায় অন্যান্যবারের মতো ছোট বাচ্চাদের ভিড় নেই। গোটা জাতির পক্ষ থেকে আজ আমি করোনা যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। সব স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিত্সক ও নার্সরা যে ভাবে ক্লান্তিহীন ভাবে কাজ করে চলেছেন, তার জন্য তাঁদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও সম্মান।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অনেকে তাঁদের নিকটজনকে হারিয়েছেন। আমি জানি ১৩০ কোটি ভারতীয়ের মিলিত প্রচেষ্টায় এই সংকটের কাল আমরা কাটিয়ে উঠবোই।’
মোদীর বক্তৃতায় আজ এসেছে জাতীয় ডিজিটাল স্বাস্থ্য মিশনের প্রসঙ্গও। এই মিশন চালুর ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘‘দেশের প্রত্যেক নাগরিক একটি স্বাস্থ্য পরিচয়পত্র (হেল্থ আইডি কার্ড) পাবেন। প্রত্যেক বার ডাক্তারের কাছে বা ওযুধের দোকানে গেলেই ওই কার্ডের স্বাস্থ্য প্রোফাইল দেখা হবে। কোন ডাক্তার দেখেছেন, কী ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন, রোগ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জানা যাবে।’’
উল্লেখ্য, কোভ্যাকসিন তৈরির জন্যে হায়দরাবাদের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা ভারত বায়োটেককে আগেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। বেশ কিছুদিন আগেই ভারতের এই ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হয়েছিল। দিল্লি ও পটনার এইমস, রোহতকের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস, নাগপুরের গিলুরকার হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট-সহ দেশের র ১২টি কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা হয়েছিল। মোট ৩৭৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছিল কোভ্যাকসিন। তাদের দেহে কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়নি বলেই খবর।