Site icon The News Nest

উন্নাওয়ের ধর্ষিতা লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে, জেলবন্দি বিজেপি বিধায়ক-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা

Unnao Rape Victim Injured In Car Accident

#উন্নাও: উন্নাওয়ের ধর্ষিতা সংকটজনক। লখনউয়ের একটি হাসপাতালের ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তিনি। নির্যাতিতাকে খুন করতেই দুর্ঘটনার ‘ষড়যন্ত্র’ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর মা। এ দিকে যাঁকে কেন্দ্র করে উন্নাও কাণ্ড, সেই বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রবিবার, রায়বরেলীতে ‘রহস্যজনক’ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন ওই নির্যাতিতা। বেশ কিছুক্ষণ কাটলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। লখনউয়ের কিংস জর্জ’স মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর ফুসফুসে আঘাত লেগেছে। তাঁর দেহের ডান দিকে সবচেয়ে বেশি চোট লেগেছে। কলার বোন, হাত ও উরুর হাড় ভেঙে গিয়েছে। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। ওই হাসপাতালের ভর্তি তাঁর আইনজীবীও।

রবিবারের ওই দুর্ঘটনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। প্রথমত ওই নির্যাতিতার জন্য যে নিরাপত্তারক্ষী দেওয়া হয়েছিল তিনি সে সময় কেন তিনি ছিলেন না? যে ট্রাকের সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটে তার নম্বর প্লেটের উপর কেন কালো রঙ লাগানো ছিল? এই প্রসঙ্গেই ধর্ষিতার মা বলেন, ‘‘এটা সাধারণ একটা দুর্ঘটনা নয়, আমাদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিরাট ষড়যন্ত্র। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত শাহি সিংহ ও আরও এক যুবক আমাদের হুমকি দিয়ে চলেছে। তারা আমাদের দেখে নেবে বলেছে। জেলে থাকলেও সব কলকাঠি নাড়ছেন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার।’’  প্রথমে নিছক দুর্ঘটনা বললেও, এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিবিআইও।

এ দিকে ওই ঘাতক ট্রাকের চালককে গ্রেফতার করার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের দাবি, চালক জানিয়েছে, ট্রাক কেনার জন্য নেওয়া ঋণ শোধ করতে না পারাতেই তার নম্বর প্লেটে কালো রঙ লাগানো হয়েছিল। যাতে সেটা ধরা না পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতার জন্য একজন বন্দুকধারী–সহ ৯ রক্ষী নিয়োগ করা হয়েছিল। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই নিগৃহীতার বন্দুকধারী রক্ষী সুরেশ বলেন, ‘‘গাড়িতে জায়গা ছিল না। তাই আমাকে বলা হয়, গাড়িতে ৫ জন রয়েছে, চিন্তার কোনো কারণ নেই।’’

এই ঘটনা নিয়ে ঝড় ওঠে সংসদেও। নির্যাতিতাকে খুনের ‘চক্রান্ত’ করা হয়েছিল বলে রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে অভিযোগ তোলেন সপা সাংসদ রামগোপাল যাদব। সপা-র পাশে দাঁড়ায় বিএসপি, কংগ্রেস ও আপ-ও। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু।বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশনও। এ নিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সঙ্গে দেখাও করবে মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে চাকরি দেওয়ার নাম করে নিজের বাড়িতে ১৫ বছরে ওই নাবালিকাকে কুলদীপ সেঙ্গার ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।  নির্যাতিতার পরিবার জানায়, পুলিসে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েও ফল হয়নি। উলটে নির্যাতিতার বাবাকে মিথ্যে মামলায় জেলে পুরে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এরপর, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে নির্যাতিতা ও তাঁর মা গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তারপরই এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।

কাকতালীয়ভাবে, সে সময়ই জেলেতে নির্যাতিতার বাবার সন্দেহজনকভাবে মৃত্যু হয়। বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের ভাইয়ের বিরুদ্ধে জেলের মধ্যেই নির্যাতিতার বাবাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে।

 

Exit mobile version